×

সারাদেশ

চন্দ্রদ্বীপ বিদ্যুৎ প্রকল্পে দালালের হানা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২০, ০৬:৪৭ পিএম

চন্দ্রদ্বীপ বিদ্যুৎ প্রকল্পে দালালের হানা
বাউফলের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন প্রমত্তা তেঁতুলিয়া নদীবেস্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার জন্য সারে ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে গৃহীত প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আগামি ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর জানিয়েছেন। পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফল জোনের আওতায় একাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এদিকে বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপণ ও সংযোগ তার টানার মধ্যেই দালালরা গ্রাহকদের দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ পাইয়ে দিতে ৫ থেকে ৬ হাজার করে টাকা আদায় করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্র জানায়, জরিপ অনুযায়ী চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের প্রায় তিন হাজার গ্রাহক রয়েছে। তবে স্থানীয়রা জানান, গ্রাহক সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই গ্রাহকদের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার জন্য ২৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২৬ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে প্রমত্তা তেঁতুলিয়া নদীর তলদেশ দিয়ে লাইন নেয়ার জন্য এক কিলোমিটার সাবমেরিন কেবল লাইন স্থাপণ করতে হবে। এছাড়া চন্দ্রদ্বীপের জন্য বাউফলের গোসিংগা সাব-স্টেশন থেকে ভিন্ন একটি গ্রীড লাইনও নির্মাণ করা হচ্ছে। গত জুলাই মাস থেকে শুরু করে ইতিমধ্যেই শতকরা ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২১ সালের ১৭ মার্চ বিদ্যুৎ সংযোগ লাইনের উদ্বোধন করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পটুয়াখালী থেকে বাউফল পর্যন্ত গ্রীডের সাব স্টেশন করা না হলে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটতে পারে। বাউফল পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্র জানিয়েছেন, চন্দ্রদ্বীপের জন্য কোন অভিযোগ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পণা এই প্রকল্পের মধ্যে ধরা হয়নি। ফলে বাউফল থেকে প্রমত্তা তেঁতুলিয়া নদী পাড়ি দিয়ে চন্দ্রদ্বীপে কাজ করতে হবে। যাহা গ্রাহক এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এদিকে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে বিদ্যুৎ লাইনের কাজ শুরু হতেই গ্রাহকদের ঘর ওয়ারিং ও দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগে দেয়ার নাম করে পাঁচ থেকে ছয় হাজার করে টাকা আদায় করা হচ্ছে। চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শাহাবুদ্দিন ওই টাকা আদায় করছেন বলে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের অনেক গ্রাহকরা জানিয়েছেন। বিষয়টি বাউফল পল্লী বিদ্যুৎ অফিস জানার পর চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে মাইকিং করে দালালদের খপ্পরে না পরার জন্য গ্রাহকদের অনুরোধ করা হয়েছে। ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শাহাবুদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিদ্যুৎ সংযোগ লাইন স্থাপণের খবরে বাউফলের মূল ভূখণ্ড থেকে চন্দ্রচন্দ্রদ্বীপ একাধিক ইলেকট্রিশিয়ান চরে এসে গ্রাহকদের ঘর ওয়ারিং করার প্রস্তাব দেয়। তারা গ্রাহকদের থেকে বেশি টাকা দাবি করেন। যার প্রেক্ষিতে চন্দ্রদ্বীপের গ্রাহকদের সুবিধার জন্য আমি মাত্র তেইশ জনের থেকে পাঁচ হাজার করে টাকা নিয়েছি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যাক্তি জানান, অনেক গ্রাহকের কাছ থেকেই টাকা নেয়া হয়েছে। তারা ভয়ে মুখ খুলছেন না। চন্দ্রদ্বীপের মানুষ তাদের কাছে জিম্মি। শাহাবুদ্দিনের সাথে আরো কয়েকজন দালালও রয়েছেন। এবিষয়ে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক আলকাচ মোল্লা জানান, গ্রাহকদের ঘর তারা নিজেরাই ইলেকট্রিশিয়ান দিয়ে ওয়ারিং করিয়ে নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বাউফল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার এক.কে.এম. আজাদ জানান, চন্দ্রদ্বীপের গ্রাহকদের থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে এমন খবরে আমরা দালালের খপ্পরে না পরার জন্য মাইকিং করিয়েছি। এরপরেও গ্রাহকরা কাউকে টাকা দিলে সেটা তাদের দায়িত্ব। প্রতি গ্রাহকের ঘর ওয়ারিং এবং মিটারসহ বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে দুই হাজার টাকা লাগতে পারে। তিনি জানান, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়ার জন্য বাউফলে গ্রীড সাব স্টেশন করার প্রস্তাব অনেক আগেই দেয়া হয়েছে। যাহা এখন মন্ত্রণালয়ে আছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App