×

সারাদেশ

লকডাউনে পুলিশের নির্যাতনের শিকার খিলিপান ব্যবসায়ী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২০, ১২:৪৮ পিএম

লকডাউনে পুলিশের নির্যাতনের শিকার খিলিপান ব্যবসায়ী

এএসআই বুলবুল ইসলামের নির্যাতনের শিকার ক্ষুদে ব্যবসায়ী মাসুদ মিয়া। ছবি: প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামের উলিপুরে একজন খিলিপান ব্যবসায়ীকে নির্মমভাবে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। শরীরের দগদগে নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে ৪ দিন ধরে শয্যাশায়ী ক্ষুদে দোকানদার মাসুদ মিয়া। বিছানা থেকেই উঠতে পারছেন না। বাড়িতেই চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।

মাসুদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) উলিপুর পৌর এলাকার তেঁতুলতলা বাজারে তার পানের দোকানে থাকা সোলার প্যানেলের ব্যাটারি নিতে আসেন। এ সময় দোকানের জিনিসপত্র ঠিকঠাক আছে কিনা তা দেখেন। এরপর তালা মেরে বাড়ির পথে হাঁটা দিচ্ছিলেন, তখন সন্ধ্যা। ঘড়িতে বাজে ৬টা ৩৫ মিনিট। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই পিছন থেকে একজন পুলিশ, তাকে বেদম লাঠিপেটা শুরু করেন। তিনি অনেক মিনতি করেন। ওই পুলিশের পায়ে ধরেন, তারপরও চলতে থাকে লাঠির আঘাত। একের পর এক লাঠির আঘাতে সে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তার অপরাধ, লকডাউন ভেঙ্গে তিনি ৬টার পর কেনো বাজারে অবস্থান করছেন।

কোনো রকমে বাসায় ফিরলে তিনি প্রচণ্ড মারের ব্যথায় অসুস্থ্ হয়ে পড়েন। পরে জানতে পারেন, লাঠিপেটাকারী ব্যক্তি উলিপুর থানায় কর্মরত একজন সহকারি উপ-পরিদর্শক। তার নাম বুলবুল ইসলাম ।

ঘটনার ৫দিন পর মাসুদের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, তিনি বিছানায় শুয়ে ব্যাথায় কাতরাচ্ছেন। মাসুদ জানায়, তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না। উঠতে গেলে লাঠিতে ভর দিতে হয়। দোকান বন্ধ। চিকিৎসা করবেন সে টাকাও নেই। বিকাশ সরকার নামে একজন পল্লী চিকিৎসক তাকে চিকিৎসা করাচ্ছেন। ইতোমধ্যে দেড় হাজার টাকার ঔষধ কিনেছেন।

মাসুদ জানান  আমি গুরুতর অসুস্থ খবর পেয়ে মারধরকারী পুলিশ একদিন বাসায় এসে আমাকে ৫০০ টাকা দিয়ে গেছে, তারপর আমাকে বলছে ঘটনাটা কাউকে বলবেন না। আমি আপনাকে এক বস্তা চাউল পাঠাবো। সরকারি রিলিফের ব্যবস্থা করবো। আমার এখন পর্যন্ত ১৪০০ টাকা খরচ হয়ে গেছে। আমার তো আর কেউ খোঁজ রাখে না। হাতে টাকাও নেই।

ডাক্তারও বাড়িতে চিকিৎসা দিতে আসছেন না। যে পান বেচে সংসার চালাতেন। সেই দোকান আজ ২৩ দিন ধরে বন্ধ।  ছয় সদস্যের পরিবারে খাবার জোটাবেন কী করে! চিকিৎসাই বা করাবেন কীভোবে? এই দুশ্চিন্তা আর দুর্ভাবনায় ঘুম আসেন তার। সোমবার (২০ এপ্রিল) অবশ্য ওই মারধরকারী পুলিশ কর্মকর্তার সুপারিশে উলিপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আনিসুর রহমান তাকে ১০ কেজি চাল ও ২ কেজি আলু দিয়েছেন বলে জানান মাসুদ। এই চাল সে খাবে না শরীরের চিকিৎসা করাবে এ অনিশ্চয়তায় সে এখন দু চোখে অন্ধকার দেখছে।

এ ব্যাপারে এএসআই বুলবুল ইসলাম এর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, এটি একটি ভুল বোঝাবুঝির কারণে হয়েছে। আমি এটা অন্যায় করেছি।

উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন এর সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App