×

সারাদেশ

মধ্যনগরে বাঁধের কাজ নিয়ে শঙ্কায় কৃষক

Icon

রাসেল আহমদ, মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) থেকে

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:৪৩ পিএম

মধ্যনগরে বাঁধের কাজ নিয়ে শঙ্কায় কৃষক

ছবি: ভোরের কাগজ

বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে হাওরের বোরো জমিতে। বোরো মৌসুমে উপযোগী সময়ে বৃষ্টিপাত ফসলের জন্য সুফল নিয়ে আসলেও বৃষ্টির কারণে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুইদিন বন্ধ ছিল ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ। 

সরকার নির্ধারিত ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হতে আর বাকি মাত্র দুইদিন। এবারও সময় মতো বাঁধের কাজ শেষ না হওয়া নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা। তাছাড়া বৃষ্টিপাতের কারণে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফসলের সুরক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়েছে কৃষকদের মধ্যে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহের শেষ দুইদিন বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বৃষ্টির কারণে সারা জেলার মতো মধ্যনগরেও চলমান ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজ সাময়িক বন্ধ ছিল। 

এদিকে শনিবার দিনের বেলায় কাজ পুনরায় শুরু করলেও শনিবার রাতে এবং রবিবার দিনেও গুড়িগুড়ি বৃষ্টি শুরু হলে আবারো বাঁধের কাজ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েয়ে। 

বৃষ্টিতে বাঁধ এলাকা কর্দমাক্ত হওয়ায় চলাচল করতে পারছে না মাটি বহনকারী ড্রাম ট্রাক। তাছাড়া বৃষ্টি হওয়ায় চালানো যাচ্ছেনা মাটি কাটার মেশিন। আবহাওয়ার প্রতিকূল পরিবেশের কারণে বাঁধ নির্মাণকাজে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়ায় থেমে থেমে চলছে বাঁধের নির্মাণ কাজ।

যদিও জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে বাঁধ নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৮০ ভাগ দাবি করা হয়েছে,কিন্তু মাঠপর্যায়ের কৃষক বলেছে নির্ধারিত ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হতে পারে ৬০ ভাগ কাজ। 

তাই ফসলের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত হাওরের মানুষজন। অপরদিকে বৃষ্টিপাতে ফসলি জমিতে সেচ সুবিধা হলেও অসমাপ্ত বাঁধের কাজ সমাপ্ত করা নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা।

মধ্যনগর উপজেলার ঘোরাডুবা হাওর পাড়ের কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, সরকার বাঁধের কাজের জন্য বরাদ্ধ ও সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু এখনো কাজ শেষ হয়নি। বৃষ্টিতে সুমেশ্বরী নদীতে পানি বাড়ছে। যদি এভাবে বৃষ্টি হতে থাকে তাহলে আমাদের জন্য খারাপ সময় অপেক্ষা করছে।

আরেক কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, ঘোরাডুবা হাওর রক্ষা বাঁধের কায়েতকান্দা ক্লোজারের মাটি ধসে গেছে। 

তবে বিকল্প বাঁধের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন মধ্যনগর উপজেলায় কর্মরত পাউবো'র উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুর আলম। 

যদিও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্লোজারে ও বাঁধে মাটি বসানোর কাজ ভাল না হওয়ার কারণে মধ্যনগর উপজেলার ফসল রক্ষা বাঁধের অবস্থা নড়বড়ে।

নির্ধারিত সময়ে এই বাঁধের কাজ শুরু না করায় এখন তাড়াহুড়ো করে শেষ করা গেলেও দুর্বল বাঁধের কারণে মধ্যনগরের হাওরে হাজার হাজার হেক্টর জমি ঝুঁকিতে রয়েছে।

সুনামগঞ্জের হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা প্রথম থেকে বলে আসছিলাম গুরুত্ব দিয়ে নির্ধারিত সময়ের আগে কাজ শেষ করতে। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে বৃষ্টিপাত হবে। এটা সবার জানা। 

২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ধর্মপাশায় চন্দ্রসোনার থাল হাওরে পানি প্রবেশ করেছিল। তা থেকে সংশ্লিষ্টরা শিক্ষা নেয়নি। প্রতিদিন কাগজে কলমে বাঁধের কাজের অগ্রগতি বাড়ানো হয়েছে। বাস্তবে বাঁধের ৬০ ভাগ কাজও এখনো শেষ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ফসলের সুরক্ষা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।

জেলা পাউবো'র নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদারের মোবাইল ফোনে সংযোগ না পাওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

পাউবোর প্রধান প্রকৌশলী (উত্তর-পূর্বাঞ্চল) খুশী মোহন সরকার গত শনিবার মধ্যনগর উপজেলার গুরমার হাওর, রুই বিল ও ঘোরাডুবা হাওরের বিভিন্ন ফসল রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করেছেন। 

ভোরের কাগজকে তিনি জানান, মধ্যনগরে হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক বলা যাচ্ছে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App