×

বিনোদন

বাংলাদেশকে 'বাংলা খেয়াল'র পাশে থাকার অনুরোধ সুমনের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২২, ০৯:৫৮ পিএম

বাংলাদেশকে 'বাংলা খেয়াল'র পাশে থাকার অনুরোধ সুমনের

মঙ্গলবার বিকেল থেকেই সুমনের বাংলা খেয়াল শুনতে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনের সামনে ভিড় করতে থাকেন সঙ্গীত অনুরাগীরা। ছবি: ভোরের কাগজ

বাংলাদেশকে 'বাংলা খেয়াল'র পাশে থাকার অনুরোধ সুমনের
বাংলাদেশকে 'বাংলা খেয়াল'র পাশে থাকার অনুরোধ সুমনের
বাংলাদেশকে 'বাংলা খেয়াল'র পাশে থাকার অনুরোধ সুমনের

মঙ্গলবার বিকেল থেকেই সুমনের বাংলা খেয়াল শুনতে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনের সামনে ভিড় করতে থাকেন সঙ্গীত অনুরাগীরা। ছবি: ভোরের কাগজ

কথোপকথন আর বাংলা খেয়াল পরিবেশনায় মুগ্ধতা ছড়ালেন সুমন। বললেন, এখনো দেখতে পাই পায়রা ডাকাডাকি করছে, কাক উড়ছে। তাদের তো কেউ থামাতে পারি নি। সেই দৃশ্য দেখার জন্য আমি বেঁচে আছি। আর বেঁচে আছি বাংলা ভাষায় খেয়ালের জন্য।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিকেল থেকেই সুমনের বাংলা খেয়াল শুনতে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনের সামনে ভিড় করতে থাকেন সঙ্গীত অনুরাগীরা। ৩টা ৪৫ মিনিটে প্রবেশদ্বার খুলে দিলে দর্শক প্রবেশ করেন মিলনায়তনে।

বিকেল সাড়ে ৪টায় মঞ্চে আসেন কবীর সুমন। এরপর শুরু করেন গল্প-আড্ডা, আর বাংলা খেয়াল। সুমন গেয়ে উঠেন, এই নাগরিক জীবন আর নাগরিক মন/ দিন ফুরিয়ে গেছে সঙ্গীতায়োজন।

ইমন রাগ, রাগ দুর্গা, পুরবী ঠাঁটে একে একে পরিবেশন করেন এ মোহ আবরণ খুলে দাও, দাঁড়িয়ে আছো তুমি আমার গানের ওপারে সেই যে ছোঁয়া সন্ধ্যার বাঁকে।

বাংলা খেয়াল শোনানোর ফাঁকে কথায়-আলাপে স্মরণ করেন সত্যকিঙ্কর বন্দোপাধ্যায় এবং বাংলাদেশের প্রয়াত সঙ্গীতগুরু আজাদ রহমানকে। সুমন বলেন, সত্য কিঙ্কর বন্দোপাধ্যায়ের পর আজাদ রহমান একের পর এক বাংলা খেয়ালের বন্দিশ রচনা করেছেন। তার সাথে আমার আলাপ হলো না। তার মৃত্যুর পর আজাদ রহমানকে নিয়ে রাগ তৈরি করেছি।

পরে আজাদ রাগ গেয়ে শোনান, যার কথা অস্তাচলে শেষটাই/ যার শুরু পূর্ব রাগে/ সাগর পেরিয়ে তার পাওয়া/সারা সাত জাগে। সুমন যখন মঞ্চে খেয়াল পরিবেশন করছিলেন, তখন তার পাশেই দুটি ব্যানার দেখা যায়। যার একটি ছিল সত্যকিঙ্কর বন্দোপাধ্যায়ের এবং অন্যটি আজাদ রহমানের।

আমাদের ক্লাসিক্যাল মিউজিক মানুষের কাছে যায় নি। মন্তব্য করে সুমন বলেন, এখানে যারা আছেন, তারা কতজন মঞ্চ বসে খেয়াল শুনেছেন? একটু হাত তুলুন। তখন কিছু সংখ্যক দর্শক হাত তোলার পর সুমন বলেন, আমি নিজেও অনেক দিন খেয়াল শুনতে যাই নি। কারণ খেয়াল সম্পর্কে একটা ভয় ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আনন্দ নিয়ে গাইতে হবে। শুনতে হবে।

সুমন গেয়ে শোনান- বনের চামেলী ফিরে আয়, নাচে সখিগণ কুঞ্জে, কিছু নেই তবু আছে একা নীল তারা এবং সবশেষে ডেকেছি কত সাড়া দিলে না গেয়ে শেষ করেন বাংলা খেয়াল অনুষ্ঠান।

পরিবেশনার ফাঁকে নিজের খেয়াল শেখার অভিজ্ঞতা জানিয়ে সুমন বলেন, ছোটবেলায় আমি হিন্দুস্তানী খেয়াল শিখেছি। যা বুঝতে পারি নি, মাস্টার মশাইয়ের কাছে আমি জানতে চেয়েছি, তিনি যেটা বুঝতে পেরেছেন। আমাকে বলেছেন। যেটা উনিও বুঝতেন না, সেটি বলতেন যে আমি বুঝতে পারছি না। তখন মাস্টার মশাইকে বলতাম, আমার মাতৃভাষা বাংলায় কেন খেয়াল নাই? তারও অনেক দিন পর আমি বাংলায় খেয়াল রচনা করতে পেরেছি, কিন্তু আমার মাস্টার মশাইকে আর শোনানো হয় নি। উনি চলে গিয়েছেন।

গেয়েছেন এবং ফাঁকে ফাঁকে বলেছেন, যেন আড্ডায় বসে গান পরিবেশন করছেন সুমন। পরিবেশনার পর পর দর্শকও করতালিতে জানাচ্ছেন প্রতিক্রিয়া। খেয়াল শোনাতে পারবেন বলেই এই আয়োজনটিতে আসতে রাজি হয়েছিলেন উল্লেখ করে কবীর সুমন বলেন, আরিফ যখন আমার সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ করে, তখনই বলেছিলাম। বাংলা খেয়াল কিন্তু রাখতে হবে। নইলে যাবো না।

বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ করে সুমন বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। তাই বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ বাংলা খেয়াল'র পাশে থাকবেন। আমাকে যদি প্রয়োজন হয়, ডাকলেই আমি সব সময় থাকবো। আমার খুব আশা বাংলাদেশ সরকার বাংলা খেয়াল নিয়ে কিছু করবে। যদি বাংলাদেশ সরকার কিছু করে, তবে আমার খুব আনন্দ হবে। এই আনন্দ নিয়ে মরতে দিন বুড়োটাকে।

তিন দিন গান পরিবেশনের জন্য এক সপ্তাহের সফরে ঢাকায় অবস্থান করছেন কবীর সুমন। গত শুক্রবার আধুনিক বাংলা গান পরিবেশন করেন, আর মঙ্গলবার পরিবেশন করেন বাংলা খেয়াল। আগামি শুক্রবার ফের আধুনিক বাংলা গান শোনাবেন সুমন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App