×

সারাদেশ

রাঙামাটিতে আশ্রিতের বিরুদ্ধে জমি আত্মসাতের অভিযোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২১, ০৯:১২ পিএম

রাঙামাটিতে আশ্রিতের বিরুদ্ধে জমি আত্মসাতের অভিযোগ

তুষার কান্তি দাসের স্বজনদের এই জমি। কিন্তু এর দখল ছাড়ছে না রতন বড়ুয়ার পরিবারের স্বজনরা। ছবি: ভোরের কাগজ

আশ্রিতের বিরুদ্ধেই অবশেষে জমি আত্মসাতের অভিযোগ ওঠেছে। রাঙামাটির চম্পকনগর রাঙ্গাপানি মৌজায় তুষার কান্তি দাসের ২০ শতাংশ জমিতে অসহায় হিসেবে আশ্রয় দেওয়া হয় রতন বড়ুয়ার পরিবারকে। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্রের যোগসাজসে এখন রতন বড়ুয়ার পরিবার ওই জমি দখলে নিয়ে আত্মসাতের অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। তুষার কান্তি দাসের পরিবার জমির দখল নিতে গেলে নির্মম হামলার শিকার হয়েছেন।

রাঙামাটির চম্পক নগর এলাকায় ১০২ রাঙ্গাপানি মৌজার ৭৬৭ নম্বর মৌজায় ২০ শতক জমি ১৯৮১/৮২ সালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে বৈধভাবে বন্দোবস্তি পেয়েছিলেন তুষার কান্তি দাস। এরপর তুষার কান্তি ওই জায়গা দেখাশোনা ও বসবাসের জন্য রতন বড়ুয়া নামের স্থানীয় অসহায় একজনকে ঘর তুলে দিয়ে থাকতে দেন। ১৯৮৩ সালে তুষার কান্তি দাশ মারা গেলে ওই জায়গায় আশ্রিত রতন বড়ুয়া তার মা এবং বোনকে নিয়ে এসে বসবাস করতে থাকেন। তুষার কান্তির পরিবার এ সময়ে আশ্রিত রতনের মা-বোনের বসবাসেও কোনো বাধা দেননি। এমনকি রতনের পরিবারে বসবাসের সুবিধার্থে জমিতে উন্নয়ন কাজ করে দেন।

কিন্তু ৪০ বছর পর সেই আশ্রিত রতন বড়ুয়ার পরিবারের স্বজনরা তুষার কান্তি দাসের স্বজনদের নিজেদের জমিতে যেতে দিচ্ছেন না। নানা কৌশলে প্রয়াত তুষার কান্তির পুরো ২০ শতক জমি দখল করে নেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে রতন বড়ুয়ার পরিবারের স্বজনরা। নিজের জায়গায় প্রবেশ করতে গিয়ে নির্মম হামলার শিকার হয়েছেন তুষার কান্তির ভাই নীহার কান্তিসহ কয়েকজন। হামলার ঘটনায় জড়িত কয়েকজন দুর্বৃত্ত গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেলেও স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্রের যোগসাজসে রতন বড়ুয়ার পরিবার ওই জায়গা দখলে নেওয়ার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

হামলায় আহত নীহার কান্তি দাশ জানান, সাম্প্রতিক সময়ে দীর্ঘদিন ধরে আশ্রিত রতন বড়ুয়া বোন সঞ্জু বড়ুয়াসহ স্থানীয় প্রভাবশালী মহল পুরো জায়গাটি দখল করে নেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। নিজের জায়গাতেই এখন আমরা যেতে পারছি না। গেলেই হামলার শিকার হতে হচ্ছে। তিনি আরো জানান, সম্প্রতি ওই জায়গায় সরকারি অনুমোদন নিয়ে পানি ও বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়াসহ কিছু উন্নয়ন কাজ করতে গেলে সঞ্জু বড়ুয়া ও তার ছেলেসহ স্থানীয় কতিপয় মাস্তান বাহিনীর হামলার শিকার হন তারা। এই ঘটনায় রাঙামাটি কোতোয়ালী থানায় ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলো— সঞ্জু বড়ুয়া, মানিক বড়ুয়া, সজিব বড়ুয়া, বিথীকা বড়ুয়া, বাবুল দাশ, মিল্টন বড়ুয়া। তাদের মধ্যে মানিক বড়ুয়া এবং বাবুল দাশকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্য আসামিরা স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় প্রকাশ্যে তুষার কান্তি এবং নীহার কান্তির পরিবারকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, আশ্রিত থাকা সঞ্জু বড়ুয়া স্বীকার করেন তারা এই জায়গার মালিক নন। তিনি জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে এই জায়গায় বসবাস করছেন। বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন। কিন্তু জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে কোনো সাড়া পাননি।

তুষার কান্তি দাশের ছেলে তুহিন দাশ বলেন, এই জমি ১৯৮১/৮২ সালে আমার বাবার নামে বন্দোবস্ত দিয়েছে সরকার। উত্তরাধিকার সূত্রে আমরাই এখন এই জায়গার মালিক। যা ইতোমধ্যে আদালতের মাধ্যমেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই জায়গা নতুন করে অন্য কাউকে বন্দোবস্ত দেওয়ার সুযোগ নেই। পরে ওই জায়গায় আশ্রিতরা স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের পৃষ্ঠপোষকতায় আমাদের ৪০ বছর আগের মালিকানার জায়গা দখলে নিতে অপচেষ্টা ও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন তুহিন দাশ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App