×

বিনোদন

নিয়মিত লিখছেন নাট্যকার বিদ্যুৎ রায়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৪, ০১:৫৯ পিএম

নিয়মিত লিখছেন নাট্যকার বিদ্যুৎ রায়

নাট্যকার বিদ্যুৎ রায়

বলা হয়, একটি দেশের সংস্কৃতি যতটা উন্নত, সেই দেশও ততটা উন্নত। ভিন্নভাবে বলতে গেলে, একটি দেশও জাতি ততটা সমৃদ্ধ, যতটা সমৃদ্ধ তার সংস্কৃতি। একথাও বলার অপেক্ষা রাখে না যে আমাদের দেশের তরুণদের হাত ধরেই প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ হচ্ছে দেশ এবং দেশীয় সংস্কৃতি।

দেশীয় সংস্কৃতিতে অবদান রাখা তরুণদের মধ্যে অন্যতম নাট্যকার বিদ্যুৎ রায়। এই সময়ে দেশে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নাট্যকারদের মধ্যে অন্যতম তিনি। ইতোমধ্যে এই নাট্যকার দুইশতাধিক টিভি নাটক লিখে পরিচিতি পেয়েছেন। নাটকগুলো দেশ্যের স্বনামধন্য টেলিভিশন চ্যানেলের পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রচারের পর প্রশংসিত হয়েছে। দর্শকের কাছে নন্দিত হয়েছেন তিনি।

বিদ্যুৎ রায়ের লেখা নাটকগুলোতে উঠে আসে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, তাদের জীবন-জীবিকা ও সুখ-দুঃখের কথামালা। বিদ্যুৎ রায় লেখনীর মাধ্যমে দেশের প্রচলিত প্রায় মরিচাধরা প্রথার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদের ঝড় তোলেন। তার মতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য একজন নাট্যকারের ‘কলম’ই হচ্ছে একমাত্র এবং সবচেয়ে বড় অস্ত্র।


নাট্যকার বিদ্যুৎ রায়ের জন্ম গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলায়। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল তার। সংস্কৃতমনা পরিবারে বেড়ে ওঠায় সেই আগ্রহে চিড় ধরেনি কখনও। নিজের বড় জ্যাঠা মশাই ছিলেন ততকালিন যাত্রাদলের পরিচালক ও স্বনামধন্য অভিনেতা, আর নিজের বাবা বর্তমান সময়ের একজন নিষ্ঠাবান জনপ্রিয় কবিয়াল ও ধর্মপ্রাণ মানুষ। বিদ্যুৎ রায়ের নাট্যকার হয়ে ওঠার পিছনে অন্যতম অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন যিনি, তিনি হচ্ছেন তার জন্মদাতা বাবা।

পড়ালেখার সুবাদে বিদ্যুৎ রায় ঢাকায় পাড়ি জমানোর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই প্রয়াত নাট্যজন ড. ইনামুল হকের পরামর্শে থিয়েটার চর্চা শুরু করেন। প্রথম নাটকের দল ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন’। এই দলের ‘সেইসব দিনগুলি’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে প্রথম ঢাকার মঞ্চে ওঠেন তিনি। নাগরিক নাট্যাঙ্গনের হয়ে কয়েক বছর থিয়েটার চর্চার পর অভিনেতা দিলীপ চক্রবর্তীর হাত ধরে তিনি স্বনামধন্য নাটকের দল ‘দেশনাটক’ এর সাথে যুক্ত হন।

এখনো তিনি ‘দেশনাটক’ এর সাথেই আছেন। নাট্যকার হয়ে ওঠার পেছনে ‘দেশনাটক’ এর সাথে সম্পৃক্ত থাকাটাই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে তিনি মনে করেন। তাই একজন একনিষ্ঠ থিয়েটারকর্মী হিসেবে ‘দেশনাটক’ এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞ এই নাট্যকার।

নাট্যকার হিসেবে বিদ্যুৎ রায়ের উল্লেখযোগ্য হলো একক নাটক সিগন্যাল, টাইমল্যাপস. লক্ষীসোনা, চিৎকার, বাঁচি তোমার খেয়ালে, ভালোবাসার মায়াজাল, সানাই, গ্রামের বন্ধু, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন, সুমি তুমি কোথায়, দায়িত্ববোধ, সরি বাবা, নিশি রাতের গল্প, চাল চোর, চেরাগের দৈত্য, ভাই রোমান্টিক হইতে চায়, ভাই কথা বলে কম, এক দফা এক দাবি, টাকার মেশিন, চান মিয়ার আংটি বদল, টাকারে ভাই টাকা, ঢাকাইয়া হিরো, বড়জামাই প্রভূতি।

ধারাবাহিক নাটকের মধ্যে লতিফ ভাইরাস, পন্ডিতের আখড়া, ফ্যামিলি প্রবলেম উল্লেখযোগ্য। এছাড়া সামনে প্রচারের অপেক্ষায় লেগুনাপ্রেম, হকারের সংসার, হুইল চেয়ার, অনুভবে তুমি, চোরের সুন্দরী বউ, চাকরের ছেলে, আমি কোটিপতি হবোই, মিনি ধারাবাহিক সোনার সংসার, মোরগলড়াই  প্রভৃতি।

নাটক লেখার পাশাপাশি পরিচালনার কাজেও বেশ দক্ষ বিদ্যুৎ রায়। তাই পছন্দ মতো গল্পে মাঝে মাঝে তিনি পরিচালনাও করেন। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি তিনি নির্মাণ করেছেন  ‘তোমায় ভালবাসি বলে’, ‘তুমি আমার বেঁচে থাকার কারণ’ এবং ‘পাখি’ শিরোনামের  তিনটি একক নাটক। এই তিনটি গল্পই কথাসাহিত্যিক নীগার সুলতানার ‘রজনী গন্ধার মেয়ে’ গল্পগ্রন্থ থেকে নেয়া।

দেশের প্রথমসারির তিনটি টিভি চ্যানেলে নাটকগুলো প্রচারের অপেক্ষায়। নির্মাতা হিসেবে দক্ষতার পরিচয় দিলেও নিজেকে নাট্যকার হিসেবে পরিচয় দিতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি। লেখাই তার নেশার মত। তাই নিয়মিত লিখছেন বিদ্যুৎ রায়। আজীবন লিখে যেতে চান। সুস্থ্য সুন্দর মানবিক সমাজ গঠনে তার লেখনির কলম চলবে অবিরত, সেই প্রত্যাশা সবার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App