×

সারাদেশ

ছয় জেলায় অবনতি, চার জেলায় উন্নতির আভাস

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২০, ০৯:৪২ এএম

ছয় জেলায় অবনতি, চার জেলায় উন্নতির আভাস

জামালপুরে দ্বিতীয় দফার বন্যায় তলিয়ে গেছে বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট। এতে পানিবন্দি হয়ে সাড়ে ৮ লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগে জীবনযাপন করছেন। এর মধ্যেই প্রয়োজনে অনেককে বেরও হতে হচ্ছে। গতকাল দেওয়ানগঞ্জ থেকে তোলা ছবি -ভোরের কাগজ।

নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় গাইবান্ধা, পাবনা, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর ও মানিকগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। অপরদিকে পানি কমতে শুরু করায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, জামালপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এদিকে বন্যাদুর্গত এলাকায় বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। অপ্রতুল ত্রাণের কারণে বাঁধ, উঁচু স্থান কিংবা আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। নিচে এ সম্পর্কে আমাদের প্রতিনিধিদের পাটানো রিপোর্ট-

গাইবান্ধা : উজানের ঢল এবং অবিরাম বর্ষণের কারণে ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও তিস্তা নদীর পানি আবারো বাড়তে শুরু করেছে। ফলে তৃতীয় দফা বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। রবিবার সকাল ৯টা থেকে ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি নতুন করে বাড়ছে। রবিবার সন্ধ্যা ৬টায় ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়েছে ৪ সেন্টিমিটার এবং ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বেড়েছে ৩ সেন্টিমিটার। এর ফলে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার এবং ঘাঘট নদীর পানি ৫৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে তিস্তা নদীর পানি গত শনিবার সকাল ৬টা থেকেই বাড়ছে। রবিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৩৩ ঘণ্টায় তিস্তার পানি বেড়েছে ২০ সেন্টিমিটার। তবে এখনো এ নদীর পানি বিপদসীমার কিছুটা নিচে রয়েছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান জানান, সব নদীর পানি বৃদ্ধি আগামী ২৪ জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ফলে এবারের বন্যা পরিস্থিতি আগের দুই দফার চেয়ে আরো দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এদিকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকার বাড়িঘরে এখনো হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন চরাঞ্চলের মানুষগুলো। দ্বিতীয় দফায় বন্যায় নদীভাঙনে ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়া হুমকির মুখে পড়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। সিলেট : সিলেটে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় দ্র্রুত নামছে বন্যার পানি। প্রায় সবকটি উপজেলাতেই উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতির। একটি ছাড়া সবকটি পয়েন্টে বিপদসীমার নিচে নেমে এসেছে সুরমা-কুশিয়ারার পানি। এছাড়া সারি, লোভা ও ধলাই নদীর পানি কমে অনেকটাই স্বাভাবিক হতে চলেছে নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি। সবকটি পয়েন্টে বিপদসীমার নিচে নেমে এসেছে সুরমা। কুশিয়ারা নদীর পানিও দ্রুত কমে ফেঞ্চুগঞ্জ ছাড়া সব পয়েন্টেই এখন বিপদসীমার নিচে। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, রবিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে আর কুশিয়ারা নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া এ দুই নদীর পানি অন্য সব পয়েন্টে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সঙ্গে বিপদসীমার নিচে রয়েছে লোভাছড়া ও গোয়াইনঘাটের সারি নদীর পানিও।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুজ্জামান বলেন, বৃষ্টি কম হওয়ায় সিলেটের সব নদ-নদীর পানি কমছে। বর্তমানে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারার পানি বিপদসীমার উপরে আছে। যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে সেখানেও দ্রুতই পানি কমে যাবে।

জামালপুর : যমুনার পানি কমতে শুরু করায় জেলার একাংশে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও যমুনার পানি এখনো বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। তবে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় জেলার ৪ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে । উজানের পাহাড়ি ঢল আর টানা ভারি বর্ষণে জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানিতে তলিয়ে আছে সাত উপজেলার ৮ পৌরসভা ও ৫৯টি ইউনিয়ন। বন্যায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে ৯ লাখ ৮৭ হাজার ৫৪১ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

বন্যাদুর্গত এলাকায় আঞ্চলিক ও স্থানীয় সড়কসহ রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে রয়েছেন বানভাসিরা। মানুষের তুলনায় ত্রাণ এখন অপ্রতুল। যমুনা নদীর পানি ধীরগতিতে কমতে থাকলেও ব্রহ্মপুত্র, ঝিনাই, সুবর্ণখালী, জিঞ্জিরাম, দশআনীসহ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। সাত উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলে জেলায় ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে জনদুর্ভোগ।

পানিতে ডুবে আছে গ্রামীণ হাটবাজার, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পানিতে তলিয়ে গেছে সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর ফসলের মাঠ, গো-চারণ ভ‚মি, বসতবাড়ি ও মাছের খামার। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নায়েব আলী জানান, ৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৭ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। ইতোমধ্যে পানির তোড়ে ১৫ হাজার ঘর ভেঙে গেছে। ৬৭৭টি গ্রামের প্রায় ২ লাখ ৪৭ হাজার পরিবার পানিতে নিমজ্জিত।

কুড়িগ্রাম : জেলা সদরের পাঁচগাছী, যাত্রাপুর ইউনিয়ন, রৌমারী উপজেলার রৌমারী-ঢাকা সড়ক এবং চিলমারী ও রাজীবপুর উপজেলার বিভিন্ন সড়কে গবাদিপশু-শিশু সন্তান নিয়ে আশ্রয় নেয়া বানভাসিরা চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন। অপ্রতুল ত্রাণে খাদ্য সংকট আর বৃষ্টি বিড়ম্বনা তাদের কষ্ট আর ভোগান্তি বহু গুণ বাড়িয়ে তুলেছে। টানা দুদফা বন্যা আর নদ-নদীর তীব্র ভাঙন গ্রাসে চরাঞ্চলসহ অববাহিকার লাখো মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। বন্যার পানির স্রোতে অনেকের বাড়িঘর ভেসে যাওয়ায় একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে কয়েকশত পরিবার। কর্মহীন সময়ে প্রকৃতির এমন রুদ্র আচরণে নতুন সংকট তৈরি করেছে খাদ্যকষ্ট।

এদিকে আরো ২-৩ দিন ভারি বর্ষণ হয়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে জানিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, মানুষের দুর্ভোগ আরো বাড়বে। দীর্ঘ সময় বন্যা স্থায়ী হওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলোও কিছুটা ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তবে আমরা নিয়মিত মনিটরিংয়ে রাখছি এবং যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি। এখনো ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে আবারো ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢল পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটাবে বলে জানান তিনি। ফরিদপুর : ফরিদপুরে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ১০৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানির তোড়ে রবিবার ফরিদপুর শহর রক্ষা বাঁধের সাদিপুর এলাকায় ৫০ মিটার ধসে যাওয়ায় শহরতলীর লোকালয়ে তীব্র বেগে ঢুকে পড়েছে পদ্মার পানি। শহর রক্ষা বাঁধ ধসে যাওয়ায় জেলা সদর থেকে চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলায় যাওয়ার সড়কটি ধসে গেছে। ওই এলাকা প্লাবিত হওয়ায় দুই উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ সময় পানির তোড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে ৫-৬টি বসতবাড়ি, উপড়ে গেছে অসংখ্য গাছপালা। ওই সড়কের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেয়ায় আগেই বন্ধ করে দেয়া হয় সড়কে ভারী যান চলাচল।

এদিকে জেলার চরভদ্রাসন উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন বন্যাদুর্গত মানুষ। এসব মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, জেলা সদরসহ চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলার প্রায় ২০ হাজার পরিবার এখন পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। তাদের জন্য ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে সরকারি খাদ্য সহায়তা বিতরণ।

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) : পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। উপজেলার চারটি ইউনিয়নের গ্রামীণ সড়কগুলো ডুবে গিয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন নিচু এলাকার সাধারণ মানুষ। কয়েকশত মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। ৪৫০ হেক্টর জমির ফসল বানের পানিতে তলিয়ে গেছে। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে পশু খামারিরা রয়েছেন বিপাকে। এসব এলাকায় পশু খাদ্য সংকটে পড়েছেন খামারিরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ভাঙ্গুড়া, অষ্টমনিষা, খানমরিচ ও দিলপাশার ইউনিয়নসহ পৌরসভার উত্তর মেন্দা মহল্লার বেশ কিছু বাড়িঘর বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এসব বাড়ির বাসিন্দা অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা যায়। এতে কয়েক হাজার অধিবাসী চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, বন্যা কিছু মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়েছে তবে এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। বিষয়টি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।

মানিকগঞ্জ : হঠাৎ করেই পদ্মা-যমুনা ফুঁসে ওঠায় বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে জেলার ৪টি উপজেলা। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে পদ্মার পানি। ফলে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। সবচেয়ে কষ্টে আছে চরাঞ্চলের মানুষ। বাড়িঘরে পানি থাকায় পরিবার-পরিজন ও গবাদি পশু নিয়ে তারা পড়েছেন চরম বিপাকে। দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সরেজমিন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কারো ঘরের চাল সমান পানি। কারো ঘরে গলা সমান। রাস্তাঘাট সব তলিয়ে গেছে। ডুবেছে হাটবাজারও। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটছেন নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকায় ১৩০ টন চাল এবং ১ হাজার ৩০০ প্যাকেট শুকনা খাবার সহায়তা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ২০ টন চাল, ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৭০০ প্যাকেট শুকনা খাবার, শিশু খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা এবং গো-খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা মজুত রয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ : পদ্মার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মুন্সীগঞ্জের ৪টি উপজেলার নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোর ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গতকাল রবিবার সকাল থেকে শ্রীনগরের ভাগ্যকুল পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার এবং মাওয়া পয়েন্টে ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পদ্মার পানি প্রবাহিত হওয়ায় মুন্সীগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। আরো একাধিক গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে।

আর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে পদ্মায় তীব্র ঘূর্ণায়মান স্রোতের তোড়ে ভাঙন তাণ্ডব চলছেই। ইতোমধ্যে লৌহজংয়ের হলদিয়া গ্রামের জামে মসজিদের একাংশ বিলীন হয়ে গেছে পদ্মায়। উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে পদ্মার ভাঙন অব্যাহত থাকায় তীরবর্তী গ্রামবাসী এখন আতঙ্কে দিনযাপন করছে। এছাড়া পদ্মার পানি বৃদ্ধিতে শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল, রাঢ়ীখাল ও বাঘড়া ইউনিয়নের সহ¯্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়া সদর উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের পদ্মা তীরবর্তী উত্তর ভুকৈলাস, দক্ষিণ ভুকৈলাস, পূর্ব বাঘেরচর, আশুলিরচর, বানিয়াল মহেশপুর এবং শিলই ইউনিয়নের কাইজ্জারচর ও বেহেরচর গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) : দ্বিতীয় দফায় যমুনা ও ধলেশ^রী নদীতে পানি বাড়ায় টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। নাগরপুর সরকারি কলেজ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নাগরপুর-চৌহালী সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বন্যার পানি ওঠায় চরম বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে ছুটছে শত শত মানুষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা দিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। উপজেলার নাগরপুর, সলিমাবাদ, দপ্তিয়র, গয়হাটা, ভারড়া, মোকনা, পাকুটিয়া, ধুবড়িয়া, সহবতপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বসতঘরে পানি ওঠায় ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিচ্ছে শত শত পরিবার। এছাড়া উপজেলার যমুনা ও ধলেশ্বরী নদী-সংলগ্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। কোনো কোনো এলাকার কাঁচা-পাকা রাস্তা ডুবে গিয়ে আশপাশের এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

বন্যার পানির স্রোতে চৌহালী-আরিচা সড়কে উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের তেবাড়িয়ায় বেইলি ব্রিজ ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া নাগরপুর শাহাজানী সড়কের বনগ্রামে পাকা রাস্তায় পানি উঠে পাশ্ববর্তী চৌহালী উপজেলার সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, গত দুদিনে জেলার নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। রবিবার সকাল পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এদিকে যমুনা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙনও।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App