×

অর্থনীতি

সর্বজনীন পেনশন, সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ডিজিটাল ডেটাবেজ প্রয়োজন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৩, ০৮:১৪ এএম

সর্বজনীন পেনশন, সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ডিজিটাল ডেটাবেজ প্রয়োজন
দেশের সর্বসাধারণের জন্য সরকার সম্প্রতি সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প চালু করেছেন। তবে এই প্রকল্প থেকে সর্বোচ্চ সুফল পেতে সংগৃহীত তহবিল সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা, সঠিক স্থানে বিনিয়োগ করা, বিনিয়োগে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা এবং প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সর্বসাধারণের পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ডেটাবেজ তৈরির কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা। এছাড়া জনগণকে ফিরতি যে টাকা দেয়া হবে সেটা যেন ‘আকর্ষণীয়’ হয় সেদিকেও সরকারকে নজর দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি। গতকাল সোমবার ভোরের কাগজকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সর্বজনীন পেনশন স্কিম দেশের সর্বসাধারণের জন্য একটি ইতিবাচক উদ্যোগ উল্লেখ করে ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য এই সর্বজনীন পেনশন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। একদিকে যেমন দেশের সাধারণ মানুষদের জন্য এই উদ্যোগ ইতিবাচক, পাশাপাশি এটির মাধ্যমে সরকারের অর্থায়নেরও একটা সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, সর্বজনীন পেনশনে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়গুলো রয়েছে তার মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলো- এখানে যে তহবিল সংগৃহীত হবে বা অর্থের ফ্লো আসবে, সেটাকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে। জনগণ থেকে সংগৃহীত অর্থ কোথায় বিনিয়োগ করতে হবে বা কোন বিনিয়োগে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করা যাবে সরকারকে যেদিকে সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। তিনি বলেন, জনগণকে যখন টাকা ফেরত দেয়া হবে সেটি যেন আকর্ষণীয় হয়। সহজ ভাষায় যদি বলি, আমি সরকারকে এক টাকা দেব, সরকার নির্ধারিত সময়ের পরে আমাকে তিন টাকা ফেরত দিতে চাইল; কিন্তু আমি যদি সঞ্চয়পত্রে অন্যত্র বিনিয়োগ করে চার টাকা পাই তাহলে আমি কিন্তু সরকারি খাতে বিনিয়োগ করতে চাইব না। এই যায়গাগুলো সরকারকে দেখতে হবে। সার্বিক স্বচ্ছতার জন্য ডিজিটাল ডেটাবেজ তৈরির প্রয়োজনীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সমতা’তে নিম্নশ্রেণির মানুষদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে সেটা লক্ষ্য রাখা জরুরি। আমরা প্রায় সময়েই দেখি আমাদের সামাজিক সুরক্ষায় স্বচ্ছতার বেশ অভাব রয়েছে। পেনশন স্কিমে যাতে এটি না হয়, সেজন্য পুরো বিষয়টাতে স্বচ্ছতা আনতে একটা ডিজিটাল ডেটাবেজ বা তথ্যভাণ্ডার থাকা জরুরি। এখানে একটা পরিপূর্ণ তথ্যভাণ্ডার লাগবে যার ভিত্তিতে প্রকৃত সহায়তা পাওয়ার যোগ্য মানুষটাকে চিহ্নিত করা যাবে। সেক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যে, যার প্রকৃত অর্থে স্কিমটা দরকার সে-ই যেন পায়। তিনি বলেন, পেনশন স্কিমের কিছু কিছু ক্ষেত্রে অস্পষ্টতা রয়েছে। সেই অস্পষ্টতা দূর করতে হবে। যেমন, কেউ তহবিলে টাকা দেয়া শুরু করল এবং পাঁচ বছর পরে মারা গেল তখন প্রক্রিয়াটা কী হবে? সেটা কিন্তু স্পষ্ট করে বলা নেই। পেনশন স্কিমের পুরো জিনিসটাই যেহেতু নতুন, তাই এর অনেকগুলো বিষয়ে সাধারণ মানুষের ধারণা না থাকাটাই স্বাভাবিক। এই জায়গাগুলোতে আরো স্বচ্ছ ও স্পষ্ট করতে হবে। অস্পষ্টতা দূর করতে বিভিন্ন কর্মশালা করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, দিনব্যাপী বা অর্ধদিনব্যাপী পেনশন স্কিম নিয়ে বিভিন্ন কর্মশালা করা যেতে পারে যেগুলোর মাধ্যমে মানুষকে এটি সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে বোঝানো যাবে। পশ্চিমা দেশগুলোতে এই স্কিমগুলো যেখানে ফলপ্রসূভাবে কাজ করে সেখানে সবার তথ্য হাতের নাগালে থাকে। সেই দেশগুলোতে মানুষের সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর যেগুলো থাকে সেখানে ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে সব তথ্যই পাওয়া যায়। আমাদের এখানে সেই সুবিধাগুলো নেই। আমাদের এনআইডির সঙ্গে অনেক কিছুই যুক্ত আছে কিন্তু সবকিছু নেই। আবার দেখা যায়, অনেকের এনআইডিও নেই। সুতরাং একটি ডেটাবেজ তৈরি করলে সেটা পেনশন স্কিমের জন্য অনেক সুবিধা বয়ে আনবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App