×

শিক্ষা

হাওড় ভরাট করে সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসির আপত্তি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৩, ০৯:১৮ পিএম

হাওড় ভরাট করে সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসির আপত্তি

যে হাওড়ের জন্য বিখ্যাত সুনামগঞ্জ সেই হাওড় ভরাট করে সেখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করতে চাইছেন উপাচার্য আবু নঈম শেখ। এরইমধ্যে তিনি জেলার সকল সংসদ সদস্যকে বিষয়টি বোঝাতে পারলেও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) পারলেন না। তবু হাওড় ভরাট করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে এগিয়ে যাচ্ছেন এই উপাচার্য। ইউজিসি স্পষ্ট বলে দিয়েছে, হাওড় এলাকার বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রেখেই বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণ ও অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে।

জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু নঈম শেখ ভোরের কাগজকে বলেন, হাওড় ভরাট করে বিশ্ববিদ্যালয় হবে কিনা তা স্পষ্ট করে জানাননি। তিনি বলেন, হাওড়ের পাড়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় হবে। কিন্তু দেখার হাওড়ের পাড় কোথায় আছে-জানতে চাইলে তিনি উত্তর দিতে পারেননি। তারমতে, সুনামগঞ্জের ‘দেখার হাওড়ে’ ১ দশমিক ২৫ একর জমির ওপর এই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে। এতে ৪০ শতাংশ জমির ওপর ভবন তোলা হবে বাকি ৬০ শতাংশ জমি উন্মুক্ত থাকবে। তাতে হাওড়ের সৌন্দর্য নষ্ট হবে না।

প্রসঙ্গত, হাওড় ভরাট করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যদের ভুলভাল বুঝিয়ে তাদের অনুমতি নেন। এরফলে স্থানীয় সংসদ সদস্যরাও এ বিষয়ে কোনো প্রতিবাদ করছেন না। এদিকে, হাওর এলাকার বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রেখে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণ ও অবকাঠামো নির্মাণের আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

সোমবার (১৭ জুলাই) সকালে ইউজিসিতে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে এক পর্যালোচনা সভায় এ আহ্বান জানান কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর। তিনি একইসঙ্গে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, পরিবেশ ধ্বংস করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প করা যাবে না। অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণের ফলে হাওর ও উপকূলে বন্যা ও জলাবদ্ধতা বাড়ছে। কাজেই হাওর এলাকায় জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে পরিবেশ ও প্রকৃতির গতি-প্রকৃতিকে সবসময় মাথায় রাখতে হবে।

ইউজিসির এ সদস্য বলেন, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে আর্থ-সামাজিক প্রভাব বিবেচনায় নিতে হবে। এছাড়া জলাধার ভরাট না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সভায় সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবু নঈম শেখ, রেজিস্ট্রার জিএম শহিদুল আলম, ইউজিসির উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া, অতিরিক্ত পরিচালক শাহ্ মোহাম্মদ আমিনুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ২০২০ সালে ৪৭তম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বিল সংসদে পাস হয়। উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রসরমান বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং জাতীয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা বিশেষ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আধুনিক জ্ঞানচর্চা ও পঠন-পাঠনের সুযোগ সৃষ্টি ও সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App