×

অপরাধ

নারী হাজতখানায় পাপিয়ার সঙ্গে কফির আড্ডায় দুই যুবক!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭:৪৫ পিএম

নারী হাজতখানায় পাপিয়ার সঙ্গে কফির আড্ডায় দুই যুবক!

আসামির সঙ্গে কফি আড্ডা দিতে যাওয়া দুই যুবক

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের মহিলা হাজতখানার ড্রেসিং রুমে আলোচিত যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃক নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়ার সঙ্গে দুই যুবকের প্রফুল্ল মনে কফির আড্ডা দিতে দেখা গেছে। এ সময় বাইরে নারী পুলিশ সদস্যদের পাহারা দিতে দেখা যায়। এ সময় আসামির সঙ্গে আড্ডার বিষয়ে জানতে চাইলে যুবক দুইজন নিজের গেস্ট বলে পরিচয় দেন হাজতখানার পুলিশের ইনচার্জ নৃপেন কুমার বিশ্বাস। পরে যুবকরা পাপিয়ার ভাই পরিচয় দিলে নৃপেন কুমার তাদেরকে চিনেন না বলে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান। পরে বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের ম্যানেজও করতে যান তিনি।

রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের নিচ তলায় নারী হাজতখানায় এ ঘটনা ঘটে। তবে আলোচিত এ আসামির সঙ্গে বাইরের দুই যুবকের আড্ডার বিষয়টিকে তুচ্ছ বলে অনেকটা উড়িয়ে দেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা।

জানা যায়, এদিন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইনের আদালতে পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য ছিল। এদিন সকালে তাদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় তাদের রাখা হয়। সকাল সাড়ে ১০ টার কিছু পর তাদের এজলাসে তোলা হয়। এ মামলায় সাক্ষ্য দিতে দুই জন সাক্ষীও আদালতে হাজিরা দেন। তবে বিচারক অসুস্থ হওয়ায় এদিন সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। ভারপ্রাপ্ত বিচারক এএসএম রুহুল ইমরান আগামি ১৬ মার্চ সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। তাদের আবার হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এরপর বেলা একটার দিকে হাজতখানার সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে থাকা গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে পারেন, নারী হাজতখানায় বসে আলোচিত আসামি পাপিয়ার সাথে দুই যুবক কফির আড্ডা দিচ্ছেন। এসময় সরেজমিনে দেখা যায়, পাপিয়া মহিলা হাজতখানার ড্রেসিং রুমে একটি বেঞ্চে বসে আছেন। তার সামনে দুই যুবক বসে আছেন। প্রফুল্ল মনে পাপিয়া কফি পান করছেন আর তাদের সাথে বৈঠকে মেতেছেন। গেইট লক করে কয়েক মহিলা পুলিশ পাহারা দিচ্ছেন বলে দেখা যায়। আস্তে আস্তে আদালতপাড়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত হন।

বিষয়টি টের পেয়ে হাজতখানার ইনচার্জ নৃপেন কুমার বিশ্বাস সেখানে প্রবেশ করেন। পাপিয়াসহ তিনজনকে সতর্ক করেন তিনি। এরপর সেখান থেকে বের হয়ে এসে হাস্যরসাত্মকভাবে সাংবাদিকদের ম্যানেজ করা চেষ্টা করেন। তিনি সাংবাদিকদের সেখান থেকে সরে যেতেও বলেন। তখন তার কাছে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, আদালতের অনুমতি ছাড়া এভাবে কোনো আসামির সাথে বৈঠক করা যায় কি না? তখন তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। এরপর বলেন, ‘ওই দুইজন আমাদের স্পেশাল গেস্ট।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পাপিয়াকে ড্রেসিংরুম থেকে বের করে মহিলা হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তার সাথে বৈঠক করা দুই যুবককে বের করেন নৃপেন বিশ্বাস।

পাপিয়ার সাথে যুবকদের কি সম্পর্ক জানতে চাইলে প্রথমে কেউ কোনো উত্তর দিতে চাননি। এরপর এক যুবক বলেন, তার নাম রাসেল। পাপিয়া তার বোন হন বলেও জানান। কেমন ভাই জানতে চাইলে, তিনি কিছু না বলে আদালতপাড়া ছেড়ে চলে যান। অপর যুবক এ বিষয়ে কিছুই বলতে চাননি।

পরে হাজতখানার ইনচার্জ নৃপেন কুমার বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, 'যুবকরা আমার কেউ না। কিভাবে ঢুকলো আমি দেখছি।'

এসময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আইনজীবী জানান, টাকার বিনিময়ে মিলে আসামিদের সাথে দেখা করার এমন সুযোগ। অহরহ ঘটতে ঘটতে এমন ঘটনা আদালতে প্রচলিত হয়ে পড়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App