×

সারাদেশ

জননেতা আজিজুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী আজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২০, ১২:৫৫ পিএম

জননেতা আজিজুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী আজ

জননেতা আজিজুর রহমান (ফাইল ছবি)

আজ ১ নভেম্বর। বৃহত্তর দিনাজপুর জেলায় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম শীর্ষ সংগঠক জননেতা এডভোকেট মো. আজিজুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী আজ। ১৯২০ সালের আজকের দিনে তৎকালীন ঠাকুরগাঁও মহকুমার মোহম্মদপুর গ্রামে স্বদেশী বিপ্লবী মওলানা আকিমুদ্দিন সরকার ও মা আলেকজা নেসার কোল আলো করে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯১ সালের ৪ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন জননেতা আজিজুর রহমান। কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধুর সহপাঠী হিসেবে তারা একই সঙ্গে বেকার হোস্টেলে থাকতেন। গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অনুসারী হিসেবে রাজনীতি করতেন কলকাতায়। তিনি ছিলেন মেধাবী ও মানবিক গুনাবলি সম্পন্ন একজন নেতা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে ১৯৫২ সালে আওয়ামী লীগের প্রথম দিনাজপুর জেলা কমিটির সহসভাপতি মনোনীত হন তিনি। ওই কমিটির সভাপতি ছিলেন রহিমুদ্দিন উকিল। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা ঘোষণার পর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের জেল-জুলুমের ভয়ে রহিমুদ্দিন দল ছাড়েন। দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগ ফাঁকা হয়ে পড়ে। তখন বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে রাজপথে নামেন অকুতোভয় আজিজুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের মাধ্যমে দিনাজপুর জেলার এক প্রান্ত হতে আরেক প্রান্তে টিনের চোঙ্গা হাতে ছুটে অকুতোভয় নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা দিয়ে ক্রমান্বয়ে দলকে চাঙ্গা করেন তিনি। ১৯৬৭ থেকে ১৯৬৯ এবং ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ তাকে নেতাকর্মীরা দিনাজপুর জেলা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করেন। বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় তিনি জেলার নেতাকর্মী ও তরুণদের সংগঠিত করেন। ১৩ এপ্রিল দিনাজপুর পাকিস্তানি সৈন্যদের দখলে চলে গেলে বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আঙ্গিক বদলে তাকে সভাপতি করে বৃহত্তর দিনাজপুর জেলা মুক্তিসংগ্রাম সমন্বয় পরিষদ গঠিত হয়। মুজিবনগর সরকার ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে তাকে মুক্তিযুদ্ধের ৭ নং এবং ৬ নং সেক্টর (অর্ধেক) অঞ্চলের লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদমর্যাদায় সিভিল অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজার, ফ্রিডমফাইটার্স রিক্রুটিং ও লিয়াজোঁ অফিসারের দায়িত্ব দেয়। এরপর তিনি পশ্চিমাঞ্চল প্রশাসনিক ‘ক’ জোনের প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। তিনি কয়েক দফা সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেন। একমাত্র বেসামরিক ব্যক্তি হিসেবে মিত্রবাহিনীর অগ্রগামী দলের সঙ্গে ৪ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও প্রবেশ করে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়ান তিনি। অন্যদিকে দেশদ্রোহিতা ও ৩ হাজার লোককে গণহত্যার অভিযোগে ৭১ সালের অক্টোবরে তার অনুপস্থিতিতে পাকিস্তানের সামরিক আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে। দিনাজপুরের ইতিহাস সমগ্রের ৫ম খণ্ডে প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ মেহরাব আলী লিখেছেন, দিনাজপুর বারের লব্ধ প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী, সুলেখক, সম্পাদক, সাংসদ ও রাজনীতিবিদ, দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহম্মদ আজিজুর রহমান ‘আওয়াজ’ নামে দিনাজপুরের সাপ্তাহিক পত্রিকা বার করেন ১৯৫৫ সালে। ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের সূত্র ধরে বাঙালির জাতিসত্তা সৃষ্টিতে নবচেতনার উন্মেষ, রাজনীতিতে বিরোধী দলের উদ্ভব, স্বাধিকার ও সাধারণ নির্বাচনের দাবি, পাকিস্তানি স্বৈরশাসনে জর্জরিত জনজীবন। এমনই এক অস্থির পরিস্থিতিতে ‘সাপ্তাহিক আওয়াজ’ জেলাবাসীর মধ্যে অসাধারণ চেতনা জাগায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App