×

অর্থনীতি

অনলাইনে কেনাকাটায় স্বস্তি খুঁজছেন ক্রেতারা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২২, ০৮:৫০ এএম

অনলাইনে কেনাকাটায় স্বস্তি খুঁজছেন ক্রেতারা

প্রতীকী ছবি

করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছরে অনেকটাই বদলে গেছে মানুষের জীবন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বাধ্যবাধকতা কাটিয়ে সবাই যখন অভ্যস্ত হচ্ছে নতুন স্বাভাবিকে, তখই দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। আর ঈদ মানে কেনাকাটার ধুম। করোনায় ভয়াবহতা না থাকলেও মানুষের মনের শঙ্কা এখনো কাটেনি। ফলে প্রযুক্তির কল্যাণে মুঠোফোন, ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ কম্পিউটারকেই অনেকে বানিয়ে ফেলছেন শপিংমল। কেনাকাটায় থাকছে না স্বাস্থ্যঝুঁকিও। তাইতো অনলাইনে পছন্দসই পণ্য কিনে স্বস্তি খুঁজছেন সচেতন ক্রেতারা।

দিন দিন অনলাইন কেনাকাটার ব্যাপকতা ও জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বিক্রেতারা ঘরে বসে নিজস্ব পেইজ খুলে অলনাইন লাইভ করে তাদের প্রোডাক্টগুলো এত সূক্ষভাবে তুলে ধরছেন যে, ক্রেতারা মার্কেটের মতোই যাচাই-বাছাই করে পণ্য কিনতে পারছেন। পছন্দের জিনিস অর্ডার দেয়ার আগে রিভিউ বিভাগে গিয়ে মতামতগুলো পড়ে নিচ্ছেন। এমনকি ক্রেতারা একসঙ্গে অনেকগুলো সাইটে গিয়ে পণ্যের দাম যাচাই-বাছাইও করে নিতে পারছেন। ঘরে বসেই পছন্দের পণ্য অর্ডার করলে সময়মতো পৌঁছে যাচ্ছে কোনো ঝামেলা ছাড়াই।

কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ঘুরে দেয়া যায়, এমন কোনো উপকরণ নেই যা পাওয়া যাচ্ছে না এই ভাচুর্য়াল শপিং জগতে। ঈদের নতুন সব কালেকশনের সম্ভার নিয়ে তৈরি হয়ে আছে ইন্টারনেটভিত্তিক দোকানগুলো। এখানকার সব পোশাক এবং অনুষঙ্গের পসরাই অন্তর্জালে সাজানো, তাইতো তর্জনীর এক ছোঁয়াতেই হয়ে যাচ্ছে ঈদের সব কেনাকাটা।

২-৩ দিনের মধ্যে পোশাক সরবরাহের নিশ্চয়তা ছাড়াও অনলাইন শপগুলো দিচ্ছে ক্যাশ অন ডেলিভারির সুবিধা। শুধু ওয়েবসাইট নয়, ফেসবুকে পছন্দমাফিক পেইজে গিয়েও কেনাকাটা করা যায়। আলাদাভাবে কথা বলে, পণ্যের মান ও দাম শুনে যাচাই করে অর্ডার দেয়া যায়। আড়ং, অঞ্জন’স, কে-ক্রাফট, ক্যাটস আই, রিচম্যান, ইয়েলো, এক্সট্যাসি, দর্জিবাড়ি, সারা, সেইলরসহ নামিদামি সব ব্র্যান্ডের অনলাইন শপেই কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা।

সেইলর লাইফ স্টাইলের ওয়েবসাইটে ঘুরে দেখা যায়, এখানে মেয়েদের জন্য রয়েছে পার্টি ওয়্যার সিঙ্গেল পিস, পার্টি ওয়্যার থ্রি-পিস, এক্সক্লুসিভ শাড়ি, প্রিন্টেড শাড়ি, কুর্তি, প্রিন্টেড থ্রি-পিস, ফ্যাশন টপস এবং ডেনিম। সারার অনলাইন আয়োজনে ছেলেদের জন্য আছে পাঞ্জাবি, ক্যাজুয়াল শার্ট, ফরমাল শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট, চিনো প্যান্ট, জগার্স, কার্গো প্যান্ট, ডেনিম প্যান্ট, পায়জামা। তবে এবার তাদের অন্যতম আকর্ষণ- ফুল ফ্যামিলি কালেকশন পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস, শাড়ি, টি-শার্ট ও পোলো শার্ট।

জনপ্রিয় অনলাইন ফ্যাশন ওয়েবেসাইট রিলায়েন্সে ধুমসে বিক্রি হচ্ছে কাতান ওড়নার অরগাঞ্জা থ্রি-পিস ও গোটাপতি লেসিং করা সিল্কের থ্রি-পিস। এছাড়া ঘারার স্কাট প্লাজো, ভিন্ন ডিজানেইর কাপ্তান, পটস ও ফতুয়ার পাশাপাশি আছে ইন্ডিয়ার ব্যানারস কাতান শাড়ি। রিলায়েন্সের কর্ণধার সোনালী জানান, রেজিনেবল প্রাইসের মধ্যে আমি ড্রেসগুলো রাখার চেষ্টা করি। সারাদেশের ক্রেতাদের এখান থেকে কেনাকাটার সুযোগ আছে। পার্সেলের মাধ্যমে খুব দ্রুত পৌঁছে দিতে পারি। ঈদকে সামনে রেখে সপ্তাহে তিন দিন লাইভ রাখছি। প্রতিটা লাইভে অন্তত ৬ রকমের নতুন ডিজানের ড্রেস থাকে। লাইভ শেষ না হতেই আমার ড্রেস শেষ হয়ে যায়।

শুধু ঈদ বলে কথা নয়, ঘরে বসে বছরের প্রায় সব সময়ই কেনাকাটা করেন ব্যাংক কর্মকর্তা সোমা সোহরাব। তিনি জানান, এবারের ঈদে বাবার এবং শ্বশুর বাড়ির সবার জন্যই অনলাইন থেকে কেনাকাটা করেছেন। নিজের কিছু পছন্দের পেইজ আছে, সেখান থেকেই তিনি কেনাকাটা করেন, যেখানে পণ্যের মান বেশ ভালো। তিনি বলেন, করোনা নেই এটা বললে ভুল হবে, যে কোনো সময় ঢেউ আসতে পারে। ঘরে বাচ্চা আছে। মার্কেটে গিয়ে ওদের ঝুঁকিতে ফেলতে চাই না। তাছাড়া অনলাইনে কেনাকাটার সুযোগ যেহেতু আছে, মার্কেটে অযথা ভিড় বাড়িয়ে কী লাভ!

বিশেষ সুবিধা : এবারের ঈদে ক্রেতাদের বাড়তি সুবিধার কথা চিন্তা করে নামকরা ফ্যাশন হাউসগুলো পছন্দের সব পণ্যের ওপর ৩০-৫০ ভাগ পর্যন্ত অফার দিয়েছে। আড়ং থেকে বিভিন্ন ক্রেডিট কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা ব্যবহার করে পণ্য ক্রয় করলে বিশেষ অফার পাওয়া যাবে। এছাড়া কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান দিচ্ছে গিফট ভাউচার।

এছাড়া কোনো কোনো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের পণ্য ক্রয়ের বিপরীতে নগদ ছাড়, ক্যাশব্যাক ও উপহার দিচ্ছে। এর মধ্যে বিকাশ পেমেন্টে ২০ শতাংশ ক্যাশব্যাক, অ্যামেক্স কার্ড পেমেন্টে ১০ শতাংশ ছাড়, মাস্টার কার্ড ব্যবহারকারীরা ১০ শতাংশ ছাড় এবং ইবিএল কার্ড ব্যবহারকারীরা পাচ্ছেন ৫ শতাংশ ছাড়। নগদ গ্রাহকরা পাচ্ছেন সর্বোচ্চ ২০০ টাকার ক্যাশব্যাক। কিছু ই-কমার্স ও এফ-কমার্স ক্রয় করা পণ্য বিনামূল্যে বাসায় পৌঁছে দিচ্ছে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে ‘ফ্রি ডেলিভারি’র ব্যবস্থা করেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

প্রিয় শপের প্রধান নির্বাহী আশিকুল আলম খান বলেন, ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম গ্রাহককেন্দ্রিক। তাই যারা ঘরে থেকে কেনাকাটায় আগ্রহী তাদের কাছে পণ্য পৌঁছে দিতে আমাদের টিম দিন-রাত কাজ করছে। গ্রাহকদের যে ধরনের পণ্য প্রয়োজন, তেমন পণ্যই যেন পান সেজন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে প্রিয় শপের কর্মী বাহিনী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App