×

শিক্ষা

জাতীয়করণ ইস্যু: বিটিএ’কে কড়া জবাব দিল স্বাশিপ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৩, ০৮:৪৬ পিএম

জাতীয়করণ ইস্যু: বিটিএ’কে কড়া জবাব দিল স্বাশিপ
জাতীয়করণের দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করেছে বলে মন্তব্য করেছে আরেক শিক্ষক সংগঠন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ)। এমনকি ব্যর্থ হচ্ছে বুঝতে পেরেই বিচিত্র প্রক্রিয়ায় শূন্য হাতে বাংলাদেশ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) তাদের আন্দোলনের ইতি টেনেছে বলে দাবি করেছে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ)। সোমবার (৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. মো. শাহজাহান আলম সাজু এ দাবি করেন। বিটিএকে কড়া জবাব দিয়ে স্বাশিপ চার দফা দাবি জানিয়েছে সরকারের প্রতি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে স্বাশিপ সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম সাজু বলেন, শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে সার্বিক বিষয়টি স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রথমেই অবহিত করা হয়। স্বাশিপ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে জাতীয়করণ প্রক্রিয়াটিকে লাইম লাইটে নিয়ে আসে এবং শিক্ষক সমাজ শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়। এসব কারণেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শিক্ষামন্ত্রী দুটি কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন। তারই আলোকে গত ১৯ জুলাই শিক্ষামন্ত্রী সব শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কথা সবাইকে অবহিত করেন এবং এ দাবিতে একটি সংগঠনের (বিটিএ) আন্দোলন প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। সংগঠনটির নেতারা সভায় শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান না করলেও সেখান থেকে বেরিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। স্বাশিপ সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, সমাবেশে তারা (বিটিএ নেতারা) শিক্ষামন্ত্রী এবং স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের নেতাদের বিরুদ্ধে কাল্পনিক অভিযোগ উত্থাপন করে অশিক্ষক সুলভ আচরণ করেন, যা সবাইকে হতবাক করেছে। একটি শিক্ষক সংগঠনের নেতারা শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে অশালীন ভাষা প্রয়োগ এবং স্বাশিপের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের ঘটনা দেশের শিক্ষক সমাজ ও দেশবাসীকে মর্মাহত করে। সংগঠনটি জাতীয়করণের দাবি পূরণ না করা পর্যন্ত রাজপথে অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দেয় এবং একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ না করা পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা দেয়ার পাশাপাশি রাজপথ না ছাড়ার ঘোষণা দেয়। যদিও কর্মসূচি ঘোষণাকারী সংগঠনটি কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিজেদের স্কুলেই ধর্মঘট পালন করতে পারেননি। শাহজাহান আলম সাজু বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধের পরও তারা তাদের আন্দোলনে অব্যাহত রাখেন। একপর্যায়ে তারা কাফনের কাপড় পরে শোকের মাস আগস্টে আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কিন্তু আন্দোলন ব্যর্থ হচ্ছে বুঝতে পেরে তারা (বিটিএ নেতারা) ইতিহাসে নজিরবিহীন এক বিচিত্র প্রক্রিয়ায় শূন্য হাতে আন্দোলন নাটকের ইতি টানেন, যা শিক্ষক সমাজকে হতাশ ও হতভম্ব করেছে। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রীসহ কর্তৃপক্ষের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়। একইসঙ্গে স্বাশিপ বিশ্বাস করে বর্তমান সরকার ও শিক্ষাবান্ধব প্রধানমন্ত্রীর পক্ষেই শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ সম্ভব। সংবাদ সম্মেলনে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের পক্ষ থেকে ৪ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। সেগুলো হলো- জাতীয়করণের সুষ্ঠু ও কার্যকর পরিকল্পনা, নীতি-নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পাদনে গঠিত দুটি কমিটির কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা। ইনডেক্সধারী, এনটিআরসিএ নিবন্ধনকৃত শিক্ষকদের শূন্য পদে বদলি বাস্তবায়নের জন্য অবিলম্বে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা। বর্তমান বাজেট থেকেই পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা প্রদান, সুনির্দিষ্ট হারে বাড়ি ভাড়া ও মেডিকেল ভাতা বৃদ্ধি করা। প্রধান শিক্ষকদের স্কেল বৈষম্য দূরীকরণ, সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন সমন্বয় সাধন, অনার্স-মাস্টার্স এবং স্বতন্ত্র এবতেদায়ি শিক্ষকদের এমপিও প্রদান। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি প্রফেসর আব্দুল মান্নান চৌধুরী, প্রফেসর সাজিদুল ইসলাম, সাইদুর রহমান পান্না, অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মুর্তজা, অধ্যক্ষ সলিমুল্লাহ সেলিম, অধ্যক্ষ মোকসেদুর রহমান, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, অধ্যাপক মিজানুর রহমান, মোশাররফ হোসেন, নাসরীন সুলতানা প্রমুখ। প্রসঙ্গত, জাতীয়করণ দাবিতে টানা ২১ দিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি করে বাংলাদেশ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ)। শিক্ষামন্ত্রী বারবার অনুরোধ জানালেও তারা ক্লাসে না ফিরে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App