×

অর্থনীতি

বর্তমান সরকারকেই ক্ষমতায় চান ব্যবসায়ীরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৩, ০৯:০৮ পিএম

বর্তমান সরকারকেই ক্ষমতায় চান ব্যবসায়ীরা
বর্তমান সরকারকেই ক্ষমতায় চান ব্যবসায়ীরা

ছবি: সংগৃহীত

অতীত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশে আর কখনোই তত্ত্ববধায়ক সরকার চান না ব্যবসায়ীরা। সংবিধান অনুয়ায়ী বর্তমান সরকারের অধীনেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন চান তারা। একইসঙ্গে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকেই আবারো ক্ষমতায় দেখতে চান ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। অন্য কেউ নয়। দীর্ঘ সময়ের অভিজ্ঞতার আলোকে দেশ পরিচালনায় শেখ হাসিনা যে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। সে বিবেচনায় আগামী দিনেও তাকে প্রয়োজন।

শনিবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যায় ‘স্মার্ট বাংলাদেশ শীর্ষক’ ব্যবসায়ী সম্মেলনে এসব কথা বলেন ব্যবসায়ী নেতারা। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলণ কেন্দ্রে এ সম্মেলণের আয়োজন করা হয়। দেশের সব ব্যবসায়ী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা সম্মেলণে অংশ নেন। ব্যাবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন এতে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর শিল্প বেসরকারি শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে সম্মেলনে অংশ নেন দেশের ব্যাবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন চেম্বার, এ্যাসোসিয়শনের প্রতিনিধি ও সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে এসে পৌঁছালে বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিদ উদ্দিন তাকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী মূল মঞ্চে উঠলে ব্যবসায়ীরা দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান জানান। এসময় তারা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শেখ হাসিনার সরকার বারবার দরকার’ স্লোগান তুলেন। প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে শুভেচ্ছার জবাব দেন। এরপর জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। এরপর পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক থেকে পাঠ করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই সভাপতির বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, কভিডসহ নানা সংকট সত্বেও গত ১৪ বছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত আছে। বিশে^র সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল পণ্যের বাজার হিসেবে বাংলাদেশ স্বীকৃত। ব্যবসায়ীক ও সামগ্রিক উন্নয়নও দৃত গতিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, দারিদ্র দূরীকরণ ও প্রবৃদ্ধি অর্জনে এক রোল মডেল বাংলাদেশ। উন্নয়নের অগ্রযাত্রা পেরিয়ে আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে। কৃষি, শিল্প, সেবা প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। কৃষিতে স্মার্ট প্রযুক্তি কাজ করছে জাদুর মতো। প্রযুক্তি প্রয়োগের সঙ্গে বড় ব্যবসায়ীরা এ খাতে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছেন। শিক্ষিত যুবক ও যুবতীরাও কৃষিকে পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। কর্মসংস্থানের এক নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। চাল, ডাল এবং চাসহ ২২টি কৃষিপণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ শীর্ষ দশটি দেশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। এসব সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃষিবান্ধব নীতির কারণে। এসময় তিনি আগামী নির্বাচনেও ব্যবসায়ীরা শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে থাকবেন বলে জানান। তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যাবসায়ীরা চান না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আগামী নির্বাচনেও শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, গণতন্ত্র মানেই যা ইচ্ছা তাই করা নয়। আগে ছিল আগুন সন্ত্রাস। এখন রাজনৈতিক সভা সমাবেশের কারণে ব্যবসার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা এটা আর চাই না। তিনি বলেন, আমার মনে হয় আজকের সম্মেলণে ব্যাবসায়ীদের ম্যান্ডেট প্রধানমন্ত্রী পেয়ে গেছেন। আমরা ব্যাবসায়ীরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাই না। আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি মানুষ। আমরা সবাই একটা সুন্দর নির্বাচন চাই। ১/১১ এ ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করা হতো। হয়রানি করা হতো। ব্যবসায়ীরা কেউই আর সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেখতে চাই না। আমার বিশ্বাস বিশ্বের সারা দেশের মানুষ ও ব্যবসায়ী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আছেন। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হোক। সংবিধানের বাইরে একচুলও যাওয়ার কারণ দেখিনা। পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছে। এমনকি ড. ইউনুসেরও ষড়যন্ত্র আমরা দেখেছি।

এফবিসিসিআয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, গত সাড়ে ১৪ বছরে মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে। কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা নিরাপদে ব্যবসা করতে পারছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে পেরেছেন। এটা অব্যাহত রাখতে হবে।

সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প ব্যবসায়ী সমিতির নেতা আব্দুল মোক্তাদির, বাংলাদেশ টেক্সটাইলস মিলস এ্যাসোশিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, এইচএসবিসি ব্যাংকের সিইও মাহবুবুর রহমান, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের নাসির, নারী ব্যবসায়ী ও সংসদ সদস্য সেলিনা মাতলুব আহমাদ, বিজিএমইয়ের সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইয়ের সভাপতি সেলিম ওসমান এমপি, বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম এমপি, এফবিসিসিআয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, ব্যবসায়ী নেতা নজরুল ইসলাম মজুমদার, ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, চট্টগ্রাম চেম্বার এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, বায়রার সভাপতি আবুল বাশার, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতিদের মধ্যে কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, মীর নাসির হোসেন, আবদুল মাতলুব আমাদ, ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App