×

শিক্ষা

রুম দখল নিয়ে ঢাবির হলে মারমারি; আহত ১০

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৩, ০২:১২ পিএম

রুম দখল নিয়ে ঢাবির হলে মারমারি; আহত ১০

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা’ সূর্যসেন হলে কক্ষ দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দেশীয় অস্ত্রের ব্যবহার করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। মারামারিতে দুই পক্ষের অন্তত ১০ জনের বেশি আহত হয়েছে।

শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হলের ২০৪ নম্বর রুমকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ ও মারামারির ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। আহতদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে যাওয়া দুইজন হলেন- জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের মো. সুজন (শয়ন গ্রুপ) ও যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের জাবের বিন আমিন।

পরবর্তীতে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত সূর্যসেন হলে এসে বিষয়টির মীমাংসা জন্য বসেন। পরে রাত পৌনে তিনটার দিকে দুই পক্ষের সাথে কথা বলে নিজেদের নেতাকর্মীদের রুমে ফিরে যেতে বলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাত ১১টা থেকে রুম দখল নিয়ে মহড়া দিচ্ছিলো হলের প্রেসিডেন্ট গ্রুপ (শয়নের অনুসারী)। পরে ১২টার পরে ২০৪ নং রুমে শয়নের অনুসারীরা এসে আবাসিক শিক্ষার্থী মোস্তফা ইকবার হৃদয় ও জাহিদ হাসানের (সৈকতের অনুসারী গ্রুপ) জিনিসপত্র রুম থেকে ফেলে দিয়ে বের হয়ে যেতে বলে। পরবর্তীতে দীর্ঘক্ষণ উত্তেজনা চলে এ নিয়ে। রাত সোয়া ১টার দিকে সৈকতের অনুসারীরা দলবদ্ধ হয়ে গিয়ে তাদের রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলে। এই সময় হলের অন্যদিক থেকে শয়নের গ্রুপের ৩০-৪০ জন নেতাকর্মীরা লাঠি, স্টাম্প ইত্যাদি দিয়ে আক্রমণ করে। এতে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। আহতদের মধ্যে দুইজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

সূর্যসেন হলে শয়নের গ্রুপের নেতৃত্ব দেন, মনির হোসেন, তুষার হোসেন, ওমর ফারুক। অন্যদিকে সৈকতের গ্রুপের নেতৃত্ব দেন আব্দুল্লাহ খান শৈশব ও যুবরাজ।

মারামারির পর হল গেইটে অবস্থান নেয় দুই পক্ষই। এক পক্ষ অপর পক্ষকে উদ্দেশ্য করে স্লোগান ও উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। পরে রাত পৌনে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত হলে এসে দুই পক্ষকে শান্ত করেন।

সৈকত অনুসারী নেতাকর্মীরা বলেন, ওরা কিছুদিন ধরেই আমাদের নিজেদের বরাদ্দ পাওয়া রুমগুলো দখলে নিতে চাচ্ছে। আজকেও ২০৪ নম্বর রুম দখল করতে আসে। রুম থেকে জিনিসপত্র ফেলে দেয়। পরে আমরা গিয়ে বাঁধা দিলে এক পর্যায়ে আমাদের উপর হামলা শুরু করে। আমরা অনেকেই আহত হয়েছি।

অন্যদিকে শয়নের অনুসারীরা জানান, হলে ওরা বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। ওরা আমাদের উপর হামলা চালায়। আমাদের কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছে।

সূর্যসেন হলের প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমি তখন হলে ছিলাম না। হাউজ টিউটরদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তাদের কক্ষে ফিরেছে। হলের সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, হলে গিয়ে হাউস টিউটরদের সঙ্গে কথা বলে ও ঘটনায় যারা পক্ষে-বিপক্ষে ছিল তাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে, শনিবার দিবাগত রাতে প্রায় একই সময়ে কক্ষ দখল নিয়ে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলেও সংঘর্ষে জড়ান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা। এ বিষয়ে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাবেদ হোসেন বলেন, রাতে তাদের নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি থেকে ঝামেলা হয়েছিল। ওখানে আমাদের হলের হাউস টিউটররা গিয়েছিলেন। ছাত্রদের সাথে কথা বলে রাতেই বিষয়টি মিটমাট করে দেওয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App