×

সারাদেশ

সারা ফেলেছে ‘গরিবের গোস্ত সমিতি’

Icon

ডিমলা, নীলফামারী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২৪ পিএম

সারা ফেলেছে ‘গরিবের গোস্ত সমিতি’

ছবি: ভোরের কাগজ

নীলফামারী ডিমলা উপজেলায় গত পাঁচ বছরে “গরিবের গোশত সমিতি” ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। উপজেলায় নিম্ন মধ্যবিত্তের এ সমিতির সংখ্যা প্রায় ১০০ টির বেশি। বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা হলেও এই সমিতির কারণে কেজি গোশতের মূল্য পড়বে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা।

প্রতিটি ঈদে এক টুকরো মাংস খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জাগে নিম্ন আয়ের মানুষের। দীর্ঘদিনের জমানো চাঁদার টাকায় এবার ঈদে মাংস খাবে দরিদ্র সারির প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। মাংস ক্রয় সহজ করতেই গ্রামের নিম্ন আয়ের মানুষ গড়ে তুলেছে “মাংস সমিতি”।

বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ঘুরে দেখা গেছে, ১০ থেকে ৫০ জনের নিম্ন আয়ের মানুষেরা প্রতি পাড়া মহল্লায় একটি করে সমিতি গঠন করেছে। এই সমিতির কোথাও নাম দিয়েছে, গরিবের মাংস সমিতি, গরু সমিতি কিংবা মাংস সমিতি।

আরো পড়ুন: পাথরঘাটা থানার ওসিকে প্রত্যারের নির্দেশ

সমিতির সদস্য ইসাহাক আলী বলেন, আমি অন্যের বাড়িতে কাজ করি, প্রতি সপ্তাহে ২০০ টাকা করে সমিতিতে চাঁদা দিয়েছি, জমাকৃত চাঁদার টাকায় আজকে আমরা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে গরু ক্রয় করেছি। তিনি বলেন, এই সমিতি না থাকলে আমরা একসঙ্গে দুই তিন হাজার টাকা দিতে পারতাম না। 

গয়াবাড়ির কৃষক জমির আলী বলেন, আমরা সাপ্তাহিক ১৫০ টাকা করে সমিতিতে চাঁদা দিয়েছি, ঈদের আগে জমানো এই চাঁদার টাকায় কেনা হয়েছে গরু। জবাই করে সমহারে সদস্যদের মধ্যে বণ্টন করা হয় মাংস। ফলে আমাদের সময় এবং টাকা দুটোই সাশ্রয় হয়েছে। 

উপজেলার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ঘুরে দেখা গেছে এমন পরিবেশের। কেউ ঈদের আগে জবাই করছে এবং কেউ কেউ ঈদের দিন জবাই করবে চাঁদার টাকায় কেনা এই গরুর মাংস।  

বালাপাড়া ইউনিয়নের ভ্যান চালক মোশাররফ হোসেন জানান, আমরা ৫০ জন সদস্য প্রায় আট মাস থেকে প্রতি সপ্তাহে ১৫০ টাকা করে দিয়েছি, গত সপ্তাহে একটি গরু কিনেছি, স্ত্রী সন্তানদেরকে নিয়ে এবার ভালোভাবে ঈদ করতে পারব। 

আরো পড়ুন: ঈদ উপহার নিয়ে গভীর রাতে গরিবের দরজায় মন্ত্রী

সদরের সর্দারহাট গ্রামের ইদ্রিস মিয়া বলেন, গত ৫ মাস থেকে ২২ জন মিলে চাঁদা সংগ্রহ করেছি, ১ লাখ টাকা দিয়ে একটি গরু ক্রয় করেছি। ঈদের নামাজ শেষে আমরা গরু জবাই করব। 

সমিতির সদস্যরা বলছে, বাজারে মাংস প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, এই সমিতির মাধ্যমে গরু কিনে বাজার দরের চেয়ে কম মূল্যে মাংস কিনতে পারব। এই সমিতিতে চাঁদা সংগ্রহ না করলে আমরা এভাবে মাংস কিনতে পারতাম না।  

শিঙ্গাহারার নওশাদ আলী বলেন, আমার চাঁদা জমা হয়েছে দুই হাজার পাঁচশত টাকা, আমি প্রায় চার কেজি মাংস পাবো বলে আশা করছি। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই গরিবের এই মাংস সমিতি ব্যাপক সারা ফেলেছে। লাভবান হওয়ায় এই সমিতির সংখ্যা ক্রমশ জনপ্রিয়তা লাভ করছে।

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন, এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ, নিম্ন আয়ের মানুষেরা ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে পারবে, এ ধরনের গোশত সমিতির মাধ্যমে সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষেরা গরুর মাংস খেতে পারবে, এটি আমাদের জন্য একটি আনন্দের খবর। তিনি সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। 

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App