×

অর্থনীতি

করজাল সম্প্রসারণের বিকল্প নেই: ডিসিসিআই সভাপতি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৩৩ পিএম

করজাল সম্প্রসারণের বিকল্প নেই: ডিসিসিআই সভাপতি

আগামী বাজেটে সহজ ও ব্যবসাবান্ধব আয়কর ব্যবস্থা, আয়কর ও ভ্যাটের আওতা বৃদ্ধি, কর ব্যবস্থার সম্পূর্ণ অটোমেশন, স্থানীয় শিল্পায়ন উৎসাহিতকরণ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণের উপর জোরারোপ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। 

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠানে আগামী অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভূক্তির জন্য ঢাকা চেম্বারের প্রস্তাবনা সমূহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের নিকট পেশ করেন ডিসিসিআইয়ের সভাপতি আশরাফ আহমেদ। ঢাকা চেম্বার, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের জন্য এনবিআরের নিকট আয়কর, মূসক ও শুল্ক সংক্রান্ত মোট ৪০টি প্রস্তাব পেশ করেছে। 

ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী দেশে টিনধারী রয়েছেন প্রায় ১ কোটি, যেখানে ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৩২ লাখ করদাতা রাজস্ব প্রদান করেছে, প্রত্যক্ষ কর বৃদ্ধির লক্ষে করজাল বাড়ানোর উপর জোরারোপ করেন। 

আরো পড়ুন: পদত্যাগ করলেন এনআরবি ব্যাংকের এমডি

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, আয়কর অধ্যাদেশের ৭০ ধারা মোতাবেক ব্যবসায়িক ক্ষতি কেবল ব্যবসা হতে আয়ের সাথে সমন্বয় করা যাবে, এ প্রসঙ্গে ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশের ৩৭ ধারা পুনর্বহালের সুপারিশ করেন, কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এতে করে ব্যবসায়ীদের উপর করের বোঝা কিছুটা হলেও লাঘব হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রভিডেন্ট তহবিল, গ্রাজুয়েটি তহবিল, সুপারএনুয়েশন তহবিল এবং পেনশন তহবিল হতে উদ্বুত আয়ের উপর সরকারি কর্মচারীদের অনুরূপ করমুক্ত ঘোষণা করার প্রস্তাব করেন আশরাফ আহমেদ। 

এছাড়াও বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধের ক্ষেত্রে আয়কর আইন অনুযায়ী উৎসে কর কর্তনযোগ্য হওয়ায় এ ধরনের ঋণের ব্যয় বৃদ্ধি পাবে এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ ও ঋণ প্রবাহ হ্রাস পাবে, এমতাবস্থায় তিনি বিদেশী ঋণের সুদ পরিশোধের ক্ষেত্রে উৎসে কর বাতিলের প্রস্তাব করেন। 

আশরাফ আহমেদ আরো বলেন, যাবতীয় ট্যাক্স সংক্রান্ত বিষয়াদি অটোমেশনের আওতায় আনার জন্য একটি সমন্বিত কর প্রশাসন ব্যবস্থা (আইটিএএস) প্রবর্তনের আহ্বান জানান, যার মাধ্যমে কর প্রদান ও কর সংক্রান্ত যেকোনো বিষয় সহজে সমাধান সম্ভব হবে। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে পণ্য সরবরাহ খরচ বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে, বিদ্যমান প্রেক্ষিতে ভ্যাটের আওতা বহির্ভূত ব্যবসায়ীদের টার্নওভারের ঊর্ধ্বসীমা ৩ কোটি টাকা হতে ৪ কোটি টাকায় উন্নীতকরণের প্রস্তাব করেন। তিনি উল্লেখ করেন ভ্যাটের কার্যক্রমের মধ্যে আপীলাত, ক্রেডিট ফেরত এবং রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এখনও অনলাইনে সম্পন্ন করা যাচ্ছে না, দ্রুততম সময়ের মধ্যে উল্লেখিত বিষয়সমূহ ভ্যাট অনলাইন কার্যক্রমে সম্পন্ন করার সুপারিশ করেন। ডিসিসিআই সভাপতি নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে দেশীয় সোলার প্যানেল উৎপাদনকারীদের ক্ষেত্রে পণ্য সরবরাহকালে উৎসে মূসক কর্তন প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন। এছাড়াও আমদানি পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের নিকট হতে কেটে নেয়া ৫% অগ্রিম কর মওকুফ অথবা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমন্বয়ে বিদ্যমান জটিলতা নিরসনে জোরারোপ করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি।            

আরো পড়ুন: এনআরবি ব্যাংকের আইপিও শেয়ার বরাদ্দ

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ, স্থানীয় শিল্পায়ন সম্প্রসারণ ও বাজার সংরক্ষণ এবং টেকসই পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়সমূহ বিবেচনায় নিয়ে এনবিআর রাজস্ব নীতিমালা প্রণয়ন করে থাকে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেতে গিয়ে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলে এনবিআরকে তা জানানোর জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি এনবিআর চেয়ারম্যান আহ্বান জানান, যার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংশোধনের মাধ্যমে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে বরাবরের ন্যায় এনবিআর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।  

ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলীসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App