×

অর্থনীতি

কাঁচামালের দাম কমলেও মুনাফা করতে চায় কোম্পানিগুলো

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪:১৩ পিএম

কাঁচামালের দাম কমলেও মুনাফা করতে চায় কোম্পানিগুলো

বুধবার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা। ছবি: ভোরের কাগজ

কাঁচামালের দাম কমে এলেও অধিক মুনাফা করতে চায় দেশের স্বনামধন্য কোম্পানিগুলো। তাদের মতে এখন কাঁচামালের ঊর্ধ্বগতি থাকায় তারা ৫০ শতাংশের জায়গায় ৩৫ শতাংশ মুনাফা করছেন। যা কাঁচামালের দাম কমলে আবার ৫০ শতাংশ মুনাফা করে পুষিয়ে নিবেন।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে বুধবার আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা এ কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ক্যাবের সহ-সভাপতি আব্দুল হান্নান, ইউনিলিভারের সিইও জাহিদ মালিথা, ব্র্যান্ড পরিচালক শামীমা আক্তার, স্কয়ার টয়লেট্রিজের হেড অব অপারেশনস মালিক মো. সাঈদ, কল্লোল গ্রুপের ম্যানেজার (কর্পেোরেট সেলস)সহ বিভিন্ন কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ভোক্তা মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, বিভিন্ন পণ্যের চড়ামূল্যে ভোক্তারা কষ্টে আছে। আর এই সময়ে এসেও আপনারা (কোম্পানিগুলো) অধিক মুনাফা করছেন।

ডিজি বলেন, আপনারা বলছেন ৫০ শতাংশ মুনাফা না করে এখন ৩৫ শতাংশ করছেন। আর কাঁচামালের দাম কমলে আপনারা এই ১৫ শতাংশ মুনাফা করে পুষিয়ে নিবেন। এটা তো ঠিক না। কাঁচামালের দাম কমলে আপনারা পণ্যের মূল্য আরও কমাবেন।

সফিকুজ্জামান বলেন, ভোক্তারা আপনাদের রঙিন বিজ্ঞাপন দেখতে চায় না। আপনারা পণ্যের দাম যেভাবে বাড়ান, কমার সময় সেভাবে কমে না। এক জায়গায় লক হয়ে থাকে। এরপর হিমালয়ের মত ওপরের দিকে উঠতেই থাকে।

রাজধানীর শ্যামপুরে একটি বিশাল এলাকাজুরে বিদ্যুতের নকল সুইচ বানাচ্ছে। এর মাধ্যমে সবাইকে প্রতারিত করা হচ্ছে। সকল কোম্পানির নামেই অবৈধ সুইচ বানাচ্ছে আর নকল পণ্য বেশি দামে কিনে ঠকছে ভোক্তারা।

ইউনিলিভারের চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) জাহিদ মালিতা বলেন, ভোক্তা ইন্টারেস্ট নিশ্চিত করলে ব্যবসা ভাল হবে। ইউনিলিভার আধা সরকারি কোম্পানি। সরকারের ৪০ শতাংশ শেয়ার আছে ইউনিলিভারে। গত দুই বছরে যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে এটা কি কৃত্রিমভাবে বাড়ানো হয়েছে নাকি কস্ট বেইজ তা আপনারা যাচাই করে দেখবেন।

কাঁচামাল ৮০ শতাংশ আমদানি করতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, গ্লোবাল মার্কেটে ইনফ্লেশন হলে আমাদের ওপরও এটার প্রভাব পড়ে। ৮০ শতাংশ কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। এ হিসেবে সব মিলিয়ে একটা পণ্যের দাম বেড়েছে ৯৬ শতাংশ। কিন্তু আমরা সে অনুসারে দাম বাড়াইনি। সে হিসেবে কিন্তু আমরা লোকসানেই আছি৷

জাহিদ বলেন, যে পরিমাণ ইনফ্লেশন হয়েছে সে অনুযায়ী আমরা দাম বাড়াই নাই। টুথপেষ্টের দাম সে অনুযায়ী বাড়েনি। গত দুই বছরে মাত্র ৬ শতাংশ বেড়েছে টুথপেষ্টের দাম। তবে ওয়াশিং পাউডার আর সাবানের দাম বেড়েছে।

স্কয়ার টয়লেট্রিজের হেড অব অপারেশনস মালিক সায়িদ বলেন, সবকিছুই দাম হুট করে বেড়ে যায়নি। দাম বেড়েছে ধীরে ধীরে। ৫০, ৬০, ৭০ থেকে ১০০ পর্যন্ত এভাবে দাম বেড়েছে। ভোক্তারা বিরক্ত হলে তারা অন্য ক্যাটাগরিতে চলে যাবে। রিস্ক নিয়ে দাম বাড়ানো হচ্ছে। আর এতে বিক্রির পরিমাণ কমছে।

তিনি বলেন, নতুন করে ক্রাইসিস শুরু হতে পারে। যখন দাম কমবে তখন কাস্টমস বলতে পারে আগের বেশি দামেই পণ্য খালাস করতে হবে। তখন কিন্তু এটা নিয়ে সমস্যা পড়তে হবে সবার। যদি দাম কমার চিত্র দেখি তাহলে আমরা দাম কমাবো।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সংগঠক কাজী আব্দুল হান্নান বলেন, ডিটারজেন্টের কাঁচামাল সালফিউরিক অ্যাসিড ও সোডিয়াম সালফেটনামে এনে সোডিয়াম ক্লোরাইড বলে সাদা লবণ হিসেবে মার্কেটিং করছে। যে প্রোডাক্ট বেশি বিক্রি হয় কোম্পানিগুলো সেগুলোর দামই বাড়াচ্ছে। অথচ যেটার দাম বাড়ালে অন্য কোম্পানির দখলে তা চলে যেতে পারে তার দাম কিন্তু আপনারা বাড়ান না। কিন্তু যেই পণ্যের মনুপলি তৈরি করে ফেলেছেন সেটার দাম বাড়াচ্ছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App