সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অসহায় মানুষের জন্য সরকারের সরকারের বরাদ্দকৃত সরকারি ৬০ বস্তা চাল উদ্ধারসহ দোকানের কর্মচারী সুহেলকে  (৩০) আটক করেছে দিরাই থানা পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের রাজানগর বাজার থেকে রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জুয়েলের ছোট ভাই আজহারুল 

ইসলামের দোকানের পেছনের গুদাম থেকে সহকারী কমিশনার ভূমি জনি রায় ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনির হুসেনের উপস্থিতিতে চাল উদ্ধার করে দিরাই থানা পুলিশ। এসময় দোকানের কর্মচারী সাগর মিয়াকে আটক করা হয়। 

এ ঘটনার পর রাতেই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাদী হয়ে রফিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শৈলেন চন্দ্র দাস তালুকদারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি চাল মজুতের দায়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করেন।

বিষয়টি নিয়ে রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জুয়েল জানান, উদ্ধারকৃত চালগুলো তার নয়, উনার ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দকৃত চাল তিনি গত বুধবারেই (৩ এপ্রিল) বিতরণ করে শেষ করেছেন। এ চাল কার তা জানিনা। 

জহিরুল ইসলাম জুয়েলের ছোট  ভাই রাজানগর বাজারের ব্যবসায়ী আজহারুল ইসলাম জানান, ওইদিন বিকেলে রফিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শৈলেন চন্দ্র দাস তাকে ফোন করে কিছু চাল বাজারে রাখার ব্যবস্থা করতে বলেন। উনার অনুরোধে আমার চাচাতো ভাইয়ের দোকানে চালগুলো রাখতে দিয়েছি। এগুলো উনার।

এ বিষয়ে রফিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শৈলেন চন্দ্র দাস বলেন, আমার ইউনিয়নের মেঘনা গ্রামে বিতরণের জন্য আজ (৪ এপ্রিল) গুদাম থেকে ৬০ বস্তা (৩০০০ কেজি) বিজিএফের সরকারী চাল উত্তোলন করে নিয়ে আসার সময় রাজানগর বাজার এলাকায় আসার পর বৃষ্টি চলে আসে। তাৎক্ষণিকভাবে আমি ফোন করে আজহারুলকে বলি চালগুলো একটি ঘরে রাখার ব্যবস্থা করার জন্য, পরে সে তার চাচার দোকানে রাখার ব্যবস্থা করে। বাড়ীতে আসার পর শুনি চাল নিয়ে ভেজাল হচ্ছে। 

সহকারী কমিশনার ভূমি জনি রায় বলেন, খবর পেয়ে রাজানগর বাজারে গিয়ে একটি দোকানে ৬০ বস্তা সরকারি চাল পাই। পরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারাসহ আমরা দিরাই থানা পুলিশের মাধ্যমে তা উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি।

দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, কালো বাজারে বিক্রির জন্য সরকারী চাল মজুতের অপরাধে রফিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শৈলেন চন্দ্র দাস তালুকদারসহ ৬ জনের নামে মামলা হয়েছে। এছাড়া আটককৃত একজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান খন্দকার জানান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনির হুসেন বাদী হয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। জড়িত কাউকেই ছাড় দেয়া হবেনা।