প্রাচ্যনটের মঞ্চে রবীন্দ্রনাথের ‘অচলায়তন’
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:৫৭ পিএম
ছবি: ভোরের কাগজ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ‘অচলায়তন’ নাটকে অযৌক্তিক অভ্যাস ও বিশ্বাসবশত চলে আসা আচারসর্বস্বতাকে আঘাত করেছেন ও জগতের সবকিছুকে জ্ঞান, কর্ম, ভক্তির সঙ্গে গ্রহণের কথা বলেছেন। নাটকের দল প্রাচ্যনাট রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই বিখ্যাত নাটকটি মঞ্চে নিয়ে এসেছে। তবে তারা নাটকটিতে নারীকে সমাজে নানা কুসংস্কার ও বিধি নিষেধে আবদ্ধ রাখার বিষয়টিকে মূল বিষয় করে তোলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মহিলা সমিতি মঞ্চে আলী যাকের নতুনের উৎসবে প্রথমবারের মতো মঞ্চস্থ হলো নাটকটি। নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন আজাদ আবুল কালাম।
নির্দেশক আজাদ আবুল কালাম জানান, অচলায়তন বিদ্যাপীঠকে আমরা কল্পনা করেছি একটি বালিকা বা নারী শিক্ষাগৃহ হিসেবে। আমাদের মত পশ্চাৎপদ এবং ধর্মীয় ও সামাজিক চিন্তায় অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নারী। নারীকে কুসংস্কার আর নানা বিধিনিষেধের মধ্যে আটকে রাখার নানান ষড়যন্ত্র বিদ্যমান এবং কখনো কখনো সেই ষড়যন্ত্রে নারী নিজেই যেনো প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।
নাটকে এসেছে- বহুদিন ধরে চলে আসা প্রথাকে কঠোর নিয়মের আবদ্ধে পালন করতে গিয়ে সময়ের আবর্তনে অচলায়তন বিদ্যায়তনের কোনো পরিবর্তন হয় না। এখানকার বিদ্যার্থীরাও কোনো প্রশ্ন ছাড়াই তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া যাবতীয় নিয়ম ও অনুশাসন মেনে চলে। অচলায়তনের বাইরের জগতের সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই, এমনকি যোগাযোগ করার বিন্দুমাত্র অগ্রাহ প্রকাশ পাওয়াটাও তাদের জন্য ‘মহাপাপ’ এর নামান্তর।
এই বিদ্যায়তনের দুই শিক্ষার্থী- পঞ্চক ও মহাপঞ্চক- তাদের জীবনদর্শন বিপরীত। এই দুই ব্যক্তির মধ্যকার যে ইচ্ছার দ্বন্দ্ব তা আরো দৃঢ়ভাবে প্রকাশিত হয় যখন অচলায়তনে একটি ছোট ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুধুমাত্র নিয়মতান্ত্রিকতাকে অটুট রাখার স্বার্থে অনেক বড় বড় সিদ্ধান্ত নেয়া হতে থাকে। এরই মধ্যে উপস্থিত হন গুরু বা দাদাঠাকুর যিনি প্রথমবারের মতো অচলায়তনের বন্ধ দ্বার ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেন। বাইরের বাস্তব জগৎ ও সেই জগতের মানুষদের সঙ্গে অচলায়তনের বিদ্যার্থীদের পরিচয় ঘটে।
বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন:
পঞ্চক: সানজিদা প্রীতি; মহাপঞ্চক: সাখাওয়াত হোসেন রেজভী ও ফরহাদ হামিদ; আচার্য: চেতনা রহমান ভাষা; উপাধ্যায়: সাহানা রহমান সুমি ও পারভীন পারুম; সুভদ: সুপ্তি দাস চৈতি; সঞ্জীব: নাহিদা আক্তার (আখি); জয়োত্তম: ডায়না ম্যারেলিন চৌধুরী; বিশ্বম্ভর: স্বাতী ভদ্র; রাজা মন্থরগুপ্ত: জাহাঙ্গীর আলম ও জগন্ময় পাল; গুরু বা দাদাঠাকুর বা গোঁসাই: প্রদ্যুৎ কুমার ঘোষ, একেএম ইতমান; দর্ভক: ফরহাদ আহমেদ শামীম, শর্মী আক্তার, রবি বান তমাল মৌলিক, নানজিবা শৈলী, সারাহ জাবিন অদিতি; অচলায়তনের ছাত্রী: সাবরিনা রহমান ঊষা, মৃত্তিকা জাতির, সারাহ জাবিন অদিতি, নানজিবা শৈলী, ঊর্মি সাহা রায়, শর্মী আক্তার; শোণপাংশু: অদ্রী জা আমিন, একেএম ইতমাম, আরিফুল রুবেল, উচ্ছ্বাস তালুকদার, রানা নাভেদ, ইয়াদ খোরশিদ ঈশান, আবদুল্লাহ মুহাম্মদ সাকিব, রশ্মি খান, সুপ্তি দাস চৈতি, নাহিদা আক্তার (আখি), ডায়না ম্যারেলিন চৌধুরী, স্বাতী ভদ্র, ঊর্মি সাহা রায়।