×

সারাদেশ

অরক্ষিত ঝিনারিয়া হাওর

ফসল হারানোর শঙ্কায় অর্ধশতাধিক জিরাতি পরিবার

Icon

মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৪, ০৫:৩৮ পিএম

ফসল হারানোর শঙ্কায় অর্ধশতাধিক জিরাতি পরিবার

ছবি: ভোরের কাগজ

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলায় এ বছর সরকারি বরাদ্দে নির্মাণ হয়নি ঝিনারিয়া ফসলরক্ষা বাঁধ। সেজন্য অরক্ষিত এই হাওরে ফসলডুবির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। দ্রুত সরকারি উদ্যোগে বাঁধ নির্মাণ করে ঝিনারিয়া হাওরটি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন তারা।

জানা যায়,  উপজেলার চামরদানি ইউনিয়নে দুর্গম হাওরের গ্রাম মোকসেদপুরে অস্থায়ীভাবে বসবাসকারী কৃষকদের স্থানীয়ভাবে জিরাতি বলা হয়। জিরাতিদের পূর্বপুরুষরা বৌলাই নদীর তীরে অবস্থিত মোকসেদপুর গ্রামে বসবাস করতেন। প্রায় ৫০-৬০ বছর আগে হাওরের প্রলয়ঙ্করী বন্যা ও চোর-ডাকাতের ভয়ে হাওরের মধ্যে অবস্থিত গ্রামটি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান বাসিন্দারা। তবে গ্রাম ছেড়ে চলে গেলেও এখনো প্রতি বোরো মৌসুমে ফেলে যাওয়া কৃষি জমিতে ফসল ফলাতে তারা মোকসেদপুরে আসেন। এজন্য ছন বা বনের ছাউনি দিয়ে অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করে ছয় মাসের জন্য পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে পাউবো’র অধীনে গুরমার হাওর উপ-প্রকল্পের আওতায় ১৯ নম্বর প্রকল্পের মাধ্যমে একটি ক্লোজারসহ প্রায় ৬০০ মিটার বাঁধ সংস্কার কাজের জন্য বরাদ্দ ছিলো প্রায় ২৩ লাখ টাকা। যার পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) সভাপতি ছিলেন কাহালা গ্রামের কৃষক প্রণয় তালুকদার। কিন্তু চলতি বছরে প্রকল্পটি সম্পূর্ণভাবে এ্যালাইনমেন্ট থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এ কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ড সেখানে বাঁধের সংস্কার ও ক্লোজার বন্ধের কাজ করেনি।

তবে সবটুকু বাঁধ সংস্কার নাহলেও ক্লোজারটি মাটি দিয়ে বন্ধ করা জরুরী দাবি করে মুকশেদপুরের জিরাতি কৃষকেরা জানান, সম্প্রতি বৌলাই নদীতে ঢলের পানি দেখা দিয়েছে আর মাত্র দুই ফুট পানি বাড়লেই পানি প্রবেশ করতে পারে হাওরে। এতে তলিয়ে যাবে অর্ধশতাধিক জিরাতিদের কষ্টের ফসল বোরো ধান। খাদ্য সংকটে থাকবে জিরাতিদের প্রায় ২শ গবাদিপশু। তাই দ্রুত বাঁধ নির্মাণে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি চান কৃষকরা।

মুকশেদপুরের জিরাতি কৃষক শংকর দাস, সুধন্য মল্লিক ও আব্দুল মজিদ জানান, প্রতি বছরেই ঝিনারিয়া হাওরে ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ হয়, কিন্তু এবছর হয়নি। দ্রুত ক্লোজারটি মাটি দিয়ে বন্ধ না করা হলে এই মুহূর্তে বৌলাই নদীতে আসা ঢলের পানি সহজেই ঝিনারিয়ার হাওরে ঢুকবে। এতে প্রায় পাঁচ-শতাধিক একর জমির বোরো ধান তলিয়ে যাবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাকর তালুকদার পান্না বলেন, ঝিনারিয়া ফসল রক্ষা বাঁধের সংস্কার ও ক্লোজার বন্ধ করার বিষয়ে এমপি সাহেব কথা বলেছেন। বাঁধটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক মধ্যনগরের ইউএনওকে বলেছেন। কিন্তু এখনো কিছুই হয়নি।

মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অতীশ দর্শী চাকমা জানান, বিষয়টি নিয়ে কৃষকদের বারবার দাবি উঠায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলা হয়েছে। ওই এলাকা আবারও সরেজমিনে পরিদর্শন করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App