×

বিনোদন

চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি

Icon

মেলা প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১২:৫৮ পিএম

চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি
বাংলাদেশের নাট্যশিল্পীদের কাছে অনুপ্রেরণার নাম রোকেয়া রফিক বেবী। একাধারে অভিনয়শিল্পী, নাট্যনির্দেশক ও সংগঠক হিসেবে বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। গোলাপজানসহ বেশকিছু নাটকে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন। বর্তমানে দেশের অন্যতম নাট্য সংগঠন থিয়েটার আর্ট ইউনিটের দলপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বেবী। ‘আমিনা সুন্দরী’, ‘ছায়াচক্র’, ‘মর্ষকাম’ মঞ্চে এসেছে তার নির্দেশনায়। রোকেয়া রফিক বেবী নির্দেশিত নাটক ‘মর্ষকাম’ আগামী মার্চে ভারতে অনুষ্ঠিত থিয়েটার অলিম্পিকে অংশ নিতে যাচ্ছে। সম্প্রতি ভোরের কাগজের মুখোমুখি হয়েছিলেন দেশের বরেণ্য এই নাট্য ব্যক্তিত্ব। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাহনাজ জাহান
থিয়েটার অলিম্পিকে অংশ নিতে যাচ্ছে আপনার নির্দেশিত নাটক মর্ষকাম। এ বিষয়ে জানতে চাই? থিয়েটার অলিম্পিকের মতো আন্তর্জাতিক আসরে অংশগ্রহণের সুযোগ পাওয়া নিঃসন্দেহে আনন্দের। একইসঙ্গে উত্তেজনারও বিষয়। থিয়েটার অলিম্পিকের মতো এত বড় একটা পরিসরে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পারছিÑ এটা ভেবে ভীষণ ভালো লাগছে। ভালোলাগার পাশাপাশি শঙ্কাও কাজ করছে এ জন্য যে মর্ষকাম একটি সংলাপধর্মী নাটক। ভিন্ন ভাষার মানুষরা এই নাটকটিকে কীভাবে গ্রহণ করবেন সেটা ভাবনার বিষয়। কলকাতার মানুষের কাছে আমাদের ভাষা যত সহজ, দিল্লির কাছে ততটাই কঠিন। ফলে দিল্লির দর্শকের কাছে নাটকটির মঞ্চায়ন অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। বলা যায়, একটা বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। ভারতের কোন মঞ্চে নাটকটির মঞ্চায়ন হবে? থিয়েটার আর্ট ইউনিট ৩১ জনের একটি দল নিয়ে আগামী ২ মার্চ ভারতে যাবে। নাটকটি কলকাতার রবীন্দ্রসদন এবং দিল্লির কামানীতে মঞ্চায়িত হবে। ভারতের ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামার আমন্ত্রণে থিয়েটার আর্ট ইউনিট তৃতীয়বারের মতো নাটক নিয়ে যাচ্ছে। এর আগেও আমরা দিল্লিতে নাটক মঞ্চায়ন করেছি। সেখানকার দর্শক খুবই পছন্দ করেছেন আমাদের নাটক। এবার অন্য প্রসঙ্গে জানতে চাই। রেপার্টরি থিয়েটার নিয়ে আপনার মূল্যায়ন? রেপার্টরি নাটকে শিল্পীদের কাজ করার স্বাধীনতাটা বেশি। তবে সংকটের জায়গাও রয়েছে। গ্রæপ থিয়েটারে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতার অনেকটাই কমে যায় সবার অংশগ্রহণে। কিন্তু রেপার্টরিতে অল্প কয়েকজন মানুষ কাজ করেন। আর বাংলাদেশের থিয়েটার চর্চা তো এখনো পারিশ্রমিকনির্ভর হতে পারেনি। এর পেছনে অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি বড় কারণ হচ্ছে অভিনেতারা কেবল থিয়েটারনির্ভর হতে পারছে না। জীবন ও জীবিকার তাগিদে অন্যত্র ছুটতে হচ্ছে। ফলে কেউ ফুলটাইম থিয়েটারে মনোনিবেশ করার সময় সুযোগ করে উঠতে পারছে না। যার ফলে পেশাদার থিয়েটার তৈরির পথটা তৈরি হচ্ছে না। আর পেশাদার থিয়েটার চর্চার জন্য রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার কোনো বিকল্প নেই। থিয়েটার চর্চায় মেয়েরা কম আগ্রহী। এর কি কারণ বলে মনে করেন? এটা শুধু থিয়েটারের ক্ষেত্রে নয়। আমি মনে করি সর্বক্ষেত্রেই সমাজে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা কম। সেটা রাজনৈতিক, প্রাতিষ্ঠানিক, অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রেই। পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজে মেয়েদের স্বাধীনতা কম। তারা নিজেদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। তাদের কথা বলার স্বাধীনতা নেই, চলাফেরায় স্বাধীনতা নেই। সব সময় তাদের কারো না কারো মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে কিংবা মেনে নিয়ে চলতে হয়। তাই আমাদের সমাজে নারীরা স্বাধীন হয়েও অদৃশ্য বন্ধনীতে সব সময় পরাধীন। সে জন্যই সবক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণও কম। নতুনদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন? জীবনটা অনেক বড়। সেই জীবনে থিয়েটারকে কতটা মূল্য দেবে সেটা বড় বিষয়। পরিষ্কার কথায় বলতে গেলে, কেউ থিয়েটার করতে এসো না। যদি মনে করো থিয়েটার তোমাকে সমৃদ্ধ করছে এবং তুমি মনের তাগিদে থিয়েটার করতে আগ্রহী। কেবল তখনই থিয়েটার কর। যদি ভালো কিছু পেতে চাও তাহলে আগে, তোমাকে ভাবতে হবে তুমি সেই বিষয়টিকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছ। থিয়েটার হচ্ছে সত্যিকার অর্থে ভালোবাসার জায়গা। এখানে শিল্পের প্রতি নিরেট প্রেম থাকা চাই। যার কোনো বিকল্প নেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App