×

বিনোদন

ছায়ানটের প্রাক্তনী সম্মিলন ২ মার্চ

ছায়ানটের আহ্বান ‘বিশ্বমানব হবি যদি সম্পূর্ণ বাঙালি হ’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:৪৭ পিএম

ছায়ানটের আহ্বান ‘বিশ্বমানব হবি যদি সম্পূর্ণ বাঙালি হ’

ছয় দশক পেরিয়েছে ছায়ানট। পুরনো সাথিদের আবারো ডাক দিচ্ছে মিলনোৎসবে। যেখানে দেড়শতাধিক শিক্ষক এবং পাঁচ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী নিয়ে স্থির প্রত্যয়ে অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে ছায়ানট সঙ্গীতবিদ্যায়তন। দেশ এবং বিশ্বে চলমান সামাজিক বিদ্বেষের মুখে এবারে ছায়ানটের আহ্বান ‘বিশ্বমানব হবি যদি সম্পূর্ণ বাঙালি হ’। এই অঙ্গীকার উচ্চারণে আগামী ২ মার্চ সংগীতবিদ্যায়তনের পুরনো সহযাত্রীদের একত্র করে আয়োজিত হচ্ছে মিলনোৎসব প্রাক্তনী সম্মিলন।

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে ছায়ানট ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী, ছায়ানটের  সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা এবং প্রাক্তনী সম্মিলনের আহ্বায়ক রোকাইয়া হাসিনা নীলি। 

লিখিত বক্তব্যে লাইসা আহমদ লিসা বলেন, আবহমান বাঙালি ঐতিহ্যের সম্প্রীতির প্রত্যাবর্তন এবং মানবতাবোধের পুনর্জাগরণে শামিল হতে ডাক দিচ্ছে ছায়ানট। তাদের বিশ্বাস, সমাজ ও সংস্কৃতির বর্তমান পরিস্থিতিতে ছায়ানট মনে করে সমাজ ও সংস্কৃতির বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রাক্তনী সম্মিলন তাৎপর্যপূর্ণ হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলার সংগীতসংস্কৃতির চর্চা ও শিক্ষার্থীদের বাঙালি জাতিসত্তায় উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে ছায়ানট ১৯৬৩ সালে ছায়ানট সংগীতবিদ্যায়তন প্রতিষ্ঠা করে। জন্মাবধি ছায়ানট সংগীতবিদ্যায়তন রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, লোকসংগীতসহ মূলধারার বাংলা গানের রসাস্বাদন এবং শাস্ত্রীয় নৃত্যকলা ও শুদ্ধসংগীতের নানান ধারার পাঠদানে নিমগ্ন। সংগীতের সুর-ছন্দ-বাণীর পাশাপাশি নিরলস প্রয়াস চলছে সকলের মধ্যে সংস্কৃতিমানস গড়ে তুলবার, সম্প্রীতির সমাজ অটুট রাখতে সকলকে অনুপ্রাণিত করবার। অতীত ও বর্তমানের সকল সঙ্গীকে নিয়ে এবারের লক্ষ্য, অতীত দিনের স্মৃতিতর্পণ এবং বর্তমানের প্রাসঙ্গিকতায় ফেলে আসা এবং বর্তমান ও আগামীর পথের পর্যালোচনা ও ভাবনা।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, সম্মিলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ছায়ানট সংগীতবিদ্যায়তনের দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রমে অন্তত দু'বছর পাঠ নেয়া দেশ ও প্রবাসের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষক এবং সংগঠকদের। নিবন্ধন হচ্ছে সংস্কৃতি-ভবনে এবং অনলাইনে। নিবন্ধন চলবে জানুয়ারির শেষ দিন পর্যন্ত। 

সারাদিনব্যাপী আয়োজনে থাকছে উদ্বোধন পর্ব, স্মৃতিচারণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সর্বোপরি, কেমন মানুষ ও দেশ গড়তে চাই, দেখতে চাই তা নিয়ে কথোপকথন। পরিকল্পনা আছে, সংগীতবিদ্যায়তনের আদি-মধ্য-চলতি পর্বের পথচলা নিয়ে বিদ্যার্থীদের বয়ানে স্মৃতিচারণমূলক একটি স্মরণিকা প্রকাশ করাসহ আনন্দ আয়োজন। 

উল্লেখ্য, ষাটের দশকে ফৌজি পাক-সরকার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে রবীন্দ্র সংগীত গাওয়া, বেতার বা টেলিভিশনে সম্প্রচার নিষিদ্ধ করে। এতে বাংলাদেশের প্রবাদপ্রতিম রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী কলিম শরাফী দমে না গিয়ে অন্যান্যদের সহায়তায় রবীন্দ্র সংগীত, নাটক ও নৃত্যনাট্যের সংস্থা ছায়ানট গড়ে তোলেন। নিষেধাজ্ঞার ভিতর গুপ্ত সংগঠনের মতো জেলা শহরগুলিতে ছড়িয়ে পড়েছিল ‘ছায়ানট’-এর শাখা। 

১৯৬১ সালে রবীন্দ্র-জন্মশতবার্ষিকী উৎযাপনের পর একটি প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন কয়েকজন সংগঠক। তাদের মধ্যে মোখলেসুর রহমান (সিধু ভাই নামে পরিচিত), শামসুন্নাহার রহমান, সুফিয়া কামাল, ওয়াহিদুল হক অন্যতম। সাঈদুল হাসানের প্রস্তাবে সংঠনটির নামকরণ করা হয় ছায়ানট।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App