×

সারাদেশ

ক্ষেতলালে বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি

Icon

ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) থেকে

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩২ পিএম

ক্ষেতলালে বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি

ছবি: সংগৃহীত

ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী প্রচারণায় বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে ৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে সেখানে এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি এবং ত্রিমুখী সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা তৈরি হয়। খবর পেয়ে ক্ষেতলাল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাতে উপজেলার পাঠানপাড়া বাজারে এমন ঘটনার সৃষ্টি হয়। 

জানা গেছে, আগামী ৮ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দুলাল মিয়া সর্দার উপজেলার পাঠানপাড়া বাজারে নির্বাচনী ক্যাম্প উদ্বোধন করতে যান। এ সময় ক্যাম্প উদ্বোধন শেষে চেয়ারম্যান প্রার্থী দুলাল মিয়া সরদারের পক্ষে মামুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম বক্তব্য রাখেন। বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মন্ডল এর কর্মী আব্দুল বারিক মন্ডল ও তার সমর্থকদের চিটার-বাটপার বলেন এমন অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে মোস্তাকিম মণ্ডলের সমর্থক উপজেলার হোপ গ্রামের বাবলু এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান প্রার্থী দুলাল মিয়া সরদারের সমর্থকেরা মারধর শুরু করেন বলে বাবলু  জানান।

এ ছাড়া এ সময় উপস্থিত অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তাইফুল ইসলাম তালুকদারের এক সমর্থক আব্দুল কুদ্দুসও মশিউর রহমান শামীম এর বক্তব্যের সমালোচনা করলে তাকেও মারধর করা হয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মন্ডল ও চেয়ারম্যান প্রার্থী তাইফুল ইসলাম তালুকদারের শতশত কর্মী-সমর্থক পাঠানপাড়া বাজারে জমা হতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীমের উপর হামলা করার চেষ্টা করে। এতে পাঠানপাড়া বাজারে এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং ত্রিমুখী সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা দেখা দেয়। 

তবে খবর পেয়ে ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন ও তদন্ত অফিসার পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে মামুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীমসহ ও দুলাল মিয়া সরদারের কর্মী সমর্থক দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। 

খবর পেয়ে চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মন্ডল এবং তাইফুল ইসলাম তালুকদার ঘটনাস্থলে ছুটে যান। 

মারধরের শিকার বাবলু জানান, দুলাল হাজীর অফিস উদ্বোধনের সময় বক্তব্যে মশিউর চেয়ারম্যান বারিক চেয়ারম্যানকে চিটার-বাটপাড় বলে। তখন আমি বলি যে তুমি কি ভোটের ডিলার হচিন (হয়েছেন)? তুমি একজনকে চিটার-বাটপাড় করে কচিন মানে! এ নিয়ে দুলালের লোকেরা আমাকে পাঞ্জা করে ধরে মারছে।

মারধরের শিকার তাইফুল ইসলাম তালুকদারের সমর্থক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আমরা দোকানে বসে আছি একজন বললো তোর ভাইকে ধরিছে। আমি এসে শুধু বলছি রাজনীতির বিষয়ে যে যাই বলুক পাবলিক ধরা লাগবে কেন? কওয়া (বলা) আর আমাকে মারতে শুরু করছে। যারা মারছে তারা দুলাল হাজির লোক।

চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান তাইফুল ইসলাম তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, সন্ত্রাসীর মত তারা নির্বাচন করতিছে। এটা প্রশাসন না দেখলে তো ভীষণ সমস্যা। প্রশাসনকে তো অবশ্যই দেখতে হবে। আমার ছেলেপেলেদের মারতিছে। ভুল হোক আর যেভাবেই হোক টেনে নিয়ে গিয়ে মারতিছে। সেটা বলাই অপরাধ। তাহলে আমার ছেলেপেলে থাকবে কীভাবে। আমি ওসি সাহেবের সাথে বসব, দেখি তিনি কি করেন।

এ বিষয়ে মামুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম মুঠো ফোনে ভোরের কাগজকে জানান, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এক ভোট পেলেও পাশ করবে, এমন কথার প্রেক্ষিতে বক্তব্যে বলেছি, এক ভোট পেলেই পাশ কিনা তা ৮ তারিখে বুঝতে পারবে। এই সময় এক ব্যক্তি উল্টোপাল্টা কথা বললে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। কাউকে মারধর করা হয়নি বা মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী দুলাল মিয়া সর্দার জানান, আমরা মিটিং করতেছিলাম। মিটিং চলাকালীন ওরা মিটিংয়ের মধ্যে এসে বলে এই তোরা কি ভোটের এজেন্ট হচু (হয়েছ)? তাহলে আমার লোকজন যদি ওখানে ক্ষেপে গিয়ে মারামারি করত তাহলে কি হত? আমি তখনতো সব লোকজনকে ডেকে নিয়ে বলেছি এদিকে এসো, ওই লোক বলিছে বলুক। কিন্তু বলাতো যাবেনা। আমি আজকে বক্তব্য দিয়ে আসলাম। কাল আরেকজন দিবে। কিন্তু কাউন্টারতো দেয়া যাবেনা।

ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, সেখানে হাতাহাতি বা কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি। মামুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম মোস্তাকিম চেয়ারম্যানের লোকজনকে কটাক্ষ করে কথা বলে। এ নিয়ে মোস্তাকিম চেয়ারম্যানের লোকজন উত্তেজিত হয়। খবর পেয়ে আমি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App