×

সারাদেশ

গরমের মধ্যে পাবনা-যশোরে কুয়াশা

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ০৮:৩৮ এএম

গরমের মধ্যে পাবনা-যশোরে কুয়াশা

ছবি: সংগৃহীত

সারাদেশে চলা তাপপ্রবাহের মধ্যে কুয়াশার চাদরে ঢেকেছে পাবনার বিভিন্ন উপজেলা ও যশোরের চৌগাছার প্রকৃতি। শুক্রবার ভোরে এ দৃশ্য দেখে বিস্মিত হয়েছেন ওইসব অঞ্চলের অনেকে। তবে কুয়াশা দেখে আতঙ্ক বা বিস্ময়ের কিছু নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

পাবনা শহরের শালগাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মুক্তার হোসেন বলেন, ভোরে নামাজ পড়ে রাস্তায় একটু হাঁটছিলাম। হাঠাৎ দেখি কুয়াশা। দেখে তো মনে হয়েছে ঠাণ্ডার সময় যেভাবে কুয়াশা পড়ে তেমনি। দিনের বেলা গরম, আবার ভোর বেলায় কুয়াশা। বিষয়টি নিয়ে আমি চিন্তায় পড়ে যাই। 

আকস্মিক কুয়াশা দেখে আতঙ্কিত হয়ে যান শহরের সরদারপাড়া এলাকার মানিক তালুকদার। তিনি বলেন,  এই জীবনে আর কত কী দেখব। আগে শীতের সময় কুয়াশা দেখতে পেতাম, এখন তো গরমের সময়ও কুয়াশা পাচ্ছি। পরিবেশের যে কী হচ্ছে, তা বুঝতে পারছি না। 

গরমকালে কুয়াশা দেখে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঈশ্বরদী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন। তিনি বলেন, ভোরের দিকে সূর্যের আলো পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে থাকা ওই অতিরিক্ত জলীয়বাষ্প কুয়াশার মতো করে ভাসতে থাকে। যা দেখে নিচু মেঘের মতো মনে হয়েছে। 

গরমকালে এটি কীভাবে হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাতের আকাশ মেঘমুক্ত থাকায় ভূপৃষ্ঠ খুব ঠান্ডা হয়। তাপ বিকিরণ করে ভোর থেকে সকাল ৮টার মধ্যে তাপমাত্রা দ্রুত কমে ২৫-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে চলে আসে। এই তাপমাত্রা কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া তৈরি করে। এছাড়া যেখানে তাপমাত্রার ওঠানামা বেশি, সেখানেই কুয়াশা তৈরির সুযোগ বেশি থাকে।

এ আবহাওয়া কর্মকর্তা বলেন, এছাড়া বাতাসে ধুলিকণার পরিমাণ বেশি এবং দক্ষিণা বাতাস অনেক কম থাকাটাও এটির একটা বড় কারণ। এটা প্রকৃতির স্বাভাবিকতা। এতে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই। বরং এতে আম, লিচুসহ অন্যান্য ফসলের ফলন ভালো হবে। অন্যদিকে রোদের প্রখরতা আছে। তাই পরিবেশে এই উষ্ণতা দেখা যাচ্ছে।

শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়তে থাকে যশোরের চৌগাছা উপজেলায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর তীব্রতাও বাড়তে থাকে। এদিন ভোরের আলো দেখা সম্ভব হয়নি ওই এলাকার মানুষের। সকাল ৮টা পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা ছিল গোটা উপজেলা। সকালে উপজেলার পাতিবিলা, ইছাপুর, সাদিপুর মুক্তদাহ, তেঘরী, জগদীশপুরসহ বেশ কিছু গ্রামাঞ্চল ঘুরে দেখা যায় কুয়াশার দাপট।

অনেকের কাছে মনে হয়েছে, এ যেন পৌষের সকাল। কুয়াশার পরিমাণ এতটাই বেশি ছিল যে, সড়কে ১০ হাত দূরে কিছুই দেখা যায়নি। হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হয়েছে সব ধরনের বাহনকে। স্বাভাবিক কাজে ঘটেছে বিঘ্ন। আর কৃষক কুয়াশার কারণে সময়মত কাজে বের হতে পারেনি কৃষক। এমন আবহাওয়ায় বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খবর নিয়ে জানা গেছে, ভোরে অধিকাংশ এলাকাতে ঘন কুয়াশা থাকলেও সকাল ৮টার পর ছড়িয়ে পড়ে তাপপ্রবাহ।

এ বিষয়ে খুলনা আবহাওয়া দপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবীদ আমিরুল আজাদ বলছেন, এটা হতে পারে। এখন আকাশে মেঘের ঘনঘটা। মেঘ কয়েক স্তরে ভাগ হয়ে অবস্থান করছে। যে অঞ্চলে ‘লো ক্লাউড’ সেখানে ‘সারফেজ’ গরম হওয়ার কারণে মেঘ কুয়াশা আকারে নেমে আসে। যেখানে ঘন মেঘ, সেখানে নেমে আসে বৃষ্টি আকারে। যেমন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট এলাকায় হচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App