×

বিনোদন

একই দিনে বাংলাদেশে হলিউডের তিন সিনেমা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:২০ পিএম

একই দিনে বাংলাদেশে হলিউডের তিন সিনেমা

ছবি: সংগৃহীত

হলিউডের সিনেমাপ্রেমীদের জন্য দারুণ খবর। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) একসঙ্গে হলিউডের তিনটি ছবি মুক্তি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সে। যার মধ্যে রয়েছে গোয়েন্দা কাহিনী নির্ভর ছবি ‘আরগিল’।

ম্যাথিউ ভন পরিচালিত এ ছবির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন হেনরি ক্যাভিল, ব্রেসি ডালাস হাওয়ার্ড, স্যাম রকওয়েল, ব্রায়ান ক্রানস্টন, ডুয়া লিপা, স্যামুয়েল এল জ্যাকসন, জন সিনা, ক্যাথরিন ও হারা, সোফিয়া বওতেলা, রিচার্ড ই গ্রান্টসহ আরও অনেকে।

অন্যদিকে, সুপারহিরো ছবি ‘ম্যাডাম ওয়েব’ পরিচালনা করেছেন এস জে ক্লার্কসন। এ ছবির নাম ভূমিকায় দেখা যাবে ডাকোটা জনসনকে। অন্যতম আরেকটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন অ্যাডাম স্কট। এ ছাড়া বিভিন্ন চরিত্রে দেখা যাবে সিডনি সুইনি, এমা রবার্টস, ইসাবেলা মেকরেড, জিল হেন্সি, জসিয়া ম্যামেট, মাইক ইপস, মাইক ব্যাশ, অস্টিন জে রায়ান ও মিচেল ম্যালভেস্তির মতো তারকাকে।

আরও আছে রেইনাল্ডো মার্কস গ্রিন পরিচালিত বিশ্বনন্দিত সংগীতশিল্পী বব মার্লের বায়োপিক ‘বব মার্লে: ওয়ান লাভ’। যেখানে বব মার্লের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ব্রিটিশ অভিনেতা কিংসলে বেন-আদির। তিন ঘরানার এই তিনটি ছবিই সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনা সৃষ্টি করেছে।

আরগিল

একসঙ্গে পর্দায় আসছেন সুপারম্যানখ্যাত অভিনেতা হেনরি ক্যাভিল, রেসলিং তারকা জন সিনা এবং সংগীতশিল্পী ডুয়া লিপা। তিন অঙ্গনের খ্যাতিমান এই তিন তারকার কেমিস্ট্রি দেখা যাবে ম্যাথিউ ভনের ‘আরগিল’ ছবিতে। অ্যাপেল স্টুডিওস এবং মার্ভ স্টুডিওসের যৌথ প্রযোজনায় ২০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত এ ছবির পরিবেশক ইউনিভার্সেল পিকচার্স। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন হেনরি ক্যাভিল, ব্রেসি ডালাস হাওয়ার্ড, স্যাম রকওয়েল, ব্রায়ান ক্রানস্টন, ডুয়া লিপা, স্যামুয়েল এল জ্যাকসন, জন সিনা, ক্যাথরিন ও হারা, সোফিয়া বওতেলা, রিচার্ড ই গ্রান্টসহ আরও অনেকে।

২০২১ সালের জুনে ঘোষণা করা হয়, ম্যাথিউ ভনকে মার্ভ স্টুডিওর জন্য পরিচালনা এবং প্রযোজনার সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে। পরের মাসগুলিতে অভিনয়শিল্পীদের নাম চূড়ান্ত করা হয়। চিত্রনাট্য লেখার দায়িত্ব পান জেসন ফুচস। ডুয়া লিপা ছবিতে অভিনয় করার পাশাপাশি টাইটেল ট্র্যাক এবং ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরের করেন। ২০২১ সালের আগস্টে অ্যাপেল টিভি প্লাস ২০০ মিলিয়ন ডলারে ছবিটির স্বত্ব কিনে নেয়। পরিচালক ম্যাথিউ ভন বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী তাকে এ ছবিতে কাজ করার সময় করে দিয়েছে। তিনি এটিকে আশির দর্শকের অ্যাকশন থ্রিলার ডাই হার্ড এবং লেথাল ওয়েপনের মতো বর্ণনা করেছেন। কেন্দ্রীয় চরিত্রে হেনরি ক্যাভিলকে পছন্দ করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার এমন একজনের প্রয়োজন ছিল যিনি বন্ডের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য জন্মগ্রহণ করেছিলেন’। তিনি চোখের পলকে জীবনের চেয়ে বড় অ্যাকশন হিরোর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এটি কিংসম্যান থেকে অনেক আলাদা। ছবিটির শুটিংয়ের জন্য গ্রীনফোর্ড, পার্ক রয়্যাল এবং বোভিংডনের স্টুডিও ব্যবহার করেছিল। পটভূমির শটগুলি গ্রীস এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চিত্রায়িত হয়েছে।


এই সিনেমার মাধ্যমে গোয়েন্দা চরিত্রে পর্দায় আসছেন সুপারম্যানখ্যাত হলিউড তারকা হেনরি ক্যাভিল। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র আরগিল-এর ভূমিকায় দেখা যাবে তাকে। লেখিকা এলি কনওয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ব্রেসি ডালাস হাওয়ার্ড, যিনি আরগিল চরিত্রকে কেন্দ্র করে একটি গোয়েন্দা উপন্যাস লেখেন। গোপন মিশনের প্রেক্ষাপটে লেখা সেই উপন্যাস তাকে নিয়ে যায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে। চিত্রনাট্যে দেখা যায়, এলির লেখা কাল্পনিক গল্প এবং চরিত্রগুলো পুরোটাই বাস্তব। যার ফলে গোয়েন্দা সংস্থা তাকে আটক করে। একই সাথে সেখানে আবির্ভাব ঘটে হেনরি জন ডুয়ার। ছবির বাকি গল্পটা এলিকে রক্ষার সাথে গোপন মিশন পরিচালনার। তারকাবহুল এ ছবিটি এরইমধ্যে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। গত ২৪ জানুয়ারি লন্ডনের লেইসেস্টার স্কয়ারে ছবির প্রিমিয়ার হয়। সেখানে অনেকেই ছবির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। ধারণা করা হচ্ছে, মুক্তির পর ছবিটি দর্শকদের মন ভরানোর গল্প তৈরি করবে।

ম্যাডাম ওয়েব

‘ফিফটি শেডস অব গ্রে’ খ্যাত হলিউড তারকা ডাকোটা জনসন অভিনীত নতুন সিনেমা ‘ম্যাডাম ওয়েব’। এ সিনেমা দিয়েই মার্ভেলের দুনিয়ায় প্রবেশ করছেন আলোচিত এ অভিনেত্রী। সুপারহিরো এ সিনেমায় ডাকোটাকে দেখা যাবে ম্যাডাম ওয়েব চরিত্রে। ছবিটি পরিচালনা করেছেন এস জে ক্লার্কসন। অন্যতম আরেকটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন অ্যাডাম স্কট। এ ছাড়া বিভিন্ন চরিত্রে দেখা যাবে সিডনি সুইনি, এমা রবার্টস, ইসাবেলা মেকরেড, জিল হেন্সি, জসিয়া ম্যামেট, মাইক ইপস, মাইক ব্যাশ, অস্টিন জে রায়ান ও মিচেল ম্যালভেস্তির মতো তারকাকে।


মার্ভেলের সিনেমা ম্যাডাম ওয়েব মূলত স্প্যাইডারম্যানের স্পিন অব সিরিজ। তারকায় ভরা এ সিনেমায় দেখানো হবে স্প্যাইডারম্যান ও ভেনমের মধ্যকার লড়াই। সম্প্রতি সিনেমাটি নিয়ে বিবিসি রেডিওর সাক্ষাৎকারে অংশ নেন ডাকোটা। সেখানে বলেন, ‘প্রথমবারের মতো সুপারহিরো গল্পে অভিনয় করলাম। আমি এ ধরনের সিনেমায় আগে অভিনয় করিনি। এটা যথেষ্ট কষ্টকর প্রক্রিয়া। পুরোটা সময় মানসিক চাপের মধ্যে ছিলাম তবে কাজটি করে আমি আনন্দিত। মার্ভেলের সঙ্গে এটাই আমার প্রথম কাজ। আমার চরিত্রের নাম সিনেমার নামে, ম্যাডাম ওয়েব; বিষয়টি আমার কাছে দুর্দান্ত লেগেছে। বেশ কিছু দৃশ্যের শুটিংয়ে আমাদের কো-আর্টিস্টরা আহতও হয়েছেন। আমিও সামান্য ইনজুরিতে পড়েছিলাম। তবে কাজের অভিজ্ঞতা দারুণ। কাজটি আমার ক্যারিয়ারে স্মরণীয় করে রাখতে নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করছি। বাকি কথা সিনেমা মুক্তির পর দর্শক বলবে।’ মার্ভেল ভক্তদের মধ্যে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে এ ছবি নিয়ে। ট্রেলার প্রকাশের পর থেকে আলোচনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। কেমন হবেন মার্ভেলের নতুন নায়িকা সেটাই বড় কৌতুহলের জন্ম দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশিরভাগ ভক্তই ইতোমধ্যে ডাকোটাকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্ভেলের ভুবনে। এখনো পর্যন্ত ইতিবাচক মন্তব্যই বেশি দেখা গেছে। বস্তুত সিনেমা দেখার জন্যই অপেক্ষা করছেন সবাই। আর সিনেমা দেখার পর দর্শকরা আশাহত হবেন না বলেই বিশ্বাস নির্মাতাসহ সংশ্লিষ্টদের।

‘বব মার্লে: ওয়ান লাভ’

১৯৪৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ জ্যামাইকার নাইন মাইলের একটি বস্তিতে জন্মগ্রহণ করেন বিশ্বনন্দিত সংগীতশিল্পী বব মার্লে। একাধারে একজন কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, গিটারবাদক ও প্রযোজক হিসেবে তার খ্যাতি দুনিয়াজুড়ে। ‘বাফেলো সোলজার’, ‘নো ওম্যান, নো ক্রাই’, ‘গেটআপ স্ট্যান্ডআপ’সহ অসংখ্য কালজয়ী গান দিয়ে জয় করেছেন কোটি ভক্তের হৃদয়। বব মার্লে জীবনভর মানবতার পক্ষে কন্ঠ ধরেছেন। তাঁর গানের মূল উপজীব্যই প্রতিবাদ-ভালোবাসার জয়গান। গান দিয়েই অধিকারবঞ্চিত মানুষের পক্ষ নিতেন, গান দিয়েই করেছেন সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা। গণমানুষের গান গাওয়ায় সবার প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন এই জ্যামাইকান রেগে স্টার। সর্বকালের সেরা শিল্পীদের একজন তিনি। তরুণদের আদর্শ। ১৯৮১ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে ক্যানসারের কাছে হার মেনে অনন্তযাত্রার পথে পাড়ি জমান নিপীড়িত মানুষের পক্ষে প্রতিবাদী কণ্ঠের এই সংগীতশিল্পী। জন্মমাস ফেব্রুয়ারিতেই মুক্তি পাচ্ছে বব মার্লের বায়োপিক ‘বব মার্লে: ওয়ান লাভ’। সারাবিশ্বের মত বাংলাদেশেও অনেক ভক্ত রয়েছে বব মার্লের। রেইনাল্ডো মার্কস গ্রিন পরিচালিত ‘ওয়ান লাভ’ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেবে ববের আদর্শ, নৈতিকতা আর ভালোবাসার বার্তা। সম্প্রতি লন্ডনে ছবিটির প্রিমিয়ারে অংশ নেন মার্লের ছেলে ও ছবির প্রযোজক জিগি মার্লে। তিনি বলেছেন, ‘ছবিটির মূল উদ্দেশ্য এর মাধ্যমে বাবার চিন্তাধারা এবং বার্তা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া। ছবিটি পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেবে ইতিবাচকতার বার্তা।’ বব মার্লের পুত্র জিগি মার্লে বলেছেন, ‘আমাদের বাবার গল্পটা সবার সামনে তুলে ধরার এখনই সময়। আপনারা তার গান শুনেছেন এবং ভাবছেন তাকে জানেন; কিন্তু আসলেই কি জানেন তিনি কিসের মধ্য দিয়ে গিয়েছিলেন? কী সব মুহূর্ত তাকে বিখ্যাত বানিয়েছে? এই প্রথম কোন সিনেমায় উঠে আসবে সেসব; তার দুঃখ, বেদনা, আনন্দ আর মুক্তির অনুভব দেখতে পাবেন এখানে।’ চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করছেন বব মার্লের স্ত্রী রিটা মার্লে, সন্তান জিগি ও সেডেলা মার্লে। নির্বাহী প্রযোজনায় আছেন ব্র্যাড পিট। ববের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ব্রিটিশ অভিনেতা কিংসলে বেন-আদির।


ছবির পটভূমির শুরু হয় ১৯৭৬ সালে কিংস্টনে। বব মার্লে তখন বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রতিবাদে একটি পিস কনসার্টের পরিকল্পনা করেন। এরপর মার্লে দম্পতির ওপর হত্যাচেষ্টা চালানো হয়। কোনোমতে বেঁচে গেলেও পরবর্তী সময়ে স্ত্রীসহ লন্ডনে পাড়ি জমান মার্লে। লন্ডনে গিয়ে তিনি তার জনপ্রিয় অ্যালবাম এক্সোডাস রেকর্ড করেন। এছাড়া মার্লের শৈশব ও যৌবনের কিছু ফ্ল্যাশব্যাকও দেখা যাবে ছবিতে। ওয়ান নাইট ইন মায়ামিতে ম্যালকম এক্স এবং দ্য কোমি রুল-এ বারাক ওবামা চরিত্রে অভিনয় করা বেন-আদির বার্বি ছবির শুটিং চলার সময় থেকেই বব মার্লের চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তুতি শুরু করেন। ৩৭ বছর বয়সী এ অভিনেতা বলেন, মার্লের আচরণ ও ভাষা আয়ত্ত করা সহজ কাজ ছিল না। ভাষা ও সংগীতে বব মার্লের দুর্বলতা খুঁজে পাওয়া কঠিন। তিনি একজন দৃঢ় উদ্যমী ব্যক্তি এবং ভদ্রলোক ছিলেন। তার মধ্যে অনেক বৈচিত্র্য ছিল। মার্লের চরিত্রে অভিনয় নিয়ে বেন-আদির বলেন, ‘আমি পেশাদার সংগীতশিল্পী নই, তাই আমাকে সংগীত সম্পর্কে সবকিছু শিখতে হয়েছিল।’ গত ৬ জুলাই প্রকাশ করা হয়েছে সিনেমাটির ট্রেলার। প্রায় তিন মিনিটের সেই ঝলক ইতোমধ্যে মুগ্ধতা ছড়ানো শুরু করেছে বিশ্বজুড়ে। যেন নতুন রূপে ফিরে এলেন ‘লিজেন্ড’। এক দিনের মধ্যে ট্রেলারটির প্রায় এক কোটি ভিউ হয়েছে। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই ছবিটি দেখার আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App