×

সারাদেশ

শিক্ষার্থী সংকট

বাবুগঞ্জে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল দশা (ভিডিও)

Icon

শফিকুল ইসলাম, বাবুগঞ্জ (বরিশাল) থেকে

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৪:৫৮ পিএম

আশঙ্কাজনক হারে শিক্ষার্থী কমে যাওয়া ও শিক্ষক সঠিকভাবে বিদ্যালয় না আসার কারণে বরিশাল বাবুগঞ্জ উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল অবস্থা দেখা দিয়েছে। বাবুগঞ্জ উপজেলায় ১৩৪ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ১২টিতে প্রধান শিক্ষক নেই । দক্ষিণাঞ্চলের এই উপজেলাটি বিভিন্ন কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হলেও অদৃশ্য কারণে এখানে প্রাথমিক শিক্ষাক্ষেত্রে বেহাল দশা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) সরজমিনে উপজেলার ৯৫ নং লামচর ক্ষুদ্র কাটি সুগন্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে গেলে দেখা যায় ৫ জন শিক্ষকের মধ্যে উপস্থিত আছেন ৩জন। এসময় দেখা যায়, চতুর্থ শ্রেণীতে ১জন ও পঞ্চম শ্রেণীতে ১জন শিক্ষার্থী শেণিকক্ষে উপস্থিত হয়েছে।

৮৯ নং খানপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৪জন উপস্থিত ছিলেন। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২ জন। 

মাধবপাশা ইউনিয়নের পূর্ব রহমতপুর ৮৫ নং রহমতপুর শিশু শিক্ষা কেন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ৮ জন শিক্ষার্থী ও ৫ জন শিক্ষককে উপস্থিত পাওয়া গেছে। 

উপজেলার আরো কয়েকটি বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, বছরের পর বছর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর বেশির ভাগেই ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির সংখ্যা খুবই কম। পরিদর্শনে শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ২০ থেকে ৩০ জনের বেশি শিক্ষার্থী পাওয়া যায়নি কোন বিদ্যালয়ে। 

এছাড়া স্কুলগুলোতে পাঠদানের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি শিক্ষক স্বল্পতা, অনিয়ম-দুর্নীতি, কোচিং বাণিজ্য, পাঠদানে অবহেলা, অকারণে শিক্ষকদের অুনপোস্থিতি, ঝরে পড়ার হার বৃদ্ধি এবং অবকাঠামোগত সংকটের কারণে শিক্ষার মান এখন তলানিতে। এমন বহুবিধ সংকটের কারণে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের ভর্তি করাতে আগ্রহ হারাচ্ছে স্থানীয় অভিভাবকরা। তাদের অনেকের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও বেসরকারি কিন্ডারগার্টেনগুলোতে তাদের সন্তানদের ভর্তি করাতে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই এ বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত উপস্থিতি দেখা যায় নি। অন্যদিকে  শিক্ষকরা মাস শেষে বসে বসে অলস বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। গুরুতর এম অভিযোগ পাওয়া গেছে বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধ। এমনটি চলতে থাকলে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করবে।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট ১৩৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এদের মধ্যে ১২টিতে নেই প্রধান শিক্ষক। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে কোনমতে খুরিয়ে খুরিয়ে চলছে বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম।  

কথা বলা হয় উপজেলা শিক্ষা অফিসার দিলদার নাহারের সাথে। তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, ‘মোট কতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫০ জনের নিচে শিক্ষার্থী আছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। আমরা এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের কাজ চলমান আছে। তদন্ত শেষ হলেই আমরা জানাতে পারব।’

শিক্ষা অফিসার আরো বলেন, ‘আমরা আশা করছি অচিরেই আমাদের শিক্ষক সংকটের একটি গ্রহণযোগ্য সমস্যা সমাধান হবে। আমরা ইতিমধ্যে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App