×

অর্থনীতি

তাৎক্ষণিক অনলাইনে ই-বিআইএনইস্যু বন্ধ করছে এনবিআর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০১৯, ১১:১৪ এএম

তাৎক্ষণিক অনলাইনে ই-বিআইএনইস্যু বন্ধ করছে এনবিআর
তাৎক্ষণিক ইলেকট্রনিক্স বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (বিআইএন) দেয়ার বিধান বাতিল করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চালু করার দুই বছর পর এই পদ্ধতিতে বিআইএন নিতে ব্যবসায়ীদের তরফ থেকে মিথ্যা তথ্য প্রদানের অভিযোগের পর এনবিআর এমন সিদ্ধান্ত নিল। এনবিআর সম্প্রতি এই পদ্ধতিতে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে। নতুন সিদ্ধান্তের আলোকে বিআইএন ইস্যু করার আগে আবেদনপত্রটি মাঠ পর্যায়ের ভ্যাট কর্মকর্তারা পরীক্ষা করবেন। একই সঙ্গে তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করবেন। এনবিআরের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী প্রক্রিয়াটি শেষ হতে অন্তত ২-৩ দিন সময় লাগবে। এনবিআর অনলাইন সিস্টেমের অপব্যবহার প্রতিরোধে এই পরিবর্তন এনেছে। নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ এবং ঝামেলামুক্ত করতে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে এনবিআর বিআইএনের অনলাইন রেজিস্ট্রেশন চালু করে। এটি সাধারণত ভ্যাট নিবন্ধন নামে পরিচিত। ভ্যাট অনলাইন সিস্টেমট যা ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম (আইভিএএস) নামে পরিচিত, একজন ব্যবসায়ী বাড়ি বা অফিসে বসেই অনলাইনে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করে মুহূর্তের মধ্যেই বিআইএন পেয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৬৩ হাজার ব্যবসায়ী বিআইএন অনলাইনে পেয়েছেন। কর্মকর্তারা জানান, এনবিআর উচ্চপর্যায় থেকে সম্প্রতি ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদন করেছে, যা দেশে স্বয়ংক্রিয় ভ্যাট সিস্টেম বাস্তবায়নে কাজ করবে। এটি বিআইএন দেয়ার আগে আবেদনগুলো পরীক্ষা করার জন্য মাঠ পর্যায়ের ভ্যাট কর্মকর্তাদের ক্ষমতা দিয়েছে। নতুন পদ্ধতিতে একজন ব্যবসায়ীকে ট্রেড লাইসেন্সের অনুলিপিসহ ইলেকট্রনিক করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র, আমদানি ও রপ্তানি নিবন্ধন নম্বর এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বরসহ অনেক নথি আপলোড করতে হবে। তারা আরো বলেন, ভ্যাট কর্মকর্তারা আবেদনপত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে ব্যবসা এবং ঠিকানাসহ অন্যান্য তথ্য প্রাপ্তির পর বিআইএন ইস্যু করার আবেদন অনুমোদন করবে। যদি কোনো ভুল তথ্য বা নথির অভাব থাকে ভ্যাট অফিস আবেদনকারীকে সঠিক তথ্য এবং নথি সরবরাহ করবে। এনবিআরের ভ্যাট শাখা দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে স্থানীয় কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। বেশির ভাগ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা বিআইএন সিস্টেমের তাৎক্ষণিক ইস্যুতে পরিবর্তন আনতে এনবিআরকে চাপ দিচ্ছিল। ঠিকানা ও ব্যবসার ধরনসহ যাবতীয় তথ্যের সত্যতা যাচাই করার জন্য ভ্যাট কর্মকর্তাদের ক্ষমতায়নের দাবি করছিলেন। তারা দেখেছেন যে অনলাইনে নেয়া বিআইএনধারীর দেয়া অধিকাংশ তথ্য ভুল। এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ভুল তথ্য ও ভুয়া নথি দিয়ে অনেক লোক বিআইএন নিয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে এনবিআরের স্থানীয় অফিসগুলো প্রদত্ত ঠিকানায় প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি বা আবেদনটিতে উল্লিখিত ব্যবসার ধরন সঠিক ছিল না। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা এ ধরনের বিআইএন ব্যবহার করে কর ফাঁকি দিচ্ছে। বিশেষ করে আমদানি পর্যায়ে এটি ঘটছে। মাঠ অফিসগুলোর ক্ষমতায়ন করার বিরোধিতাকারী অন্য একটি গ্রুপ বলছে, এর ফলে আবেদনটির অনুমোদন পেতে করদাতাদের ঝামেলা আরো বাড়বে। কারণ অনেক সময় মাঠ কর্মকর্তারা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারে। করদাতাদের ভ্যাট কর্মকর্তাদের মুখোমুখি হতে হবে, যা দুর্নীতি ও হয়রানির সুযোগ তৈরি করবে। তবে অন্য এক ভ্যাট কর্মকর্তা বলেন, মাঠ অফিসগুলো বিআইএন প্রদানের পরেও কাগজ, ঠিকানা এবং অন্যান্য তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে পারে। তিনি বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে কেউ বিআইএন নিলে বা বিআইএনের অপব্যবহার করলে ভ্যাট অফিস তার নিবন্ধন বাতিল করার অধিকার রাখে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App