×

বিনোদন

গানের জন্য ঘর ছাড়েন জেমস

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৩, ১১:২৯ এএম

গানের জন্য ঘর ছাড়েন জেমস

ছবি: সংগৃহীত

গানের জন্য ঘর ছাড়েন জেমস
বাংলা ব্যান্ড সংগীতের জীবন্ত কিংবদন্তি জেমসের জন্মদিন আজ। ১৯৬৪ সালের ২ অক্টোবর নওগাঁ জেলায় জন্মগ্রহণ করেছেন তিনি। তবে তিনি বেড়ে ওঠেন চট্টগ্রামে। তার বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা, যিনি পরবর্তীতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সঙ্গীত জেমসের পছন্দের হলেও তার পরিবার তা পছন্দ করতেন না। গানের জন্য বাবার সঙ্গে অভিমান করে ঘর ছাড়েন তিনি কিশোর বয়সে। চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিং নামক একটি বোর্ডিং-এ তিনি থাকতে শুরু করেন। সেখানে থেকেই তার সঙ্গীতের ক্যারিয়ার শুরু হয়। এহসান এলাহী ফানটি ও কিছু বন্ধুদের নিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ফিলিংস নামক একটি ব্যান্ড এবং ব্যান্ডের প্রধান গিটারিস্ট ও কন্ঠদাতা হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন। চট্টগ্রাম থেকে শুরু হওয়া ব্যান্ড দল ফিলিংস এর মাধ্যমে তিনি প্রথমে খ্যাতি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি এহসান এলাহী ফানটিকে নিয়ে নগর বাউল নামে ব্যান্ড দল গঠন করেন। তিনি নগর বাউল এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। বাংলা ভাষায় তিনিই প্রথম সাইকিডেলিক রক শুরু করেন। গিটার বাজানোতেও তিনি দারুণ পটু। তিনি নগরবাউল ব্যান্ডের মূল ভোকাল ও গিটারিষ্ট হলেও তিনি মূলত তার সলো ক্যারিয়ারকেই বেশি গুরত্ব দেন। অনেক গীতিকার তার জন্য সঙ্গীত রচনা করেছেন। যাদের মধ্যে কবি শামসুর রাহমান, প্রিন্স মাহমুদ, শিবলি উল্লেখযোগ্য। কর্মজীবনের প্রথম দিকে তিনি জিম মরিসন, মার্ক নফলার এবং এরিক ক্লাপটনের মত সঙ্গীত শিল্পীদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন। ১৯৮৭ সালে ফিলিংস ব্যান্ডের সাথে তার প্রথম অ্যালবাম “স্টেশন রোড” মুক্তি পায়। ১৯৮৮ সালে মুক্তি পায় তার প্রথম একক অ্যালবাম অনন্যা। পরবর্তীতে তিনি ফিলিংস ব্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম দেন “নগর বাউল”। বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতে কাজ করার কারণে পশ্চিম বঙ্গেও খুব জনপ্রিয় ছিলেন জেমস। সেই সূত্রে ২০০৪ সালে বাঙালি সঙ্গীত পরিচালক প্রিতমের সাথে মিলিত হন তিনি। ২০০৫ সালে বলিউডের গ্যাংস্টার নামক একটি চলচ্চিত্রে তিনি প্লেব্যাক করেন। চলচ্চিত্রে তার গাওয়া “ভিগি ভিগি” গানটি ব্যপক জনপ্রিয়তা পায় এবং এক মাসেরও বেশি সময় তা বলিউড টপচার্টের শীর্ষে ছিল।। ২০০৬ সালে তিনি ও লামহে নামক চলচ্চিত্রে “চল চলে” গানে কন্ঠ্য দেন। ২০০৭ সালে তিনি লাইফ ইন এ মেট্রো চলচ্চিত্রে আবারও প্লেব্যাক করেন। চলচ্চিত্রে তার গাওয়া গান দুইটি হল রিশতে এবং আলবিদা (রিপ্রাইস)। সর্বশেষ হিন্দি চলচ্চিত্রে তিনি প্লেব্যাক করেছেন ওয়ার্নিং নামক চলচ্চিত্রে। তার গাওয়া বেবাসি গানটি মুক্তি পায় ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে। ২০০০ সালের প্রথম দিকে জেমস পেপসির একটি বিজ্ঞাপন চিত্রে অংশগ্রহণ করেন। এটিই ছিল তার কাজ করা প্রথম বিজ্ঞাপন চিত্র। এই বিজ্ঞাপনটি বাংলাদেশ এবং পশ্চিম বঙ্গে প্রচার করা হয়। এরপর তিনি ২০১১ সালে এনার্জি ড্রিংক ব্ল্যাক হর্সের বিজ্ঞাপনে কাজ করেন। বলিউড চলচ্চিত্র লাইফ ইন এ মেট্রোর কিছু অংশে জেমসকে দেখা যায়। যেখানে তিনি একটি ব্যান্ডের সদস্য চরিত্র কিছু অভিনয় করেন। ২০১৩ সালে ওয়ার্নিং চলচ্চিত্রের বেবাসি গানের ভিডিও চিত্রেও কাজ করেন জেমস। সেখানে তিনি নিজের গাওয়া গানের সাথে ঠোঁট মিলিয়েছেন। বাংলা চলচ্চিত্রের গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন জেমস। দেশ: দ্য লিডার, সত্তা সিনেমার জন্য গান করে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। নয়ের দশকের পুরোটা সময় তরুণদের কণ্ঠে শোনা যেত জেমসের বিখ্যাত সব গান। সুপারহিট সেই গানগুলো আজও মুগ্ধতা ছড়ায় চারপাশে। গায়ক জেমসের জনপ্রিয়তা দেখে যেতে পারেনি তার বাবা- মা। ব্যথিত হৃদয়ে শত বার তাই গানের মধ্য দিয়েই শিল্পী খুঁজেছেন তার প্রিয়জনদের। গায়কের গাওয়া ‘মা’ ও ‘বাবা’ শিরোনামের গান দুটি তারই প্রমাণ। অপূর্ণতার চাদরে মোড়ানো জেমস নিজেকে আড়ালে রাখতেই ভালোবাসেন। জেমসের উল্লেখযোগ্য আরো কিছু জনপ্রিয় গান হলো- দুষ্টু ছেলের দল, বিজলি, বন্ধু আসবে বহুদিন পরে, তোমার দেখা নাই, আমি তোমাদেরই লোক, জনতা এক্সপ্রেস, তুফান, এত কষ্ট, আমি তোর মনের মতো হতে পারলাম নারে, তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম, জেল থেকে আমি বলছি, ফুল নেব না অশ্রু নিব বন্ধু, লিখতে পারি না কোনো গান আজ তুমি ছাড়া ইত্যাদি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App