×

সারাদেশ

ধসে পড়েছে সীমানা প্রাচীর, নিরাপত্তাহীনতায় সাফারি পার্কের প্রাণীরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২১, ০৬:২৪ পিএম

ধসে পড়েছে সীমানা প্রাচীর, নিরাপত্তাহীনতায় সাফারি পার্কের প্রাণীরা

প্রবলবর্ষণে সাফারি পার্কের সীমানা প্রাচীর ধসে পড়েছে। ছবি: ভোরের কাগজ

দুই দিনের ভারী বর্ষণে ধসে পড়েছে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের সীমানা প্রাচীর। শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে প্রবলবর্ষণে সাফারি পার্কের দক্ষিণ-পূর্বাংশের প্রায় ১১০ ফুট সীমানা প্রাচীর ধসে পড়েছে। এতে নিরাপত্তাহীণতায় পড়েছে পার্কে থাকা হরিণ, বাঘ ও জেব্রাসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী। অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনকে দায়ী করেছেন সাফারি পার্কের তত্বাবধায়ক মাজহারুল ইসলাম চৌধুরীসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।

এদিকে গত তিনদিন ধরে পার্কের সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে যাওয়ায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন ডুলাহাজারা ইউনিয়নবাসী। পার্কের পাশ্ববর্তী অন্তত ১০-১২টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার নারী-পুরুষ চরম আতঙ্কে রাত যাপন করছেন। যে কোন মুহুর্তের পার্কের ভেতরের প্রাণী বের হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

জানা যায়, গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার থেমে থেমে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। ফলে বৃষ্টির প্রবল পানির তোড়ে সাফারি পার্কের দক্ষিণ-পূর্বাংশের প্রায় ১১০ ফুট সীমানা প্রাচীরটি ধসে পড়ে। এতে নিরাপত্তা হুমকিতে পড়েছে পার্কে থাকা হরিণ, বাঘ ও জেব্রাসহ বিভিন্ন জাতের প্রাণীগুলো। যে কোন মুহুর্তে ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পার্কের ভেতরে থাকা শতশত বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী বের হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সীমানা প্রাচীরটি দ্রুত সময়ে মেরামত করার দাবীও জানান এলাকাবাসী।

ডুলাহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিন জানান, সাফারি পার্কের সীমানা প্রাচীর ধসে পড়ার বিষয়টি কর্তৃপক্ষ ফোনে জানানোর পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পার্কের দেয়াল ধসের স্থানটি ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া ডাঙ্গারবিল এলাকায়। এখানে যুগ যুগ ধরে প্রতিবছর চাষাবাদ হয়ে আসছে। গতবছরও চাষাবাদ ছিলো।

কিন্তু রেললাইনে কাজ শুরু হবার পর অতিলোভে বালুদস্যু মাটি কেটে বিক্রি করে দেয়। পুরো বিলে অন্তত ৮-১০ ফুট গভীর করে মাটি উত্তোলন করা হয়েছে। বিলের উপরের অংশ পলি হলেও নিচে শুধু বালু আর বালু। পশ্চিম মাইজপাড়ার আবুল হাসেম সওদাগরের ছেলেরা এসব মাটি বিক্রি করেছে বলে জানান তিনি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সাফারি পার্কের সীমানা প্রাচীর ধসে পড়া এলাকার জমির মালিক হচ্ছেন পশ্চিম মাইজপাড়ার মৃত আবুল হাসেম সওদাগরের ছেলে নাজির হোসেন, ছৈয়দ হোসেন ও নজিবুল হোসেন, একই এলাকার মৃত আব্বাস উদ্দিনের ছেলে আবু নাঈম মো. ইকবাল চৌধুরী, মাইজপাড়ার মৃত ইদ্রিস আহমদ চৌধুরীর ছেলে তাজবির জাহান চৌধুরী। ওই জায়গায় থেকে তারা নির্মাধীন রেললাইনে মাটি বিক্রি করেছেন। ডুলাহাজারা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল এহেছান চৌধুরীর মাধ্যমে জায়গার মালিক মাটি বিক্রি করেছেন। অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে বড়বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দুইদিনের বৃষ্টিতে সামীনা প্রাচীরটি ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে।

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের তত্বাবধায়ক মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি হলেও সরকারি স্থাপনার পাশ থেকে এভাবে মাটি কাটা কখনো সমীচীন হয়নি। যে কারণে সীমানা প্রাচীর ধসে পড়েছে।

তিনি আরও বলেন, জমির মালিকদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পদ ধ্বংসের পথ সৃষ্টিকারক হিসেবে অভিযুক্ত করে ক্ষতিপূরণ দাবির মামলা করা হবে। দেয়াল ভাঙ্গলেও পার্কের ভেতরে থাকা প্রাণীগুলো অনিরাপদ রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App