×

অর্থনীতি

সাবেক গভর্নর

অর্থ পাচারের ব্যাপারে সরকার এবং আইএমএফ নীরব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ মে ২০২৪, ০৫:৪৪ পিএম

অর্থ পাচারের ব্যাপারে সরকার এবং আইএমএফ নীরব

ছবি: ভোরের কাগজ

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দীন বলেছেন, সবাই স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছে। কিন্তু কেউ অনেক বেশি, আবার কেউ একেবারেই কম। আগের তুলনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অবক্ষয় হয়েছে, তার সাথে আমি একমত। কেন যেনো অর্থ পাচারের ব্যাপারে সরকার এবং ইন্টারন্যাশনাল মনিটরিং ফান্ড (আইএমএফ) নীরব। কিন্তু এটা দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

বৃহস্পতিবার (২ মে) ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামে (ইআর‌এফ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফরাসউদ্দীন বলেন, সাংবাদিকদের অবদান যারা বুঝে না তারা বাস্তববাদী নয়। এর আগেও ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছিলো। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এবারো হবে বলে আমার মনে হয় না।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশের ঋণ খেলাপি, কর খেলাপি এবং অর্থপাচার একই সূত্রে গাঁথা। ঋণ পুনঃতফসিল করার কারণে ব্যাংকে অর্থের টান পড়েছে। এর জন্য বন্ডের মাধ্যমে টাকা ছাপিয়ে অর্থ সরবরাহ করতে হচ্ছে। যার ফলে মূল্যস্ফীতি কমছে না। তাই শক্ত হাতে খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে। এই বিষয়গুলো নীতি নির্ধারকদের বোঝানোর মতো একটা লোক প্রয়োজন।

ঋণ খেলাপিদের বিষয়ে তিনি বলেন, খেলাপি ওয়ালারা যদি অনেক বড় হয়ে যায় তাহলে সমস্যা। ১০ হাজার টাকার কৃষি ঋণ নিয়ে খেলাপি হলে তাকে জেলে ঢোকাবো, কিন্তু ১০ হাজার কোটি টাকা খেলাপি হলে তাকে সালাম ঠুকবো, এটা হতে পারে না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে ঋণগুলো অবশ্যই আদায় করা উচিত।

মূল্যস্ফীতির বিষয়ে ফরাসউদ্দিন বলেন, কিছু অসাধু খাদ্য কর্মকর্তা ও মিল মালিক কারচুপি করছে। যার ফলে দেশে খাদ্যের দাম ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। তাই চাইলেও সরকার খাদ্য মূল্যস্ফীতি বা ফুড ইনফ্লেশন কমাতে পারছে না। এক্ষেত্রে সরকারের গুদামের মজুদ বাড়ানো এবং বিশেষ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দেশে স্বস্তি ফেরানোর পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক এই ব্যাংকার।

ধনী-গরিবের বৈষম্য আগেও ছিলো, এখনো রয়েছে। তবে ধনী ও গরিবের মধ্যে অর্থের পার্থক্য আগের তুলনায় বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি। এই বৈষম্য কমাতে শুধু অর্থনীতি নয়, রাজনৈতিক পদক্ষেপ প্রয়োজন।

একটি দাতা মুরুব্বির পরামর্শ নিয়ে ৯২ সালে স্বল্পমেয়াদী আমানত নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো সরকার। এটাই এখন ব্যাংকের বড় সমস্যা। এসব সমস্যার সমাধানের অনেক পথ রয়েছে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত একটি প্রক্রিয়া। তবে এটাই একমাত্র প্রক্রিয়া নয়, আরো বিকল্প রয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতের সার্বিক সমস্যার সমাধানে ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠন করারও প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মৃধা। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। এতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মরত সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App