×

সারাদেশ

শেবাচিম হাসপাতালের সম্পত্তিতে চলছে রমরমা ভাড়া বাণিজ্য

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২০, ১২:২৩ পিএম

শেবাচিম হাসপাতালের সম্পত্তিতে চলছে রমরমা ভাড়া বাণিজ্য
শেবাচিম হাসপাতালের সম্পত্তিতে চলছে রমরমা ভাড়া বাণিজ্য
বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের জমিতে স্থাপনা করে রমরমা বানিজ্য করছে একটি চক্র। হাসপতালের চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারীদের আবাসিক এলাকায় প্রবেশমুখে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা নির্মান করা হয়েছে। এসব স্থাপনায় দেয়া হয়েছে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ। প্রতিদিন সেখান থেকে অর্ধলক্ষাধিক টাকা ভাড়া আদায় করছে স্থানীয় এ চক্রটি। দখলদাররা দাবি করেছেন, তারা সকলকে ম্যানেজ করে ঘর তুলে ব্যবসা করছেন। শেবাচিম হাসপাতাল সংলগ্ন বান্দ রোডের দক্ষিণ পার্শ্বে চতুর্থ শ্রেণীর আবাসিক এলাকা। বান্দ রোডের মুল সড়ক থেকে আবাসিক এলাকায় প্রবেশের জন্য প্রায় ১৫ ফুট প্রসস্ত সড়ক। এ সড়কের দুপাশে স্থাপনা নির্মান করে ভাড়া ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দেয়া হয়েছে। এ ঘরগুলোতে খাবার হোটেলসহ বিভিন্ন দোকান করেছেন ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ীরা। আবাসিক এলাকার পুকুরের মধ্যেও ঘর তোলা হয়েছে। সড়কের ওপর দোকানপাট তোলায় আবাসিক এলাকায় প্রবেশমুখই একপ্রকার আটকে গেছে। হোটেলের বর্জ্যে সেখানকার পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যুতের খুটি থেকে অবৈধ সংযোগ দেয়া হয়েছে এ ঘরগুলোতে। প্রতিটি ঘর থেকে দৈনিক সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে দখলদারা। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নেতারও এ টাকার ভাগ পান বলে স্থানীয়রা জানান। ব্যবসায়ীদের কাছে ঘর মালিকদের নাম জানতে চাইলে জানাতে অস্বীকার করেন তারা। পরে ঘর ভাড়া নেয়ার কথা জানালে কাজল নামক এক ঘর মালিকের মোবাইল নম্বর দেন এক ব্যবসায়ী। জালাল আহম্মেদ কাজল নামে ওই ব্যক্তির কাছে মোবাইলে কল দিয়ে ঘর নেয়ার কথা জানালে অকপটে সব স্বীকার করেন তিনি। জালাল জানান, প্রতিটি ঘরের আকার ভেদে দৈনিক ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা ভাড়া নেয়া হয়। অগ্রীম নেয়া হয় ৩০ হাজার টাকা। বিদ্যুৎ বিল ফ্রি। উচ্ছেদের মুখে পড়তে হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাসপাতালের ডাইরেক্টর-নেতা সব আমার ম্যানেজে। খালি ভয় পাই ম্যাজিষ্ট্রেট”। জালালের দেয়া তথ্যমতে, গত ৩/৪ বছরে সেখানে উচ্ছেদ হয়নি। জালাল জানান, সেখানে অর্ধশতাধিক ঘর মালিক তিনি ছাড়াও আছেন তার বেয়াই মোখলেস, ভাতিজা আবুল ও মোন্তা এবং সুমন নামক আরেকজন। তারা সকলকে ম্যানেজ করে ঘর তুলে ভাড়া দিযেছেন। তবে ম্যানেজ হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে শেবাচিম হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোদাচ্ছের কবির বলেন, আবাসিক এলাকায় প্রবেশমুখ দখলের সঙ্গে হাসপাতালের কোন কর্মচারী জড়িত নেই। স্থানীয়রা ওই ঘর তুলেছে। তিনি উল্টো পরিচালকের ওপর দায় চাপিয়ে বলেন, উচ্ছেদের জন্য তাকে বার বার বলা হলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। এবিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন হাসপাতালের জমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মানের কথা স্বীকার করে বলেন, চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী আবাসিক এলাকায় প্রবেশমুখে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট চেয়ে জেলা প্রশাসনে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। বিভিন্ন সমস্যার কারণে এখন পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের সহযোগীতা পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি আবারও আবেদন জানানো হয়েছে। প্রশাসনের সহযোগীতা পেলেই এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App