×

বিনোদন

করোনার শঙ্কা নিয়েই চলছে লালন স্মরণোৎসব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২০, ১২:২৮ পিএম

করোনার শঙ্কা নিয়েই চলছে লালন স্মরণোৎসব

লালন স্মরণোৎসব। ছবি: ভোরের কাগজ।

করোনার শঙ্কা নিয়েই চলছে লালন স্মরণোৎসব

লালন স্মরণোৎসব গান পরিবেশন করা হচ্ছে। ছবি: ভোরের কাগজ।

দেশে যখন প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের খবর প্রকাশ হয়। দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে করোনা আতঙ্ক। জনসমাগম এড়াতে খোদ রাষ্ট্রীয়ভাবে মুজিব বর্ষের মূল অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়। ঠিক তখন কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় উদ্বোধন করা হয় তিনদিনের লালন স্মরণোৎসব। লালনের আখড়ায় দোলপূর্ণিমার এ উৎসবে যথারীতি বিদেশিরাও যোগ দিয়েছেন। দেশি-বিদেশি হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে এখন মুখোরিত ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ি। জনসমাগমের কারণে সেখান থেকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।

রোববার (৮ মার্চ) দুপুরে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) বাংলাদেশে তিনজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানায়। তিনজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার খবর তাৎক্ষণিক ছড়িয়ে পড়ার পর সারা দেশে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় ব্যাপক তোড়জোড়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে জরুরি বৈঠক ডেকে আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে পূর্বঘোষিত মুজিব বর্ষের মূল অনুষ্ঠান স্থগিত করেন। ওই বৈঠকে মুজিব বর্ষের অন্যান্য কর্মসূচিও পুনর্বিন্যাস করে স্বল্প পরিসরে উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। রোববার সন্ধ্যায় সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে জনসমাগম এড়াতে খোদ রাষ্ট্রের স্থপতির জন্মশতউৎসব যখন স্থগিত করা হয়, ঠিক সেই সময় কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনে উদ্বোধন করা হয় তিনদিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে. এম খালিদ, এমপি প্রধান অতিথি থেকে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন।

[caption id="attachment_207933" align="aligncenter" width="720"] লালন স্মরণোৎসব গান পরিবেশন করা হচ্ছে। ছবি: ভোরের কাগজ।[/caption]

এদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে শুধুমাত্র জনসমাগম এড়ানোর জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠান কর্মসূচিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হলেও লালন স্মরণোৎসব এখনো অব্যাহত রয়েছে। সোমবার (৯ মার্চ) এ উৎসবের দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার (১০ মার্চ) শেষ হবে তিনদিনের এই দোলপূর্ণিমা উৎসব। মুজিব বর্ষের মূল অনুষ্ঠান স্থগিত করার সরকারি সিদ্ধান্তের পর লালনের এই অনুষ্ঠানও স্থগিত করা হতে পারে বলে অনেকে ধারণা করেছিলেন। বাউল সম্রাট লালন শাহ ভক্তদের নিয়ে যেমন শুধুমাত্র দোলপূর্ণিমার আয়োজনে বসতেন, এবারের অনুষ্ঠানটিও তেমনিভাবে একদিনের (দোলপূর্ণিমা) মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখার দাবি ছিল সচেতন মহলের। কিন্তু তা মানা হয়নি।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার লালন ভক্ত-অনুসারীরা সমবেত হয়েছেন আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গণে। অন্যান্য বারের মতো এবারও যথারীতি এসেছেন বিদেশিরাও। এসব বিদেশিদের অবাধে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে লালন মেলায়। যদিও এই উৎসবে পূর্বের তুলনায় এবার দর্শনার্থী সমাগম অপেক্ষাকৃত কম। তবে এখানে করোনা ভাইরাস শনাক্তকারী থার্মা স্ক্যানার নেই বলে জানা যায়।

করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় আতঙ্কিত না হয়ে সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে নিয়মিত ঘোষণা আসছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সচেতনতামূলক পোস্ট করা হচ্ছে। অনেকে ব্যক্তিগতভাবেও জনস্বার্থে এসব পোস্ট শেয়ার করছেন। তবু মানুষের মাঝে আতঙ্ক ও উদ্বেগ বিরাজ করছে।

কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার এই স্মরণোৎসবকে ঘিরে গড়ে ওঠা লালন মেলা এবং একই সাথে কুষ্টিয়া শহরে চলমান বাণিজ্য মেলায় বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ে এমন এক ভীতিকর পরিস্থিতিতে জনসমাগমের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হয়ে ওঠা এ ধরনের মেলা আপাতত বন্ধের যৌক্তক দাবি উঠেছে সচেতন মহল থেকে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App