×

সারাদেশ

নায়েব রাজ্জাকের খুঁটির জোর কোথায়? (ভিডিও)

Icon

জিয়াউর রহমান রিন্টু, চৌগাছা (যশোর)

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৩ পিএম

নায়েব রাজ্জাকের খুঁটির জোর কোথায়? (ভিডিও)

ছবি: ভোরের কাগজ

  • নিউজ করে আমার কিছুই হবে না, আমি উপর ম্যানেজ করে চলি!

 “যতই নিউজ হোক না কেনো আমার কিছুই হবে না। কারণ আমি উপর ম্যানেজ করে চলি।” ঘুষ কেলেঙ্কারির ভিডিও এবং বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের অভিযোগে নিয়ে ৩০ মার্চ ও ১ এপ্রিল নারায়নপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব আব্দুর রাজ্জাকের ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনায় দৈনিক ভোরের কাগজ প্রিন্ট, অন লাইন এবং ভোরের কাগজ ডিজিটালে দুইদিন (ভিডিওসহ) খবর প্রকাশিত হয়। পরে যশোরের জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ঘুষ গ্রহণের ভিডিও সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে চেয়ে সহকারী কমিশনার ভূমি (এসি ল্যান্ড) নায়েবকে চিঠি দেন। 

এবং ১৬ এপ্রিল যশোর জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সুজন সরকার নারায়নপুর ভূমি অফিস পরিদর্শন করবেন বলে সহকারি কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) গুঞ্জন বিশ্বাস জানিয়েছিলেন। কিন্তু জরুরি কারণ থাকায় এডিসি (অর্থ) সেই পরিদর্শন বাতিল করেন। তখন একজন আওয়ামী নেতার সঙ্গে এভাবেই দম্ভোক্তি করেন নায়েব আব্দুর রাজ্জাক।

এদিকে নায়েব রাজ্জাকের খুঁটির জোর জানতে তার পুরনো কর্মস্থল নিজ উপজেলা মনিরামপুরের হরিহর ইউনিয়নে হাজির হয় ভোরের কাগজের এই প্রতিবেদক। সরেজমিনে জানা যায়, সেখানে সরকারি গুচ্ছ গ্রামে একজনকে একটি ঘর দেবেন চুক্তিতে নায়েব ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। পরে ঘর বা টাকা কোনোটাই না দেয়ায় স্থানীয়রা তাকে ধরে বেদম মারপিট করে। তখন (সাবেক) চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম তাকে বাঁচিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন হরিহরনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম। 

কথার শুরুতে কালাম বলেন, রাজ্জাক একটা বেয়াদপ। যেখানেই গেছে সেখানেই দুর্নীতি করেছে। তিনি বলেন, গুচ্ছগ্রামের ওই ঘটনায় সেসময়কার জেলা প্রশাসকের নির্দেশে মনিরামপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) সাইমা হাসান ঘটনা তদন্ত করে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেন। তবে পরে সাইমা হাসান এবং তৎকালিন জেলা প্রশাসক বদলি হয়ে গেলে আব্দুর রাজ্জাক চৌগাছায় বদলি হয়ে চলে যান। 

কালাম আরো বলেন, এর আগে রাজ্জাক তার শ্বশুড় বাড়ি ভোজগাতি উইনিয়ন ভূমি অফিসে ছিলেন। সেখানে এই রাজ্জাকের বিরুদ্ধে ঋষি সম্প্রদায়ের দুজন বাদী হয়ে বিভাগীয় মামলা করেছিলেন। 

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে নায়েব রাজ্জাকের সঙ্গে দীর্ঘদিন চাকরি করা অফিস সহায়ক আব্দুল আজিজ বলেন, সেই সময় রাজ্জাক পালিয়ে বেড়াতেন। শেষে মনিরামপুরের তৎকালিন ইউএনও তাকে বাঁচিয়েছিলেন। পরে তার শ্বশুড় বাড়ির লোকজন মামলার বাদীদের সঙ্গে মামলার সমাধান করেন।

এসব ঘটনার বিষয়ে জানতে নায়েব রাজ্জাককে (২ দিন) মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে এতো কিছুর পরেও যখন নায়েব রাজ্জাক একের পর এক ইউনিয়ন ভূমি অফিসে চাকরি করে চলেছেন তখন তার খুঁটির জোর অবশ্যই শক্ত বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। 

প্রেসক্লাব চৌগাছার সভাপতি অধ্যক্ষ আবু জাফর হাসতে হাসতে বলেন, ২০২২ সালের মে মাসে স্বরুপদহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একটি অডিও ভাইরাল হয়। সেই ঘটনায় নায়েব জাহাঙ্গীর সাময়িক বহিষ্কার হয়েছিল। কিন্তু নায়েব রাজ্জাকের বিরুদ্ধে অভিযোগের এতো প্রমাণ থাকতেও কিছু হচ্ছে না। এটাতো ভাববার বিষয়! কারণ নায়েব রাজ্জাক আমাকেও একটি কাজের জন্য ৮ মাস ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়িয়েছেন।

তবে সব বিষয় জানিয়ে চৌগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) গুঞ্জন বিশ্বাসের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, নায়েব রাজ্জাকের চিঠির উত্তর এবং সব দলিল ডিসি স্যারকে পাঠানো হয়েছে। ডিসি স্যারের পরবর্তী নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App