×

সারাদেশ

সিংগাইরে পাড়া-মহল্লায় সাড়া ফেলেছে 'মাংস সমিতি'

Icon

মাসুম বাদশাহ, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪৩ এএম

সিংগাইরে পাড়া-মহল্লায় সাড়া ফেলেছে 'মাংস সমিতি'

ছবি: ভোরের কাগজ

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের ব্যতিক্রমী ‘গোশত বা মাংস ’ সমিতি।

বাংলাদেশে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও ক্রীড়াসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষেরই একটা-দুটো করে সমিতি রয়েছে। তারমধ্যে সমসাময়িক সময়ে লোকজনের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে মাংস বা গোসত সমিতি। 

প্রথম দিকে এ সমিতির কথা শুনে অনেকেই অবাক হলেও বর্তমানে লোকজন এ সমিতি থেকে উপকৃত হওয়ায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাড়া -মহল্লায় এর প্রচলন ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। সিংগাইরে গ্রাম-পাড়া বা মহল্লায় ঈদুল ফিতর সামনে রেখে এ ধরনের মাংসের সমিতি গঠন করা হয়।

মাংস সমিতির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর বাড়ছে মাংস সমিতির সংখ্যা। প্রতিটি মাংস সমিতির সদস্যসংখ্যা ৩০ থেকে ১০০ জন পর্যন্ত হয়ে থাকে। 

সমিতির অন্তর্ভুক্ত প্রতিজন সদস্য মাসে মাসে সমিতিতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রাখেন। বছর শেষে ঈদুল ফিতরের ঈদের আগে জমাকৃত অর্থ একত্র করে গরু কেনা হয়। ঈদের দিন বা তার দু'একদিন পূর্বেই এই পশু জবাই করে গোশত সমিতির প্রত্যেক সদস্যকে ভাগ করে দেয়া হয়। 

এতে ঈদ উদযাপনের ক্ষেত্রে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের ওপর আর্থিক চাপ যেমন কমে, তেমনি ঈদের আগে সবাই বাড়তি আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারেন। স্থানীয়দের ভাষায় এই সমিতির নাম ‘গোশত বা মাংস সমিতি’। অনেকের কাছে ‘গরু সমিতি’ নামেও পরিচিত। এ সমিতিতে সদস্য হয়ে উপকৃত হচ্ছেন দরিদ্র পরিবার।

ধল্লা ইউনিয়নের মেদুলিয়া গ্রামের গোসত সমিতির সদস্য মোকসেদ আলী মোল্লা, হারুন শেখ , জাহাঙ্গীর শেখ ও রায়হান জানান, তাদের সমিতিতে সদস্য ছিলেন এবার ২২ জন সদস্য। প্রতি মাসে সদস্য প্রতি ৫০০ টাকা করে অর্থ জমা রাখেন। বছর শেষে রোজার ঈদের পূর্বে জমানো টাকা দিয়ে গরু কিনে জবাই করে সমিতির সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। তুলনামূলক বাজার দরের চেয়ে কম দামে এবং এক সাথে বেশি পরিমাণ গোশত পেয়ে প্রত্যেকেই খুব খুশি হয়।

উপজেলার ধল্লা ইউনিয়ন ছাড়াও জয়মন্টপ, জামির্ত্তা, চান্দহর, বায়রা, তালেবপুর, শায়েস্তা, চারিগ্রাম, জামশা ও সিংগাইর সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের আরো অনেক সমিতি গড়ে উঠেছে। শবে কদরের দিন থেকে শুরু হয় সমিতির পশু জবাইয়ের কাজ। চলবে ঈদের দিন পর্যন্ত।

ধল্লা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, এলাকায় গোশত সমিতি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ সমিতির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গরুর মাংসের উচ্চমূল্য থাকলেও সমিতির কারণে ঈদুল ফিতরে এখন ঘরে ঘরে গরুর গোশত রান্না হয়। এ ধরনের সমিতির কারণে সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ আরো জোরদার হয়।

এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) পলাশ কুমার বলেন, সকল শ্রেণীর লোকজনের অংশগ্রহণে এ ধরনের গোশত সমিতি সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেই সঙ্গে সকলের মধ্যে ঈদের আনন্দটাও অনেক বাড়িয়ে দেয়। এটা খুবই ইতিবাচক উদ্যোগ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App