×

বিনোদন

কথামালায় গানে স্মৃতিচারণে ইদুকে স্মরণ উদীচীর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:২১ পিএম

কথামালায় গানে স্মৃতিচারণে ইদুকে স্মরণ উদীচীর

কথামালায়, গানে, স্মৃতিচারণে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য, সাবেক সভাপতি, শিল্পী-সংগ্রামী গোলাম মোহাম্মদ ইদুকে স্মরণ করলো উদীচী। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে স্মরণ সভা আয়োজন করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এ স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদসহ ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন শাখা সংসদের শিল্পী-কর্মীরা। আরো উপস্থিত ছিলেন উদীচী ছাড়াও জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে যেসব সংগঠনের সঙ্গে গোলাম মোহাম্মদ ইদু সম্পৃক্ত ছিলেন সেসব সংগঠনের প্রতিনিধিরা। 

শোক সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় স্মরণ সভা। এরপর উদীচীর শিল্পীরা সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশন করেন ‘তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে’ এবং ‘সংগ্রাম থেমে গেছে বলে কে, বলে কে’ গান দু'টি। এরপর গোলাম মোহাম্মদ ইদুর প্রতিকৃতিতে বিভিন্ন সংগঠন এবং ব্যক্তির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। 

এরপর উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য দেন সহ-সভাপতি হাবিবুল আলম। গোলাম মোহাম্মদ ইদুর জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন তার সন্তান আনিসুল কবির অসীম, সিপিবির সভাপতি কমরেড শাহ আলম, সিপিবির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ম. হামিদ, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র-এর আব্দুল মালেক, বিশিষ্ট শিশু সাহিত্যিক, ছড়াকার আখতার হুসেন, ছায়ানট-এর নির্বাহী সদস্য মফিদুল হক, মহিলা পরিষদের সভাপতি ফৌজিয়া মোসলেম এবং উদীচীর সহ-সভাপতি মাহমুদ সেলিম। 

বক্তারা বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে উদীচী প্রতিষ্ঠিত হওয়ারও প্রায় এক দশক আগে শিল্পী-সংগ্রামী-কৃষক নেতা সত্যেন সেন একটি গানের দল গঠন করেন। সেই গানের দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন গোলাম মোহাম্মদ ইদু। পরবর্তীতে ১৯৬৮ সালের ২৯ অক্টোবর উদীচী আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি প্রথম আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়া, ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন গোলাম মোহাম্মদ ইদু। শেষ বয়সে শারীরিক নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও উদীচীর ছোট-বড় যেকোন কর্মসূচিতে ছুটে আসতেন গোলাম মোহাম্মদ ইদু। উদীচীর সব বয়সী শিল্পী-কর্মীর জন্যই তিনি প্রকৃত অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। 

বক্তারা আরো বলেন, নিভৃতচারী সাংস্কৃতিক সংগঠক গোলাম মোহাম্মদ ইদু ছিলেন উদীচীর সকল স্তরের শিল্পী-কর্মীদের প্রকৃত অভিভাবক। অসাম্প্রদায়িক, সাম্যবাদী সমাজ বিনির্মাণের যে আদর্শকে ধারণ করে তিনি আজীবন লড়াই করে গেছেন, সেই আদর্শ প্রতিষ্ঠায় উদীচী অবিচল থাকবে। তাঁর মতো আজীবন বিপ্লবী মানুষকে হারানো দেশের সংস্কৃতি জগতের জন্য বড় ক্ষতি। শারীরিকভাবে না থাকলেও মানসিক শক্তি হয়ে উদীচীর সব লড়াই-সংগ্রামে থাকবেন গোলাম মোহাম্মদ ইদু। তার আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করেই উদীচী পথ চলবে। স্মরণ সভা সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।

আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে ইদুর পছন্দের সম্মেলক ও একক গান এবং আবৃত্তি পরিবেশন করেন উদীচীর এবং আমন্ত্রিত শিল্পীরা। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন মায়েশা সুলতানা ঊর্বি এবং জয়া সেন গুপ্তা। এছাড়া, দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় আবৃত্তি বিভাগের বাচিক শিল্পীরা। সন্ধ্যায় গোলাম মোহাম্মদ ইদুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App