×

সারাদেশ

ভাঙা হচ্ছে গৌরীপুরের প্রাচীন নিদর্শন, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২০, ০৭:০৭ পিএম

ভাঙা হচ্ছে গৌরীপুরের প্রাচীন নিদর্শন, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

সরকারি কলেজে নতুন ভবন নির্মাণের অজুহাতে ধ্বংস করা হচ্ছে প্রাচীন নিদর্শন

ময়মনসিংহের গৌরীপুর সরকারি কলেজের নতুন একটি ভবন নির্মাণ করার জন্য ঐতিহাসিক জমিদার আমলের নিদর্শন প্রাচীন স্থাপনা (পাকাভবন) ভেঙে ফেলা হচ্ছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর ওই স্থপনাটি গত এক সপ্তাহ ধরে ভেঙে ফেলা হচ্ছে। যা নিয়ে সুশীল সমাজ, সচেতন মহল ও এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তবে ইাতহাস ও ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসাবে স্থপনাটি ভেঙে ফেলার পরিবর্তে সংস্কার ও রক্ষানাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল ।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ১৯৬৪ সালের ১ আগস্ট গৌরীপুর পৌর শহরের কৃষ্ণপুর এলাকার জমিদার সুরেন্দ্র প্রসাদ লাহিড়ীর বাড়িতে গৌরীপুর কলেজের যাত্র শুরু হয়। ২২ একর জমির গড়ে উঠে দৃষ্টিনন্দন এ কলেজটি। প্রচীন নিদর্শন সুপ্রশস্ত মনোরম ক্যাম্পাস ও প্রকৃতিক পরিবেশের কারনে ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যাপীঠটি ক্রমেই দর্শনীয় স্থানে পরিনত হয়। ১৯৯১ সালে কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়। ২০১২ সালে কলেজে অর্নাস কোর্স চালু হয়। এ অবস্থায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সংখ্য বেড়ে গেলে দেখা দেয় ভবন সংকট। সম্প্রতি কলেজের ভবন নির্মাণের জন্য একটি প্রচীন স্থাপনা ভাঙার কাজ শুরু হয়। গতকাল থেকে ভবন ভাঙার ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় উঠে। কলেজে বিকল্প জায়গা থাকা সত্ত্বেও কেন প্রাচীন নিদর্শন ভেঙে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কলেজের অধ্যক্ষ ভবনের পাশে প্রাচীন স্থাপনাটি ভাঙঙ্গার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে একতলা ছাদ বিশিষ্ট স্থাপনাটির উপরিভাগ ভেঙে ফেলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকী অংশটুকু ভেঙে ফেলা হবে বলে জানান নির্মাণ কাজের সাথে যুক্ত শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি শফিকুল ইসলাম মিন্টু জানান প্রাচীন স্থাপনাটি কলেজের ছাত্র সংসদের কার্যালয় ও পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের কমন রুম হিসাবে ব্যবহ্নত হতো। কিন্তু ভবন র্নিমাণের অজুহাতে স্থাপনাটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে যা অত্যান্ত দুঃখজনক।

গৌরীপুর উপজেলা আ”লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন জুয়েল বলেন একাধিক ভবন নির্মাণের জন্য গৌরীপুর সরকারি কলেজের নিজস্ব অনেক জমি খালি পড়ে রয়েছে। আমাদের দাবি ওই সব খালি জায়গায় ভবন নির্মাণ করা হোক। পাশাপশি ঐতিহাসিক নিদর্শনটি না ভেঙে এর অবকাঠামো ঠিক রেখে দৃষ্টিনন্দনভাবে সংস্কার করা হোক।

মানবাধিকার কমিশন গৌরীপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক রইছ উদ্দিন জানান- রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, অপরিকল্পিত সংস্কার ও নির্মাণ কাজের জন্য কলেজের প্রাচীন নিদর্শনগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে। কয়েক বছর পর আগে সংস্কারের নামে কলেজের প্রবেশ পথে প্রাচীন ভবনের উপরিভাগের একাংশ ভেঙে ফেলা হয়। পরবর্তীতে সেটি আর মেরামত হয়নি। এখন আরো একটি প্রাচীন স্থপনা ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে কলেজের প্রাচীন নিদর্শনগুলোর আর কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।

এ বিষয়ে গৌরীপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর মিল্টন ভট্টাচার্য জানান, প্রাচীন স্থাপনাটির অবকাঠামো দুর্বল ও ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় এটি সংস্কার করে সংরক্ষণের কোনো সুযোগ নেই। স্থাপনাটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত পড়ে ছিল। তাই ভবন নির্মাণের জন্য যথাযথ নিয়ম মেনে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় এটি ভাঙ্গা হচ্ছে। তবে কলেজের যেসব প্রাচীন নিদর্শন সংস্কার করার সুযোগ রয়েছে সেগুলি সংস্কার করে সংরক্ষণ করা হচ্ছে

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App