নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ-ভাংচুর
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৪, ১১:০৩ পিএম
ছবি: ভোরের কাগজ
নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ-ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। তবে এসময় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। শনিবার (৩ আগস্ট) বিকাল ৫টার দিকে এই অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার বিকাল ৩টার দিকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও তাদের সমর্থকরা জেলা শহর মাইজদী বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিক্ষোভকারীরা জেলা শহর মাইজদীতে অবস্থান নেয়। এসময় তারা সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
একপর্যায়ে আন্দোলনকারী ও তাদের সমর্থকরা বিকেল ৪টার দিকে জেলা শহর মাইজদীর টাউন হল মোড়ে অবস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দফায় দফায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। বিকাল ৫টার দিকে হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে কার্যালয়ে থাকা আসবাবপত্রে অগ্নিসংযোগ করে ব্যাপক ভাংচুর চালায়।
এসময় তারা সেখানে কোনো বাঁধা ছাড়া ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান করে তাণ্ডব চালায়। দলীয় একাধিক নেতাকর্মী জানায় হামলার সময় সেখানে কোনো দলীয় নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছিলেন না। আন্দোলনকারীরা চলে গেলে পরে দলীয় কিছু নেতাকর্মী, ব্যবসায়ী ও পথচারীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়।
স্থানীয়রা জানায়, আওয়ামী লীগ অফিসে অগ্নিসংযোগ করা হলে মাইজদী ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য বের হওয়ার চেষ্টা করলে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও সুধারাম মডেল থানার সামনে অবস্থান করে আন্দোলনকারীরা। এসময় তারা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে বের হতে দেয়নি। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আন্দোলনকারীরা সরে গেলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম বলেন, এ হামলায় কোটা আন্দোলনকারীরা নয়, দুষ্কৃতিকারী ও দুর্বৃত্তরা জড়িত ছিল। এরা এখন ছাত্র আন্দোলন নয়, জ্বালাও-পোড়াও করে দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ চলাকালীন শনিবার বিকালে দুর্বৃত্তরা সুধারাম মডেল থানায় অবস্থানরত পুলিশ সদস্যদেরকে উদ্দেশ্য করে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে এক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। এসময় বিভিন্ন দিক থেকে দুর্বৃত্তরা থানায় অবস্থানরত পুলিশ সদস্যদেরকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল এবং ঢিল ছুঁড়তে থাকে। এতে প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও থানার বিল্ডিংয়ের জানালার কাঁচ ভেঙ্গে চৌচির হয়ে যায়।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হামলা, গুলি, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।