×

শিক্ষা

ফেসবুকে পোস্ট

নিহত আবু সাঈদ ছাত্রশিবিরের নেতা ছিলেন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

 নিহত আবু সাঈদ  ছাত্রশিবিরের  নেতা ছিলেন

আবু সাঈদ

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গুলিতে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছিল। আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আলোচনায় আসেন, বাহবাও পান তিনি। কিন্তু তার ওই আন্দোলনের আড়ালে ছিল আরেক রূপ- যা প্রকাশ করেছেন তার সতীর্থরা। সেই আবু সাঈদকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা দাবি করা হয়েছে। খোমেনি এহসান নামে একটি ফেসবুক পেজে এমন দাবি করা হয়।

এই ফেসবুক পেজে বলা হয়, ‘এবারের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ঐতিহাসিক দিক হলো ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা ব্যাপকহারে সর্বত্র অংশগ্রহণ করেছে। বিশেষ করে রংপুরের আবু সাঈদের শাহাদাত নিয়ে গোটা দুনিয়ায় যে তোলপাড় চলছে, এই শহীদও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা ছিল।’

পেইজটিতে আরো লেখা হয়, ‘আমার পর্যবেক্ষণ গত ১৬ বছরের নির্যাতন নিপীড়নের সময় শিশু থেকে কিশোর তরুণে পরিণত হওয়া শিবিরের লোকেরা একটা সোনালী প্রজন্ম হিসাবে গড়ে উঠেছে। তারা যেভাবে এবারের আন্দোলনে শামিল হয়েছে তা গোটা জাতির জন্য বার্তা। বিশেষ করে ইসলামী দলগুলার নানা বিতর্কিত অবস্থানের মধ্যে জেনারেল শিক্ষিত ও আলীয়া মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিবির কর্মীরা যেভাবে ছাত্র-জনতার ভ্যানগার্ড হয়েছে তাতে করে ইসলামী রাজনীতি নতুন জীবন লাভ করেছে। শিবির বাংলাদেশের মূলধারার রাজনীতির এক নিয়ামক শক্তি। আমি শিবিরের বর্তমান প্রজন্মের মেধার জোরটা ভালোমতই বুঝতে পারছি।’ ‘... কিন্তু চলমান আন্দোলনে শামিল লোকজন সেরা প্রতিষ্ঠানগুলোর, তাদের ব্যক্তিত্ব, বুদ্ধিমত্তা ও সাহস দেখে রীতিমতো শিহরিত হচ্ছি। যেন কৈশোরের সেই মুগ্ধতা ফিরে আসছে। আমার বিশ্বাস ছাত্র আন্দোলন দমন করতে শিবিরের ওপর সরকার যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ছে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ কোনো পরীক্ষা, বাতিল ও তাগত হয়তো ভাববে নির্যাতন করায় শিবির ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বাস্তবতা হলো জান্নাতে শহীদ নেতাদের সঙ্গে শহীদ শিবির নেতাদের সাক্ষাৎ ঘটবে আর জমিনে আমরা এক বিশালসংখ্যক ইসলামী লিডারশিপ পেতে যাচ্ছি, বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতির নেতৃত্বশূন্যতা খুব শিগগির কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ।’

এছাড়া নিহত আবু সাঈদের ফেসবুকে ইসলামী ছাত্র শিবিরের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পোস্ট করতে দেখেন অনেকে। এমনকি জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে আবেগঘন পোস্টও দেন সাঈদ।

সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন আবু সাঈদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। মা-বাবার ৯ সন্তানের মধ্যে একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সন্তান ছিলেন আবু সাঈদ। গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন পার্ক মোড়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের তুমুল সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় মিছিল-সংঘর্ষের সম্মুখে থেকে লাঠি হাতে নিয়ে অন্যদের সঙ্গে পুলিশের দিকে বারবার তেড়ে যায় এবং বুক পেতে দেয় আবু সাঈদ। একপর্যায়ে তার বুকে একাধিক গুলি লাগলে মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর আন্দোলনের উত্তাপ আরো ছড়িয়ে পড়ে।

ওয়াকিবাল মহল মনে করছেন, আবু সাঈদের মৃত্যুকে ঘিরে শুরু হয় দেশে আরেক রাজনীতি। আন্দোলনে সমর্থন ও সহযোগিতা দেয়া সরকারবিরোধী পক্ষ-জামায়াত-বিএনপি ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে। সাধারণ শিক্ষার্থী বলে তার প্রতি সহমর্মিতা দেখানো হয়। সুপরিকল্পিত ও সংঘবদ্ধভাবে তারা কোটাবিরোধী আন্দোলনকে রাজনৈতিক আন্দোলনে রূপান্তরের চেষ্টা করে। আর এতে আবু সাঈদদের মতো ঘাপটি মেরে থাকা দুর্বৃত্তদের সর্বাত্মক কাজে লাগানো হয় ধ্বংসাত্মত কার্যকলাপে। সাঈদের মৃত্যুর পরে বেরোবির অধ্যাপকদের একাংশ দাবি তুলেছিলেন, প্ররোচনা বা সংঘাতের পরিস্থিতি ছাড়াই সাঈদের ওপর রবার বুলেট ছুড়েছিল পুলিশ।

আবু সাঈদের মৃত্যুর পরদিন ১৭ জুলাই রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তাজহাট থানায় এ ব্যাপারে একটি মামলা করে পুলিশ। মামলার বিবরণে বলা হয়, আসামিরা উচ্ছৃঙ্খল ২-৩ হাজার আন্দোলনকারী ছাত্র নামধারী দুর্বৃত্ত। তাদের সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির সমর্থিত নেতাকর্মীও রয়েছে। পুলিশ সদস্যদের মারপিট করে তাদের মারাত্মক আহত করে ও সড়ক অবরোধে থাকা উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রদের মধ্য হতে বেশ কিছু ছাত্রবেশী সুবিধাভোগী রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনরত দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন দিক থেকে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল ও তাদের নিকটে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র হতে এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশও এপিসি গাড়ির মধ্য হতে ১৬৯ রাউন্ড রাবার বুলেট ফায়ার করে। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিভিন্ন দিক থেকে আন্দোলনকারীদের ছোড়া গোলাগুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের একপর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীকে রাস্তায় পড়ে যেতে দেখা যায়। তখন তার সহপাঠীরা তাকে ধরাধরি করে জরুরি চিকিৎসার জন্য বিকাল ৩টা ৫ মিনিটে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত ছাত্রের নাম আবু সাঈদ (২৩)।

টাইমলাইন: কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

গৌরনদীতে মহাসড়কের জমি দখল করে বিএনপি নেতার অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ

গৌরনদীতে মহাসড়কের জমি দখল করে বিএনপি নেতার অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ

বাড়ছে নদীর পানি, প্লাবিত হতে পারে যে ৮ জেলার নিম্নাঞ্চল

বাড়ছে নদীর পানি, প্লাবিত হতে পারে যে ৮ জেলার নিম্নাঞ্চল

শেখ হাসিনার ক্ষমতার ভিত কাঁপিয়ে দেওয়া সেই সাংবাদিক এখন বাংলাদেশে

শেখ হাসিনার ক্ষমতার ভিত কাঁপিয়ে দেওয়া সেই সাংবাদিক এখন বাংলাদেশে

মৌলভীবাজারে ৭ থানার ওসিকে একযোগে বদলি

মৌলভীবাজারে ৭ থানার ওসিকে একযোগে বদলি

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App