×

শিক্ষা

সিলেবাসে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা শিক্ষা অন্তর্ভুক্তের দাবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৯ পিএম

সিলেবাসে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা শিক্ষা অন্তর্ভুক্তের দাবি

রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের (বিএনপিস) আয়োজনে জাতীয় এসআরএইচআর কনফারেন্স ও যুব সম্মেলন-২০২৩ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তারা। ছবি: ভোরের কাগজ

সমাজের মূল ধারায় নারীদের সম্পৃক্ত করতে স্কুলে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে শিক্ষা দেয়া দরকার। তাই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সিলেবাসে যৌন ও প্রজনন শিক্ষা অন্তর্ভুক্তের দাবি তোলা হয়েছে। জাতীয় এসআরএইচআর কনফারেন্স ও যুব সম্মেলন-২৩ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ দাবি তোলা হয়। ‘যুব ও কিশোর কিশোরীদের জন্য নিশ্চিত হোক যৌন প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিস) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে উদ্বোধক ছিলেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের চেয়ারপার্সন শহীদজায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিবিএইসসি ট্রাস্ট ও বিএমআরসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। বিএনপিএস নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সভাপতিত্বে ও বিএনপিএস ডেপুটি ডিরেক্টর শাহনাজ সুমীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ফাস্ট সেক্রেটারী ও টিম লিডার ইনক্লুসিভ গর্ভানেন্স এনজিকো লরেনজো, তিন পার্বত্য চট্টগ্রামের ডিডিএফপি ও এডিসিসি ডা. অংচালু মারমা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ফারিহা হাসিন, নেদারল্যান্ডস এম্বেসির পলিসি এডভাইজার, সোস্যাল সেক্টর মুশফিকা জামান সাতিয়ার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কেএমকেএস এর নির্বাহী পরিচালক শেফালিকা ত্রিপুরা ও সিমাভি বাংলাদেশের এমএন্ডই অফিসার তুহীন সরকার। সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, স্কুলে সবচেয়ে বেশি যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে শিক্ষা দেয়া দরকার। কিন্তু এসব বিষয়ে পাঠদান করাতে চান না শিক্ষকরা। আমাদের সমাজ ও পরিবারের মধ্যে একটা ট্যাবু আছে। তারাও মেয়েদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে আলোচনা করতে চায় না। এটাও একটা ধরনের চ্যালেঞ্জ। এখনো এই দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টায়নি। আমাদের দায়িত্ব নারীদের যৌন ও স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে সচেতন করা। দেশের উত্তরবঙ্গ অঞ্চল এখনো অবহেলিত, এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে উত্তরবঙ্গ এখনও পিছিয়ে। মঙ্গা না থাকলেও গরিব আছে। তাই রংপুর, কুড়িগ্রাম এসব এলাকায় নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ হওয়া উচিত। শ্যামলী নাসরিন বলেন, নারীরা তাদের স্বাস্থ্য নিয়ে আগে যেসব কথা উচ্চারণ করতে পারত না, এখন সে কথা নারীরা স্টেজে দাড়িয়ে কথা বলছেন। নারীদের আরো জেগে উঠতে হবে। আরও বেশি স্বাস্থ্য অধিকার নিয়ে কথা বলতে হবে। রোকেয়া কবির বলেন, সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের মুখস্থ বিদ্যার কারণে এগুলোর (নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য) দায়িত্ব নেন না। নারীর সমান অধিকারের কথা বললে তারা পশ্চিমা সংস্কৃতির দোহাই দেয়া হয়। যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের পরিবারগুলোতে এখনো নারীদের মাসিক ও যৌন স্বাস্থ্য নিয়ে কোন শিক্ষা দেয়া হয় না। তাই সারাদেশে স্থানীয় পর্যায়ে কমিনিটি ক্লিনিক, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে নারীবান্ধব কর্ণার ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি। শেফালীকা ত্রিপুরা বলেন, নানা কুসংস্কারে কারণে এখন জরায়ু ও বেস্ট কান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। চিকিৎসা করাতে প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে। অনুষ্ঠানে জানানে হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে আওয়ার লাইফ আওয়ার হেলথ প্রকল্পের মাধ্যমে ১২ হাজার ছেলে-মেয়েদের কাছে নারী স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দেয়া গেছে। এ বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলতে তাদের মধ্যে ৩০০ ক্লাব তৈরি করা হয়েছে। আগামীতে সরকার ও সহযোগী রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা পেলে সারাদেশে নারীদের মাঝে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা বৃহৎ আকারে পৌঁছে দিতে পারবে বলে মনে করেন সংগঠনটি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App