×

সারাদেশ

নিয়ম বহির্ভূত অংশগ্রহণ করছেন প্রতিষ্ঠান প্রধান ও অফিস সহকারী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৩৯ পিএম

নিয়ম বহির্ভূত অংশগ্রহণ করছেন প্রতিষ্ঠান প্রধান ও অফিস সহকারী

ফটিকছড়িতে শিক্ষক প্রশিক্ষণে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অংশগ্রহণ করছেন প্রতিষ্ঠান প্রধান ও অফিস সহকারী। ছবি: ভোরের কাগজ

• মানা হচ্ছেনা মাউশি'র নির্দেশনা • উপজেলায় প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন মোট ১ হাজার ৯ জন • শিক্ষক সংকটের কারণে এমনটা হয়েছে দাবী কর্মকর্তাদের

নতুন কারিকুলামের প্রশিক্ষণে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অংশ গ্রহণে বিধি নিষেধ থাকলেও নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন ফটিকছড়ির পাইন্দং ইউনিয়নের বেড়াজালী মজিদিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা এজাহারুল ইসলাম।

গত রবিবার ও সোমবার (১৭-১৮ ডিসেম্বর) ফটিকছড়ি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি জানান, আপত্তি থাকলে পরের দিন থেকে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকবো।

সরকারী আদেশ অমান্য করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এরকম অনেক প্রধান শিক্ষক, মাদ্রাসা সুপার, অফিস সহকারী শিক্ষা নীতির নতুন কারিকুলামের প্রশিক্ষণ নিয়ে ভাতা গ্রহণে অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন। যা নিয়ে ইতিমধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

নাজিরহাট পৌর এলাকার গুলতাজ মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের দুইজন এবং ড. এনামুল হক একাডেমির এক অফিস সহকারী, মির্জারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন ল্যাব সহকারীসহ উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একাধিক খন্ডকালিন শিক্ষক নতুন কারিকুলামের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

অথচ মাউশির প্রশিক্ষণ প্রকল্পের পরিচালক প্রফেসর সৈয়দ মাহফুজ আলী স্বাক্ষরিত আদেশে উল্লেখ রয়েছে, প্রশিক্ষণার্থীর তালিকায় যেন কোচিং সেন্টার বা ইআইআইএন বিহীন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে।

আদেশে আরো উল্লেখ করা হয়, যে সকল ইআইআইএন ধারী প্রতিষ্ঠানের বোর্ড কর্তৃক পাঠদানের অনুমতি নেই সে সকল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত খন্ডকালীন শিক্ষকরা প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারবে না।

পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী প্রধানদের বেলায়ও একই রকম আদেশ জারি করা হয়েছে। জারিকৃত আদেশের ব্যতয় হলে সংশ্লিষ্টরা জবাবদিহির মধ্যে থাকবেন বলে আদেশে উল্লেখ রয়েছে।

বিগত তিনদিন ধরে ফটিকছড়ি উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক চলমান প্রশিক্ষণের তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তালিকা প্রস্তুতিতে নয়-ছয়ের আশ্রয় নিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

বিষয়টি জানাজানি হলে অভিযুক্তদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা থেকে বাদ দিয়ে ধামাচাপা দিয়ে দায় সারতে তৎপর হন কর্মকর্তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশিক্ষণে নিয়োজিত এক কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের যোগসাজশে এমনটা হয়েছে।

জানতে চাইলে গুলতাজ মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অভিযুক্ত অফিস সহকারী ইউসুফ জানায় শিক্ষক সংকটের কারণে আমাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

একইভাবে প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহণ করছেন মির্জারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ল্যাব সহকারী সৈকত দে। তিনি তালিকা প্রস্তুতিতে প্রধান শিক্ষকের দিকে আঙ্গুল তুলেছেন।

প্রশিক্ষণ নিতে আসা কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা হলে তারা জানান, এটি শুধুমাত্র সহকারী শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা হলেও এতে প্রধান শিক্ষক, অফিস সহকারী এমনকি বেশ কয়েকজন খন্ডকালিন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ নিতে দেখা গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ড. সেলিম রেজা জানান, ' চলমান শিক্ষক প্রশিক্ষণে তালিকা প্রণয়ন করেছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। কর্মশালা শুরুর এক পর্যায়ে ১ হাজার ৯ জন প্রশিক্ষণার্থীর তালিকা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি। এতে কিছু অনিয়ম চিহ্নিত হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের বাদ দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) স্থানীয় একটি দৈনিকে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ হলে নড়ে চড়ে বসে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। মূলত এরপর থেকেই অভিযুক্তদের বাদ দেয়া হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App