নৌকায় চড়ে সংসদে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন যে নায়িকারা
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০৪:১৯ পিএম
গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়ার বাসনায় আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়ন ফরম তুলেছিলেন নাটক সিনেমার অনেক পরিচিত মুখ। এদের মধ্যে দুয়েকজন মনোনয়ন পেলেও বেশির ভাগই হয়েছেন বাতিল। আবার কেউ কেউ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন। এমনকি সংরক্ষিত নারী আসনের জন্যও মনোনয়ন ফরম তুলতে দেখা গিয়েছিল অনেক তারকা অভিনেত্রীকে।
গত নির্বাচনে শোবিজ তারকাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল মাহিয়া মাহির নাম। আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়ন ফরম তুলেছিলেন এই অভিনেত্রী। তবে মনোনয়ন না পেয়ে সিদ্ধান্ত নেন স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার। এরপর ট্রাক মার্কা নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে বেশ আলোচনায় আসেন মাহিয়া মাহি। তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে ভরাডুবি হয় তার। একই আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে তিনি হারেন বিপুল ভোটের ব্যবধানে। এমনকি নির্বাচনের পর রাজনীতিবিদ স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় ঢাকাই সিনেমার আলোচিত এই নায়িকার। নির্বাচনের সময় সিনেমা ছেড়ে জনসেবার ঘোষণা দিলেও নির্বাচনে হেরে আবারো ফিরে আসেন সিনেমার জগতেই।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিনেমার নায়িকাদের মধ্যে আলোচনায় ছিলেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার। এফডিসি কান্ডে আলোচিত এই নায়িকার সঙ্গে শেখ পরিবারের সদস্য শেখ সেলিমের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক থাকায় রাজনৈতিক মহলে বেশ দাপট নিয়ে চলতেন নিপুন। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিপুনও হতে চেয়েছিলেন সংসদ সদস্য। তবে মনোনয়ন ফরম তুললেও শেষ অবদি মনোনয়ন পাননি তিনি।
বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে নির্মিত বায়োপিক সিনেমায় শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় এসেছিলেন নুসরাত ফারিয়া। সেসময় জানিয়েছিলেন তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আসতে চলেছেন। সেই আশায় নেমেছিলেন মনোনয়ন সংগ্রহের মিছিলে। কিন্তু তার ক্ষেত্রেও একই পরিণতি ঘটায় রাজনীতির মাঠে আর কখনোই দেখা যায়নি এই অভিনেত্রীকে।
সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন টিভি অভিনেত্রী সোহানা সাবা। তিনি সেসময় জানিয়েছিলেন আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। মানুষের জন্য কাজ করে বড় হয়েছি, এবার বড় পরিসরে কাজ করতে চাই। তবে শেষ অবদি তারও মনোনয়ন ভাগ্য জোটেনি।
এই তালিকায় নাম ছিল আরেক টিভি অভিনেত্রী উর্মিলা শ্রাবন্তী করের। ছাত্রলীগের সাবেক এই নেত্রীও ছিলেন মনোনয়নের দৌড়ে এগিয়ে। তবে তার বেলাতেও ফলাফল একই, মনোয়ন পাননি তিনিও।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা অপু বিশ্বাসও তুলেছিলেন মনোনয়ন ফরম। মানুষের জন্য কাজ করার আগ্রহের কথাও জানিয়েছিলেন সাংবাদিকদের কাছে। তবে শেষ পর্যন্ত তার ভাগ্যও সুপ্রসন্ন হয়নি।
সিনেমার আরও দুইজন নায়িকা রয়েছেন এই তালিকায়। চিত্রনায়িকা শাহনূর ও চিত্রনায়িকা শিমলা। জানা গেছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতার আশ্বাসেই তারা মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন। তবে তাদের আশ্বাসে ফল মেলেনি।
এদিকে টিভি অভিনেত্রীদের মধ্যে সংসদ সদস্য হবার মনোনয় ফরম কেনার তালিকা অনেক লম্বা। অভিনেত্রী তানভীন সুইটি বেশ আলোচনায় ছিলেন মনোনয়ন কিনে। আলোচনায় এসেছিলেন ৗপন্যাসিক শহীদুল্লাহ কায়সারের কন্যা অভিনেত্রী শমী কায়সার। এছাড়াও নৌকায় চড়ে সংসদে যাবার ইচ্ছা ছিল প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনের। তবে তাদের কারোরই ভাগ্যে নৌকার টিকিট জোটেনি।
এই কয়জন ছাড়াও সংসদ সদস্য হবার বাসনায় মনোনয়ন ফরম তুলেছিলেন লাকি ইনাম, সুবর্ণ মোস্তফা, রোকেয়া প্রাচী, শামীমা তুষ্টি, জ্যোতিকা জ্যোতি ও জাকিয়া মুনসহ আরও অনেক তারকা অভিনেত্রী। তবে তাদের কারোর ভাগ্যেই নৌকায় চড়ে সংসদে যাবার সুযোগ মেলেনি।