মধ্যনগরের নদ-নদীতে পানি বাড়ায় ক্ষয়ক্ষতি ও ভোগান্তি বেড়েছে
রাসেল আহমদ, মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) থেকে
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০৪:০০ পিএম
ছবি: ভোরের কাগজ
সুনামগঞ্জের সবচেয়ে নিম্নাঞ্চল মধ্যনগরের নদ-নদীতে বাড়ছে পানি। এতে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশংকা রয়েছে। মধ্যনগরে প্রথম দফার বন্যার পানি নামতে না নামতেই দ্বিতীয় দফার বন্যায় বাড়িঘর, রাস্তাঘাট পুনরায় প্লাবিত হওয়ায় মানুষের ক্ষয়-ক্ষতি বেড়েছে, ভোগান্তিও বেড়েছে।
উপজেলার প্রধান সড়ক মহিষখলা হতে মধ্যনগর সড়কের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ভেঙে খাল সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের অধিকাংশ আফালের তাণ্ডবে ভেঙে সরু হয়ে গেছে। অপর দিকে গ্রামীণ কাচাঁ-পাকা রাস্তা গুলো থেকে দীর্ঘদিন ধরে নামছে না বন্যার পানি। ফলে মানুষ ঘরবাড়ী থেকে নৌকা ছাড়া বেরোতে পারছেনা। তাই মধ্যনগর উপজেলার শতাধিক গ্রামের অর্ধ-লক্ষাধিক মানুষ কার্যত এখনো পানিবন্দি হয়ে রয়েছে।
মধ্যনগর উপজেলার নদ-নদীগুলো ভারতের মেঘালয় থেকে পাশের নেত্রকোনা জেলা হয়ে মধ্যনগরে প্রবেশ করেছে। এ জন্য মধ্যনগরের প্রধান দুইটি নদ-নদী সোমেশ্বরী ও উব্দাখালীতে পানির পরিমাপ সম্পর্কে তথ্যাদি সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হয়।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারোয়ার জাহান ভোরের কাগজকে জানিয়েছেন, শনিবার (৬ জুলাই) সকাল ৯ টায় সোমেশ্বরী নদীর দূর্গাপুর পয়েন্টে ২.৬৫ মিটার বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উব্দাখালী নদে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ সেন্টিমিটার পানি কমে বিপদ সীমার ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরো পড়ুন: গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি
সোমেশ্বরী ও উব্দাখালী নদীর নেত্রকোনা অঞ্চলে পানি কমলে নিম্নাঞ্চল মধ্যনগরে ওই দুই নদীর পানি বাড়ে। মধ্যনগর উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নুর আলম জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে আজ (শনিবার) সকাল ৯টা পর্যন্ত মধ্যনগরে সোমেশ্বরী ও উব্দাখালী নদীর পানি বেড়েছে ৩ সেন্টিমিটার। এতে অস্বস্তি ও শঙ্কায় রয়েছেন এখানকার মানুষ।
মধ্যনগর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, পানি তো কমছেই না বরং কিছুটা বাড়তির দিকে। রাস্তাঘাটেও পানি। ঘরবাড়ী থেকে বেড়োতে হলে নৌকা ছাড়া উপায় নেই। এছাড়া টাঙ্গুয়ার হাওরের ঢেউয়ে বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি করছে। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠা অসম্ভব।
উপজেলার আলমপুর নয়াপাড়া গ্রামের রুবেল মিয়া বলেন, বন্যার পানি বাড়ির ভিতরে ঢুকেছে। এখনো নামছে না। বরং বাড়ছে। আফালের তাণ্ডবে সারা গ্রামের সবার বাড়ী থেকে ৪/৫ হাত মাটি সরে গেছে।বাড়ির আঙিনা ছোট হয়ে আসছে। এভাবে চলতে থাকলে গ্রাম বসবাসের উপযোগী থাকবে না।
মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অতীশ দর্শী চাকমা জানান, নদ-নদীতে পানি কিছুটা বাড়লেও বন্যা পরিস্থিতির তেমন অবনতি হয়নি। তবে পরিস্থিতির অবনতি হলে বন্যা মোকাবিলায় আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে চারটি ইউনিয়ন পরিষদের জনবল ও স্বেচ্ছাসেবক টিম। রয়েছে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও ত্রাণ সামগ্রী। উপজেলার ৬০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।