×

সারাদেশ

পূর্বাঞ্চলে উন্নতি, উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে অবনতি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২০, ০৯:৩০ এএম

পূর্বাঞ্চলে উন্নতি, উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে অবনতি
পূর্বাঞ্চলে উন্নতি, উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে অবনতি

তৃতীয় দফার বন্যায় জামালপুরের ইসলামপুর থেকে গোয়ালেরচর মহলগিরি যাতায়াতের সেতুটি ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। ২৬ জুলাইয়ের ছবি -ভোরের কাগজ

দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চল মিলিয়ে অন্তত ১৮ জেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল টানা তিন সপ্তাহ ধরে বানের জলে ভাসছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানান, চলমান বন্যায় দেশের অন্তত ৩১ শতাংশ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, ঘাঘট, তিস্তা, ধরলা, করতোয়া, পদ্মা ও আড়িয়ালখাঁ নদের পানি এখনো বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের জেলা গাইবান্ধা, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল, কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নওগাঁ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। এতে এসব জেলার বানভাসিদের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। এদিকে কুশিয়ারা ছাড়া সুরমা, সারী, ধলাই নদীর পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে পূর্বাঞ্চলের জেলা সুরমা ও সিলেটে। নিচে এ সম্পর্কে আমাদের প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট-

গাইবান্ধা : গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার আরো দুটি ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে জেলার ৬টি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়ন এবং গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভাসহ বন্যাদুর্গত এলাকায় প্রায় ২ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দি এবং ক্ষতিগ্রস্ত। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যা ৬টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদীর ৭১ সেন্টিমিটার এবং করতোয়ার পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, তিন দফা বন্যায় জেলার ৬ উপজেলা ও একটি পৌরসভার ২০০ গ্রামের ৩৭ হাজার ৪৪৭টি পরিবারের ১ লাখ ৪৮ হাজার ১৩৮ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

সিলেট : সিলেটে এখনো বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে কুশিয়ারা। তবে অন্যান্য নদ-নদীর পানি কমে ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। বৃষ্টিপাত কম থাকায় সুরমা, সারী, ধলাই, লোভ নদীর পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। গতকাল রবিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত সিলেটের কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয় সুরমা। এতে কানাইঘাটের নিম্নাঞ্চল থেকে ধীরে ধীরে পানি নামতে শুরু করেছে। সিলেট পয়েন্টেও সুরমার পানি বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার নিচে নেমে যাওয়ায় সিলেট সদর ও মহানগরীর কয়েকটি এলাকার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এদিকে শেরপুর, শ্যাওলা ও আমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি নামতে শুরু করলেও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে এখনো বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দ্রুত পানি কমছে লোভা, সারী ও ধলাই নদীতে। এতে কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট এলাকার বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে চলেছে।

জামালপুর : জামালপুরে পানি কোথাও বাড়ছে আবার কোথাও কমছে। যমুনা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি স্থির রূপ ধারণ করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, রবিবার বিকাল ৩টায় জেলার বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ১১১ সেন্টিমিটার এবং জামালপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে দেখা যাচ্ছে, ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ১ সেন্টিমিটার কমেছে এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন প্রায় ১০ লাখ পানিবন্দি মানুষ। তবে বানভাসিদের দুর্ভোগ কমাতে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

রাজবাড়ী : রাজবাড়ীতে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। পদ্মা নদীর পানি রাজবাড়ীর তিনটি পয়েন্টেই আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। দৌলতদিয়া পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১১৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে চরাঞ্চলের বন্যাকবলিত মানুষের দুর্ভোগ দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। এলাকার মানুষ রাস্তা, বাঁধ ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বসবাস করছেন। দেখা দিয়েছে গবাদিপশুর খাদ্য সংকট। জেলা প্রশাসনের তথ্য, জেলায় মোট ৯ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। আর পানিবন্দি মানুষের তালিকা করে খাদ্য সহায়তা দেয়া শুরু হয়েছে।

কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার নদীর পানি সামান্য কমলেও এখনো বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে । এ অবস্থায় নদীবেষ্টিত এ জেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের প্রায় চার লক্ষাধিক বন্যাদুর্গত মানুষ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশনের অভাবে নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। অধিকাংশ কৃষক পরিবার গো-খাদ্যের অভাবে তাদের গবাদিপশু নিয়ে অবর্ণনীয় কষ্টে দিন পার করছেন। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার এবং ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে দিন দিন বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হচ্ছে। যমুনা ও ধলেশ্বরীসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ১১টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। ফলে এসব উপজেলার প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যার পানির স্রোতে রাস্তাঘাট, ব্রিজ এবং ব্রিজের অ্যাপ্রোচ সড়ক দেবে যাচ্ছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। রবিবার সকালে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রবল স্রোতে সদর উপজেলার গালা ইউনিয়নের বড় বাসালিয়া এলাকায় লৌহজং নদীর উপর নির্মিত ব্রিজটির অ্যাপ্রোচ সড়ক ধসে গিয়ে টাঙ্গাইল শহরের সঙ্গে কয়েকটি ইউনিয়নের সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ইউনিয়নবাসী।

বগুড়া : বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে ১১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রবল বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে জেলার সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে বাঙ্গালী নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রবিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সহকারী প্রকৌশলী মো. হুয়ায়ুন কবির। যমুনা নদীতে পানি বাড়ায় সোনাতলা, ধুনট ও সারিয়াকান্দি উপজেলার চরাঞ্চলের চালুয়াবাড়ী, কর্ণিবাড়ী, কুতুবপুর, চন্দনবাইশা, কাজলা, কামালপুর, রহদহ, সারিয়াকান্দি সদরসহ মোট ১৬টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল এবং পাট, ধানসহ ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। সিরাজগঞ্জ : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে জেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় নিম্নাঞ্চলের বানভাসি মানুষ রয়েছেন চরম দুর্ভোগে। এসব অঞ্চলে দেখা দিচ্ছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। রবিবার সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম জানান, সকালে যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৮৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২ সেন্টিমিটার। অপরদিকে কাজিপুর পয়েন্টে ২৪ ঘণ্টায় ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৯৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে যমুনার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক পরিবার।

রাজৈর (মাদারীপুর) : পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে নি¤œ কুমার ও আড়িয়ালখাঁ নদের পানি বাড়ার ফলে রাজৈর উপজেলার কবিরাজপুর, ইশিবপুর, বদরপাশা ইউনিয়ন এবং মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া, রাজটি, শিলারচর, পাঁচখোলা, কালিকাপুর, খোয়াজপুর ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এই ৯টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।

মানিকগঞ্জ : পদ্মা-যমুনাসহ জেলার অভ্যন্তরীণ নদী কালীগঙ্গা, ধলেশ্বরী ও ইছামতির পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মানিকগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে এখন ৬টি উপজেলাই বন্যাকবলিত। গত ২৪ ঘণ্টায় মানিকগঞ্জ সদর ও সাটুরিয়া উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছেন দুই লক্ষাধিক মানুষ। পানিতে তলিয়ে গেছে শহরের পৌর এলাকার বেশির ভাগ কাঁচা-পাকা সড়ক। অনেক বাড়িঘরেই পানি ঢুকে পড়েছে। মানিকগঞ্জ-হরিরামপুর সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচল। এতে করে জেলা সদরের সঙ্গে উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানি উঠেছে হরিরামপুর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণেও। বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- শিবালয়, ঘিওর, দৌলতপুর, হরিরামপুর, সাটুরিয়া ও মানিকগঞ্জ সদর।

শরীয়তপুর : শরীয়তপুরে পদ্মা নদীর পানি বাড়তে থাকায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। রবিবার সকাল ৯টায় নড়িয়ার সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী এ এস এম আহসান হাবীব বলেন, নদীতে পানি বাড়ার কারণে সড়ক ও নদীর পাড় ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনরোধে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ঢাকা-শরীয়তপুর মহাসড়কের ১৩ স্থান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পানির তোড়ে তিনটি স্থান ভেঙে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে বন্যায় জেলায় প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। দুর্গত এলাকায় চলছে ত্রাণের জন্য হাহাকার। ত্রাণের নৌকা দেখলেই ভিড় করছেন মানুষ।

শেরপুর : শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত অবস্থায় রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ কমেনি পানিবন্দি মানুষের। বন্যার পানিতে রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। শেরপুর সদর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। পানিবন্দি লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বন্যার পানিতে ডুবে জেলায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। গবাদিপশু নিয়ে কৃষকদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

মহাদেবপুর (নওগাঁ) : নওগাঁর মহাদেবপুরে অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে আবাসন প্রকল্পের দুশতাধিক পরিবার মনবেতর জীবনযাপন করছে। এসব পরিবারে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানি সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে গত শনিবার বন্যাদর্গত পানিবন্দি এসব মানুষের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলার খাজুর ইউনিয়নের হরিপুর-লাটুয়াপাড়া বড়বিলা আবাসন প্রকল্পের দুই শতাধিক পানিবন্দি পরিবারের মধ্যে চাল ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। কয়েক দিনের লাগাতার বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে ওই প্রকল্পের দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।

দিরাই (সুনামগঞ্জ) : টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় তৃতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে । কমতে শুরু করেছে কালনী নদী ও হাওরের পানি। এছাড়া পানি কমেছে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকার। তবে এখনো পানিবন্দি রয়েছেন উপজেলার লাখো মানুষ। বেশ কিছু সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এখনো দুর্ভোগে রয়েছেন নিম্নাঞ্চলের মানুষ। বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে এবং গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দি মানুষজন। পানিবন্দি অনেক এলাকায় সরকারি ত্রাণ না পাওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন পানিবন্দি অনেকেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App