×

সারাদেশ

পুঠিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে সফল উদ্যোক্তা ইনজামুল হক টিপু

Icon

মনিরুজ্জামান, পুঠিয়া, রাজশাহী

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম

পুঠিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে সফল উদ্যোক্তা ইনজামুল হক টিপু

গরু ছাড়া অটোরিকশা দিয়ে এমন ঘানি টানার দৃশ্য চোখে পড়বে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার  শিবপুর বাজারে। সরিষার তেলের ঘানিটি রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের পাশে । এমন অভিনব উপায়ে তেল উৎপাদন করছেন ইনজামুল হক টিপু । তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়াশোনা বাদ দিয়ে তিনি এই পেশায় আসেন। 

প্রথমে তিনি যোগাযোগ করেন রংপুর এবং সেখানে গিয়ে সরিষার তেল উৎপাদনের ঘানি দেখেন। সেখান থেকে মিস্ত্রি নিয়ে এসে তিনিও একটি ঘানি তৈরি করেন । মিস্ত্রি ঘানিতে বলদ গরু ব্যবহারের কথা বলেন। তারা আরো বলেন, ঘানি বিদ্যুতে বা আবারও অন্য কোনো উপায়েও ঘোরানো যেতে পারে। এরপরই মাথায় আসলো অল্প খরচে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার বিষয়টি। তারপরে বলদের পরিবর্তে অটোরিকশা লাগাই। 

তিনি আরও বলেন, এই ঘানি তৈরিতে প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ঘানিটি সারাদিন চলে আবার সারারাত চার্জ হয়। একটা গরুর সারাদিন এইভাবে ঘোরাও সম্ভব হত না, তা ছাড়া গরু কিনতে গেলে খরচ আরো বেড়ে যাবে।  সবমিলে তেল তৈরির খরচ বাড়বে। কাঠের তৈরি ঘানির কারণে এর রং, স্বাদ ও ঘ্রাণ ঠিক থাকে। ১ মণ সরিষা ঘানিতে ভাঙলে তেল হয় ১২ থেকে ১৩ লিটার। কিন্তু মিলে এটা ভাঙলে ১৪ থেকে ১৫ লিটার তেল হয়। তাই আমাদের দামটা একটু বেশি নিতে হয়। দাম বেশি হলেও বাজারে  তেলের চাহিদা ব্যাপক। দূরদূরান্ত থেকে সরাসরি ও অনলাইনে অনেকেই কিনে নিয়ে যায়। আমাদের সরিষার এক নম্বর খাঁটি তেল।

তিনি বলেন, সরিষাগুলো বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর, গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট ও তানোরের মুণ্ডুমালা বানেশ্বর  হাট থেকে।  কৃষকের  সরিষা কিনতে পাওয়া যায়। হাটগুলোতে কয়েক ধরনের সরিষা পাওয়া যায়। যেহেতু তেলের সুনামের বিষয় জড়িত তাই আমরা ভালো সরিষাই কিনে থাকি। ঘানিতে দুই ধরনের সরিষা দেওয়া হয়- যেমন দানা মোটা ও অপরটি ভালো সরিষা। এখানে শুধু সরিষার তেলই বিক্রি করা হয় না- বিক্রি হয় সরিষার খৈলও ৫২ টাকা কেজি  তাতে আমাদের প্রতি মাসে আয় হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। এছাড়াও তিনি আরো পোল্ট্রি ফার্ম ' জিম ও কৃষি পেশার সাথে জড়িত আছে। 

সরিষার তেল বিক্রির বিষয়ে আনারুল ইসলাম  বলেন,  অনলাইনে ঢাকা রংপুর, পাবনা, নাটোরের মানুষ কিনে থাকে। তার মধ্যে সরাসরি বেশি তেল কিনে থাকে এলাকার মানুষ।  সরিষার এক নম্বর খাটি তেল বিক্রি করা হয়। এই তেল নিতে ক্রেতাদের খুব চাপ হয়। কোন দোকান বা আলাদা করে তেল বিক্রি করা হয় না। এখান থেকেই বিক্রি হয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই ঘানির তেলের রং, স্বাদ ও ঘ্রাণ ভালো। তাই চাহিদাও বেশি, দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই কিনতে আসেন। এই খাঁটি সরিষার তেল ২৫০ টাকা লিটার বিক্রয় করা হয়। এখানকার তেলে কোনো ধরনের ভেজাল দেয় না। মানুষের আস্থা আছে টিপুর প্রতি। টিপুর দাবি কাঠের ঘানির ফলে তেলে গুণাগুণ নষ্ট হয় না। এই কারণে দাম বেশি হলেও চাহিদা বেশি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App