×

অর্থনীতি

দৃক গ্যালারিতে আজ শেষ হলো প্রদর্শনী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৩০ পিএম

দৃক গ্যালারিতে আজ শেষ হলো প্রদর্শনী

রানা প্লাজার খুনি সোহেল রানাকে ঘৃণার চোখে দেখছেন দর্শনার্থীরা। ছবি: ভোরের কাগজ

দৃক গ্যালারিতে আজ শেষ হলো প্রদর্শনী
দৃক গ্যালারিতে আজ শেষ হলো প্রদর্শনী

শনিবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির উদ্যোগে আয়োজিত ‘রানা প্লাজা হত্যকাণ্ড ১০ বছর ও তারপর’ শীর্ষক প্রদর্শনীটি ১৬ শুক্রাবাদ, পান্থপথ দৃকপাঠ ভবনের দৃক গ্যালারিতে শেষ হচ্ছে। সমাপনী অনুষ্ঠানে দর্শকের সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, যুগ্ম সম্পাদক দীপক রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবীর সাহা ও গণসংহতি আন্দোলনের রাজনীতি পরিষদের সদস্য মনিরুদ্দীন পাপ্পু। আজকে আয়োজকরা শিশু-কিশোরদের বিশেষভাবে আমন্ত্রণ করেছিলো প্রদর্শনীতে।

উল্লেখ্য, রানা প্লাজা হত্যাকাণ্ডের ১০ বছরে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ ছিলো দৃকের এই প্রদর্শনী। ২৪ মার্চ রানা প্লাজার সামনে প্রতিবাদ ও প্রদর্শণীসহ এই আয়োজন শুরু হয়। ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজার সামনে প্রতিবাদ ও কর্মসূচিসহ মাসব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি শেষ হবে।

বক্তাদের ভাষ্য, রানা প্লাজা ধসে হাজারো শ্রমিক প্রাণ ও স্বপ্ন হত্যার দশ বছর সারা বিশ্বের কারখানার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। তারা বলেন, গত ১০ বছরে সোহেল রানাসহ দোষীদের শাস্তি হয়নি উল্টো জামিন হয়েছে সোহেল রানাসহ অনেকের। পরবর্তীতে আবার জামিন স্থগিত হয়েছে। কিন্তু গত ১০ বছরে শাস্তি হয়নি দোষী মালিকসহ অন্যদের।

তারা আরো বলেন, বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা ও টালবাহানা বিচার ব্যবস্থার প্রতি এক অনাস্থা তৈরি হয়েছে নিহত, নিখোঁজ পরিবারের স্বজন ও আহতদের মধ্যে। দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত না হলে এই ধরনের ঘটনার পুণরাবৃত্তি বন্ধ করা যাবে না। একই সঙ্গে শ্রমিকদের মানুষ হিসাবে না দেখে যন্ত্র বা মুনাফার যন্ত্রভাবা বন্ধ হবে না।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বর্তমানে বাজারের উর্ধ্বগতি গতিতে বর্তমান শ্রমিকদের মজুরি ২৫ হাজার টাকায় বৃদ্ধির ওপরেও গুরুত্বারোপ করেন।

বক্তারা বলেন, এই প্রদর্শনীর ছবির মধ্য দিয়ে রানা প্লাজার হারিয়ে যাওয়া তাড়া করা স্মৃতিগুলো আবারও সামনে এসেছে। ছবি গুলো প্রতবিাদ ও সংহতি হয়ে সামনে এসছে। তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস বা পোশাকখাতের ইতিহাস রানা প্লাজাকে বাদ দিয়ে করা সম্ভব না। অথচ মূল ধারার ইতিহাস থেকে পোশাক শ্রমিকসহ রানা প্লাজার স্মৃতি হারিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। তারা আরো বলেন, আলোকচিত্রীসহ নানা মাধ্যমের শিল্পীদের রানা প্লাজাসহ সমাজের নানা দিক নিয়ে কাজ করা দরকার। কারণ লড়াইটা কেবল মাঠের নয়, সাংস্কৃতিক ময়দানেরও।

তারা আরো বলেন, সমাজের উপরতলার জন বা মালিকপক্ষের দৃষ্টি দিয়ে রানা প্লাজার কাউকে বা বাংলাদেশের শ্রমিকদের শিল্পীরা দেখবেন না এটাই কাম্য। কারণ শ্রমিকরা কেবল নিপীড়িতই নয় বরং সাহস-সংগ্রাম এবং জীবন ও স্বপ্নের প্রতীক। রানা প্লাজার আহত শ্রমিক এবং বর্তমানে পোশাকখাতের শ্রমিকরা আর সব সাধারণ মানুষের মতো পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়। ভালোবাসতে চায় এবং স্বপ্ন দেখতে চায়। আলোকচিত্রীসহ অন্যান্য সকল মাধ্যমের শিল্পীদের রানা প্লাজাসহ , রপ্তানী আয়ের শীর্ষখাতের পোশাক শ্রমিকসহ দেশের অধিকাংশ শ্রমজীবি মানুষের কথা তাদের কাজে ভবিষ্যতে আরো দেখা যাবে সেই আশাবাদ করেন বক্তারা। তারা বলেন রপ্তানী আয়ের শীর্ষখাতের শ্রমিকদের জীবন ও সংগ্রাম সাহিত্যে, উপন্যাসে, আলোকচিত্রে সহ অন্যান্য মাধ্যমে যথাযথভাবে উঠে আসা জরুরি।

মোট ২০ জন শিল্পীর আলোকচিত্র, কাটু‍র্ন, গ্রাফিতি, সাউন্ড, ভিডিও ও গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির আর্কাইভাল কাজ ও তথ্য নিয়ে করা এই প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। মোট ৫৫টি ছবি এখানে স্থান পেয়েছে। যার মধ্যে আছে নিহতদের পরিবার থেকে সংগৃহীত স্টুডিওর ছবি।

প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত তিনটা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি চলবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App