×

বিনোদন

যারা স্মরণীয় হয়ে থাকবেন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭, ০২:০৩ পিএম

২০১৭ ছিল দেশবরেণ্য অনেক ব্যক্তিত্বকে হারানোর বছর। এ বছর দেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও অনেক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারিয়েছে দেশ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য সামনের দিনেও যারা স্মরণীয় হয়ে থাকবেন এমন কয়েকজনের কথা তুলে ধরা হলো। তাদের হারানোর শোক বুকে নিয়েই নতুন বছর শুরুর যাত্রা হবে আমাদের। আনিসুল হক বছরের শেষদিকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে গেলেন নন্দিত উপস্থাপক, সংস্কৃতি অঙ্গনের সুধীজন আনিসুল হক। ব্যবসায়ী এই মানুষটি চিরকাল করেছেন সংস্কৃতির চর্চা। তিনি শেষকালে রাজনীতিতে জড়িয়েছিলেন, ঢাকা উত্তরের মেয়র নির্বাচিত হয়ে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। গেল ৩০ নভেম্বর লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ৭৪ বছর বয়সে ১৫ ডিসেম্বর চিরবিদায় নেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, জননেতা, মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। নায়করাজ রাজ্জাক ২১ আগস্টে আমরা হারিয়েছি বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র নায়ক রাজ্জাককে। গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশক থেকে যাদের হাত ধরে বাংলা চলচ্চিত্র দাঁড়িয়েছিল। ৭৬ বছর বয়সে ৫০ বছরের বর্ণাঢ্য চলচ্চিত্র জীবনের ইতি টানলেও দেশের মানুষের মনে ‘অনন্ত প্রেম’ রেখে গেলেন প্রায় ৩শ চলচ্চিত্রের অভিনেতা আর বহু চলচ্চিত্রের পরিচালক-প্রযোজক এ কিংবদন্তি। নায়করাজ রাজ্জাকের মৃত্যুর খবরে গোটা চলচ্চিত্রপাড়ায় শোকের ছায়া নেমে আসে। কয়েক দফায় জানাজা শেষে ২৩ আগস্ট দুপুরে তাকে বনানী গোরস্তানে দাফন করা হয়। লাকী আখন্দ ‘আগে যদি জানতাম’ খ্যাত সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও গায়ক লাকী আখন্দ মারা যান চলতি বছরের ২১ এপ্রিল। দীর্ঘদিন ধরেই দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে ভুগছিলেন তিনি। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর আরমানিটোলায় নিজ বাসভবনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে দ্রæত স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লাকী আখন্দ একজন মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। তাকে দাফন করা হয় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী গোরস্তানে। আব্দুল জব্বার মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধারা। তাদের একজন আব্দুল জব্বার। গানের মধ্য দিয়েই মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদকে কুর্ণিশ করার মন্ত্র দিয়ে গেছেন অগণিত ভক্ত-শ্রোতাদের। চলতি বছরের ৩০ আগস্ট চিরবিদায় নেন কিংবদন্তি এই শিল্পী। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। আব্দুল জব্বার কিডনি, হার্ট, প্রস্টেটসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। পরদিন বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হন আব্দুল জব্বার। বারী সিদ্দিকী উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুরকার, গীতিকার, বংশীবাদক ও সঙ্গীতশিল্পী বারী সিদ্দিকী রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ২৪ নভেম্বর। দুটি কিডনিই অকার্যকর ছিল। তিনি বহুমূত্র রোগেও ভুগছিলেন। পরদিন বারী সিদ্দিকীর বাউল বাড়ি নেত্রকোনার চল্লিশা বাজারে তাকে দাফন করা হয়। তার কণ্ঠের জাদু আর মমতাশ্রয়ী বাঁশির সুরে ভেসেছেন অগণিত দর্শক-শ্রোতা। মিজু আহমেদ চলতি বছরের ২৭ মার্চ শুটিং করতে ঢাকা থেকে দিনাজপুর যাত্রাপথে ট্রেনে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান চলচ্চিত্রের গুণী অভিনেতা মিজু আহমেদ। তিনি আহমেদ ইলিয়াস ভুঁইয়ার পরিচালনায় ‘মানুষ কেন অমানুষ’ নামের একটি ছবির শুটিং করতে দিনাজপুর যাচ্ছিলেন। কয়েক দফায় জানাজা শেষে পরদিন তার মরদেহ কুষ্টিয়া জেলার কোটপাড়ায় নিজ গ্রামে দাফন করা হয়। জননেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর একদিনের ব্যবধানে চলে গেছেন বঙ্গবন্ধুর আরেক সহযোগী মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক। কয়েকদিনের মধ্যে ১৯ ডিসেম্বর তালিকায় যোগ হয় আরেক প্রবীণ নেতা সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা আহমেদের নাম। এ বছরই রাজনীতি হারিয়েছে প্রবীণ রাজনৈতিক এম কে আনোয়ারকে। রাজনীতিসহ দেশের শিল্পাঙ্গন হারুনুর রশিদ খান মুন্নুকে হারিয়েছে। শিল্প-উদ্যোক্তা এস এম নজরুল ইসলাম মারা গেছেন বছরের একেবারে শেষদিকে এসে। জীবদ্দশায় নিজ ক্ষেত্রে দেশের জন্য দিগন্তবিস্তৃত অবদান রেখে গেছেন কীর্তিমান গুণীজনরা। সময়ের আবর্তে বারবার তাদের স্বীকৃতি দিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App