×

সারাদেশ

কুড়িগ্রামে বানের পানিতে দেড় লাখ মানুষ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২০, ১০:০১ পিএম

কুড়িগ্রামে বানের পানিতে দেড় লাখ মানুষ

দিশেহারা মানুষ।

কুড়িগ্রামের সবকটি নদীর পানি ফুলে-ফেপে টইটুম্বুর হয়ে উঠেছে। এরমধ্যে ধরলা নদীর পানি অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় হুহু করে বানের পানি ঢুকছে লোকালয়ে। ৯ উপজেলার ৫৬টি ইউনিয়নের প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দেড় লক্ষাধিক মানুষজন।

জেলা থেকে উপজেলাগুলোতে  প্রায় সাড়ে হাজার মেট্রিক টন চাল, ৪ লক্ষ টাকা, ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবারের প্যাকেট, শিশুদের খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা ও গো-খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও এখনো তা বিতরণ শুরু হয় নাই। এ দিকে ১০ দিন আগে হয়ে যাওয়া বন্যায়, বানভাসী মানুষজনের সঞ্চিত খাদ্য ও অর্থ শেষ হয়ে যাওয়ায় পরিবারগুলো পড়েছেন মারাত্মক বিপাকে।

এদিকে ভারতের আসামের ধুবরী জেলার মানকাচরের কালো নদী দিয়ে পাহাড়ী ঢল, রৌমারী উপজেলার সীমান্তঘেঁষা জিঞ্জিরাম নদীতে তীব্র গতিতে প্রবেশ করছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদী পারের মানুষ জন। শতাধিক গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এখানে।

রৌমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্লাহ জানান, বেড়িবাঁধের ভাঙাঅংশ দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। তলিয়ে গেছে বন্দবেড় ইউনিয়নের কুটিরচর, কান্দাপাড়া, টাঙ্গারীপাড়া, বাইশপাড়া, যাদুরচর ইউনিয়নের চাক্তাবাড়ি, দিগলেপাড়া, নতুনগ্রাম, ধনারচর নতুনগ্রাম, চরেরগ্রাম, হাট মোল্লারপাড়া, পাখিউড়া, রৌমারী সদর ইউনিয়নের ঠনঠনিপাড়া, ভুন্দুরচর, বারবান্ন্ধা, চুলিয়ারচর, চান্দারচর, নওদপাড়া, ব্যাপারী পাড়া, খাটিয়ামারী, রতনপুর, চরবামনেরচর, মোল্লারচর, শৌলমারী ইউনিয়নের বেহুলারচর, সুতিরপাড়, বোয়ালমারী, কলমেরচর, গয়টাপাড়া, চরশৌলমারী ইউনিয়নের ঘুঘুমারী, খেদাইমারী, চরখেদাইমারী, দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ইটালুকান্দা, চরগয়টাপাড়া ও ছাটকড়াইবাড়ীসহ উপজেলার প্রায় ১১৫টি গ্রাম। এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৮’শ পরিবার। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে পাট, তিল, তিশি, কাউন, চীনা, রোপা আমন, বীজতলাসহ প্রায় ৭’শ হেক্টর জমির ফসল।

ফুলবাড়ী উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এদরে মধ্যে ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে ৭শ পরিবার। তলিয়ে গেছে পাট, ভুট্টা, কলা, সবজি ক্ষেত, বীজতলা ও আউশ ধান।

উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের পানিবন্দী গ্রামগুলোর মধ্যে রাঙ্গামাটি, খোচাবাড়ী, ভাঙ্গামোড়, চর বড়লই, হামিদ মেম্বারে মোড়, ওয়াবদা বাজার, সুফিয়ার মোড়, বাঘ খাওয়ার চর, পশ্চিম ধনিরাম, পূর্ব ধনিরাম, কবির মামুদ, প্রানকৃষ্ণ, জুগৎকৃষ্ণ, যতীন্দ্র নরায়ণ, চর শিমুলবাড়ী, পেঁচাই, গুয়াবাড়ী ঘাট, কান্তাপাড়া, চর গোরুকমন্ড, নামাটারী, কৃষ্ণনন্দ বকসি ও খোকারচর। এসব পানিবন্দী পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগে জীবনযাপন করছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, উজানে তিস্তা ও ধরলার নদী পানি কমতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার থেকে কুড়িগ্রামে এ দুটি নদীর পানি কমতে শুরু করবে বলে আশা করছেন। তবে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি আরো ২/৩ দিন বাড়তে থাকবে। ফলে ওইসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটবে।

তিনি জানান, সোমবার বিকালে কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা ১৬ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে ৬৩ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ৬২ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App