×

অপরাধ

স্বর্ণালঙ্কারের লোভেই ধানমন্ডিতে গৃহকত্রীসহ জোড়া খুন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০২:২৫ পিএম

স্বর্ণালঙ্কারের লোভেই ধানমন্ডিতে গৃহকত্রীসহ জোড়া খুন

বুধবার পিবিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিশেষ পুলিশ সুপার আহসান হাবীব পলাশ। ছবি: ভোরের কাগজ

রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় গৃহকত্রী আফরোজা বেগমসহ গৃহকর্মী দিতি খুনের ঘটনায় চার্জশিট প্রস্তুত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ হত্যার পেছনে ওই বাসায় বিশ্বস্ততার সঙ্গে ১০ বছর ধরে চাকরি করা বাচ্চু ও গৃহকর্মী সুরভী আক্তার নাহিদার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে সুরভী হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। তার দেয়া তথ্যমতে উদ্ধার করা হয়েছে খোয়া যাওয়া স্বর্ণের চেন ও দুটি স্বর্ণের চুড়ি।

পিবিআই জানায়, বাসায় থাকা গৃহকর্মী বাচ্চু ও সুরভী আক্তার নাহিদা স্বর্ণালংকার ও টাকার লোভে আফরোজা বেগমকে খুন করে। পরে এই ঘটনা দেখে ফেলায় পাশের বাসার গৃহকর্মী দিতিকে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে তার মৃত্যু হয়। তদন্তে দুজনের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় বাচ্চু ও সুরভীকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করা হবে।

বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পিবিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার আহসান হাবীব পলাশ।

তিনি বলেন, ওই বাসার বাচ্চু মাদকে আসক্ত হওয়ায় তার টাকা পয়সার প্রতি লোভ জাগে। সেই আসক্তি থেকে সে বাসার টাকা পয়সা স্বর্ণালঙ্কার লুটের ফন্দি খুঁজতে থাকে। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে কাজ করতেন বাচ্চু মিয়া। দীর্ঘদিন ধরে কাজ করায় বাসার মালিকের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে সে বিলাসী জীবনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।

এ সময় বাড়ির মালিক বাচ্চুকে নতুন গৃহকর্মী খোঁজার দায়িত্ব দেন। তখন বাচ্চুর সঙ্গে সুরভী আক্তার নাহিদা নামের এক নারীর ধানমন্ডির রাস্তায় পরিচয় ঘটে। সেই পরিচয়ে নাহিদা জানায় তার একটি কাজ দরকার। এরপর বাচ্চু তাকে সেই বাসায় নিয়ে যায়। এর আগে বাচ্চু মিয়া তাকে দিয়ে আগারগাঁওয়ের একটি মার্কেট থেকে ছুরি কিনে আনতে বলে। পরে ওই বাসায় গৃহকর্মী সাজিয়ে তাকে নিয়ে যায়। বাসায় ঢুকে নাহিদা দুই ঘণ্টা অবস্থান করে এবং কিছু কাজও করেন। বিকেল চারটার দিকে বাচ্চু মিয়া বাসায় প্রবেশ করে এবং গৃহকর্ত্রী আফরোজা বেগম এর কাছে আলমারির চাবি চায়। আফরোজা বেগম তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার গলায় ছুরি ধরে বাচ্চু মিয়া। একপর্যায়ে আফরোজা বেগম এর গলায় ছুরি দিয়ে টান দিলে রক্তাক্ত অবস্থায় জখম হয়ে পড়ে থাকেন। বাচ্চু মিয়া বিছানার বালিশের নিচ থেকে আলমারির চাবি নিয়ে একটি স্বর্ণের চেইন, দুটি স্বর্ণের চুরি ও একটি মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার সময় পাশের বাসার গৃহকর্মী আফরোজা বেগম হত্যার দৃশ্যটি দেখে ফেলায় তাকে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে নাহিদা ও বাচ্চু মিয়া। পিবিআই সুরভী ও বাচ্চুকে পুনরায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য পায়।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর এ খুনের ঘটনা ঘটে। পরে আফরোজা বেগম এর মেয়ে আইনজীবী দিলরুবা সুলতানা রুবা বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। কিন্তু মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইয়ে হস্তান্তরের আবেদন জানায় নিহতের মেয়ে। টানা প্রায় আড়াই বছর পর এ হত্যার রহস্য উন্মোচিত হলো।

আহসান হাবিব পলাশ জানান, রিমান্ডে সুরভির দেয়া তথ্যমতে স্বর্ণের চেইন ও মোবাইলসহ লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। আগারগাঁওয়ের একটি বস্তির বাসার খাটের নিচে মাটিতে পুঁতে রাখা স্বর্ণালঙ্কার ও খুনের কাজে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App