×

সারাদেশ

সমন্বয়হীনতায় চালু হচ্ছে না পানি শোধনাগার

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৩৮ পিএম

সমন্বয়হীনতায় চালু হচ্ছে না পানি শোধনাগার

সমন্বয়হীনতায় চালু হচ্ছে না পানি শোধনাগার

তিন দফা মেয়াদ বাড়িয়ে গত বছর শেষ করা হয়েছিল মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার ভূপৃষ্ঠস্থ পানি শোধনাগার প্রকল্পের কার্যক্রম। কয়েক মাস পরীক্ষামূলকভাবে পানি শোধনের কাজও চলে। তবে প্রকল্পটি হস্তান্তর নিয়ে ঠিকাদার, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও পৌরসভার মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে সোয়া ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পানি শোধনাগারটি।

প্রকল্পের ঠিকাদার ও মুন্সিগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ৩৭ জেলা শহরে পানি সরবরাহ প্রকল্পের অধীনে ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে মুন্সিগঞ্জ শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকায় পানি শোধনাগার নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ১০ কোটি ২৬ লাখ ৯০ হাজার ২৩৭ টাকা। ২০১৯ সালের মে মাসে কাজ শেষে প্রকল্পটি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। তবে জমি নিয়ে জটিলতার কারণে ঠিকাদার কাজই শুরু করেন ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। পরবর্তী সময়ে আরও ১৩ মাস বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। তবে নির্মাণের শুরুতেই নিম্নমানের পাইপ ব্যবহার করা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

পরে আরেক দফা বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত সময় নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অবশেষে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। সে বছর আগস্ট থেকে পানির নমুনা পরীক্ষার জন্য পরবর্তী তিন মাস সচল ছিল। তবে ঠিকাদারদের থেকে প্রকল্পের কাজ বুঝে না নেওয়ায় বন্ধ পড়ে আছে পানি বিশুদ্ধকরণ কার্যক্রম।

জানা যায়, ২০১৮ সালে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন ৩৭ জেলা শহরে পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় মুন্সীগঞ্জের হাটলক্ষ্মীগঞ্জ এলাকায় পানি শোধনাগার নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রায় ৩৩শ বর্গফুট আয়তনের জায়গায় নির্মিত পানি শোধনাগারটির পরিকল্পনার মধ্যে ছিল পাশের ধলেশ্বরী নদী থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৩ লাখ ৫০ হাজার লিটার পানি বিশুদ্ধ করে পৌরবাসীর মাঝে সরবরাহ করা। তবে নির্মাণের শুরুতেই নিম্নমানের পাইপ ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। এরপর কয়েক দফা পরিবর্তন করে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। একই বছর খাবার জন্য পানির নমুনা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে সচল ছিল কয়েক মাস। এরপর বন্ধ হয়ে যায় পানি বিশুদ্ধকরণ কার্যক্রম।  

স্থানীয়রা জানান, পৌরসভার হাটলক্ষ্মীগঞ্জসহ অনেক এলাকায় নেই পর্যাপ্ত সুপেয় পানির ব্যবস্থা। লাইন ধরে পানি নিতে হয়। সেখানেও আয়রন থাকায় বিপত্তিতে পড়তে হয় তাদের। প্রতীক্ষিত প্রকল্পটি চালু করে দ্রুত সেবা নিশ্চিত করার দাবি তাদের। 

প্রকল্পটির কাজ করতে গিয়ে অনেক ভুগতে হয়েছে মন্তব্য করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মোহাম্মদ মাসুদুর রশিদ বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে কাজ বুঝে নিতে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে জানালেও তারা জানিয়েছে পৌরসভা প্রকল্পটি নিতে চাইছে না। জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরও প্রকল্পটি নিচ্ছে না। এমনিতেই এ কাজে দেড় কোটি টাকার বেশি লোকসান হয়েছে। এক মাস পানি শোধন করতে এক লাখ টাকা খরচ হয়। তাই কাজ বন্ধ রেখেছি।’

এ প্রসঙ্গে মুন্সীগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর দাবি করেন, প্রকল্পটি ঠিকাদার পৌরসভাকে বুঝিয়ে দেবেন। তবে এর বেশি কিছু বলতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিষেধ রয়েছে বলে জানান তিনি।

মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মু. সোহেল রানা রানু বলেন, পৌরসভার সাবেক মেয়র ফয়সাল বিপ্লব ঠিকাদারকে দিয়ে বারবার নিম্নমানের পাইপ পরিবর্তন করিয়েছেন। এরপরও কাজের মান নিয়ে কিছুটা প্রশ্ন রয়েছে। দেখা গেল সেটি চালিয়ে নতুন কোনো ঝামেলা হলো, তাই বিপত্তি এড়াতে আরও কিছুদিন পরীক্ষামূলক চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন পৌরসভায় পানি শোধনাগারে ব্যয়ের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দও নেই। ঠিকাদার আরও কিছুদিন যদি চালায়, সেখানে যদি সফলভাবে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হয়, তবে সেটি বুঝে নেওয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App